ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে প্রথমবারের মতো ‘না’ বলল রাশিয়া
(last modified Tue, 17 Jan 2017 11:36:24 GMT )
জানুয়ারি ১৭, ২০১৭ ১৭:৩৬ Asia/Dhaka

নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু অস্ত্র কমানোর বিনিময়ে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষে ধাজ্ঞা প্রত্যাহারের যে শর্ত দিয়েছিলেন তা প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো।

সম্প্রতি ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা দেশটির অর্থনীতির যথেষ্ট ক্ষতি করেছে। তিনি এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্ত হিসেবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের পরিমাণ কমানোর প্রস্তাব দেন। ট্রাম্প বলেন, এ ধরনের সমঝোতা করা সম্ভব হলে তাতে দু’দেশই লাভবান হবে।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভূক্ত করা এবং পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন দেয়ার অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ছাড়া, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলে ওয়াশিংটন থেকে রাশিয়ার ৩৫ জন কূটনীতিককে বহিস্কার করা হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ট্রাম্প যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা একদিক দিয়ে যেমন বিস্ময়কর অন্যদিক দিয়ে তেমনি অযৌক্তিক। বিস্ময়কর এ কারণে যে, এই প্রথম একজন নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়াকে এমন একটি শর্ত বেধে দিলেন যা তার কোনো পূর্বসুরি কোনোদিনও দেননি। অন্যদিকে অযৌক্তিক এ কারণে যে, ট্রাম্প আমেরিকার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারে হাত না দিয়েই রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের পরিমাণ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি এমন সময় এ প্রস্তাব দিয়েছেন যখন আমেরিকার কাছে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার। 

এছাড়া, সব আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটির প্রধান শর্ত অর্থাৎ পরমাণু অস্ত্র মজুদের পরিমাণ কমাতে রাজি হয়নি ওয়াশিংটন।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের ক্ষমতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি শীতল যুদ্ধের সময়কার পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি জোর কদমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ যেটি অন্য দেশের ওপর পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছে। এ ছাড়া, দেশটি এখনো প্রয়োজনে অন্য দেশের ওপর এই অস্ত্র প্রয়োগের নীতি বজায় রেখেছে। ওয়াশিংটনের এই নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে পরমাণু অস্ত্রধর অন্যান্য দেশ।

অবশ্য রাশিয়া ভিন্ন উপায়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবের  জবাব দিয়েছে।  ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়ে রুশ পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কমিটির প্রধান বলেছেন, সবগুলো পরমাণু অস্ত্রধর দেশ যদি তাদের এই অস্ত্র কমাতে রাজি হয় তাহলে মস্কোরও তাতে আপত্তি থাকবে না।  

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, এভাবে রাশিয়া অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীর কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছে। ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়টিকে অনেকগুলো দেশের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল করে ফেলেছে মস্কো। কিন্তু এই প্রস্তাব মেনে নেয়া নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে সম্ভব হবে না। কারণ, তিনি নির্বাচনি প্রচারণার সময় আমেরিকার পরমাণু সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।#

পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/১৭

ট্যাগ