যে ছবিগুলো বিশ্ববাসীকে সচেতন করেনি   
(last modified Wed, 23 Oct 2024 10:41:08 GMT )
অক্টোবর ২৩, ২০২৪ ১৬:৪১ Asia/Dhaka
  • মর্মান্তিক যেসব ছবি বিশ্বকে জাগাতে পারেনি
    মর্মান্তিক যেসব ছবি বিশ্বকে জাগাতে পারেনি

ফিলিস্তিনের এক কন্যা শিশু তার আহত বোনকে বহন করছে এমন ফিল্ম ও ছবি প্রচার মুক্তিকামী ও মুক্তমনা মানুষদের হৃদয়ে বেদনার সৃষ্টি করলেও ঘুমন্ত বিশ্বকে জাগাতে পারেনি!   

গাজার চলমান যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অন্যান্য শরিকের মদদে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞের প্রতীক। ইহুদিবাদীদের এই যুদ্ধ-যন্ত্র তাদের অপরাধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কিছুকেই বাধা হিসেবে দেখছে না। 

তবনাক নামক সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে পার্সটুডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এক ফিলিস্তিনি কন্যা শিশু তার আহত ছোট বোনকে বহন করছিল ও একটি হাসপাতালে পৌঁছে দিতে দুই কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে যাচ্ছিল-এমন ভিডিও ইন্টারনেট মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।

সে এমন সময় এমন অবস্থায় তার আহত বোনকে বহন করছিল যখন গাজার বেশিরভাগ হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে ইসরাইলি বোমার আঘাতে এবং ইসরাইলি ড্রোনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল আকাশে। কেউই জানে না এ দুই শিশুর কি হয়েছিল!

এ দুই শিশুর ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেট-ভিত্তিক নানা মিডিয়ায় যখন ভাইরাল হয়েই চলছে ও মানুষের হৃদয়গুলো দলিত মথিত হচ্ছিল বেদনায় তখনও অপরাধী ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী মার্কিন সরকার ও তার মিত্রদের সহায়তায় অপরাধ অব্যাহত রেখেছে।

ইন্টারনেট জগতে এ দুই ফিলিস্তিনি শিশুর ছবির পাশাপাশি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের এক জাপানি বালকের ছবিও প্রচার করা হয়েছে তুলনা হিসেবে। ছেলেটি সতর্ক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে ও দাঁত দিয়ে ঠোঁট চেপে আছে। তার দুটি চোখ যেন পরাজিত একটি জাতির সবার চেতনাই সংক্ষেপে তুলে ধরেছে।

 নাগাসাকিতে তোলা এ ছবিটির ফটোগ্রাফার হলেন জো ও'ডোনেল। তিনি ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় সাত মাস ধরে গোটা জাপানে ঘুরে বেড়িয়েছেন ও ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তুলেছেন। বোমার আঘাতে নিহত ও আহত এবং ঘরবাড়ি হারা ব্যক্তিদের ও ইয়াতিমদের শোচনীয় দুঃখজনক অবস্থা তার ছবিগুলোতে রেকর্ড হয়েছে। মানুষের দুর্দশা তার ছবির নেগেটিভগুলোর পাশাপাশি হৃদয়গুলোতেও ছাপ ফেলেছে। 

জো ও'ডোনেল-এর বক্তব্য অনুযায়ী এই ছেলে শিশুটি তার মৃত ভাইকে বহন করছে। সে এমন একটি লাইনে দাঁড়িয়েছে যেখানে জাপানিরা নিহত হওয়া নিজ নিজ প্রিয়জনদেরকে প্রথাগত পদ্ধতিতে (পুড়িয়ে ছাই করা) দাফনের জন্য নিয়ে এসেছেন। আর যখন এই ছেলেটির মৃতকে দাফনের পালা এলো তখন সাদা মাস্কপরা ব্যক্তিরা নিঃশব্দে ছেলেটির মৃত ভাইয়ের লাশ গ্রহণ করেন ও লাশে আগুন দেন। এ সময় শিশুটি নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে কান্না সামলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল যাতে তাঁকে দৃঢ়চেতা বলে ভাবেন!   

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় গত বছরের (২০২৩) ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আর আহত হয়েছে প্রায় এক লাখ। নিখোঁজের সংখ্যাও প্রায় দশ হাজার যাদের বেশিরভাগের লাশ বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের নীচে পড়ে আছে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ