হযরত আলী আকবর ও আবুল ফজল আব্বাসের অনন্য ত্যাগ ও বীরত্ব
(last modified Thu, 19 Aug 2021 05:34:00 GMT )
আগস্ট ১৯, ২০২১ ১১:৩৪ Asia/Dhaka
  • হযরত আলী আকবর ও আবুল ফজল আব্বাসের অনন্য ত্যাগ ও বীরত্ব

সাইয়্যেদ ইবনে তাউস প্রণীত 'লোহুফ' বইয়ের ভাষ্যমতে, ৬১ হিজরির দশই মহররম ইয়াজিদের অনুগত বাহিনী ওমর বিন সা'দের নেতৃত্বে যুদ্ধ শুরু করে। এ অবস্থায় ইমাম হুসাইনের (আ.) সঙ্গীরা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে বহু ইয়াজিদি সেনাকে হত্যার পর খোদাদ্রোহী এই সেনাদলের সম্মিলিত হামলার মুখে ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত অবস্থায় একে একে ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে শহীদ হন।

এ অবস্থায় ইমামের আহলে বাইত ছাড়া যখন আর কেউ বেঁচে নেই সে সময় সবচেয়ে সুন্দর অবয়ব, সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী আলী বিন হুসাইন তথা হযরত আলী আকবর (আ) তাঁর পিতার কাছে এসে যুদ্ধের অনুমতি প্রার্থনা করেন। ইমাম হুসাইন তৎক্ষণাৎ অনুমতি দেন। এর পর তাঁর দিকে উদ্বেগের দৃষ্টি ফেলেন আর ইমামের দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। অশ্রুসিক্ত অবস্থায়  তিনি বললেন :
‘হে আল্লাহ ! তুমি সাক্ষী থাক। তাদের দিকে এমন এক যুবক অগ্রসর হয়েছে যে শরীরের গঠন, সৌন্দর্য,চরিত্র ও বাক্যালাপে তোমার রাসূলের (সা.) –এর সাদৃশ্যপূর্ণ। আমরা যখন তোমার নবী (সা.) -এর দিকে তাকানোর আকাঙ্ক্ষা করতাম তখন এ যুবকের দিকেই তাকাতাম।’ এর পর ওমর বিন সা’দের প্রতি লক্ষ করে উচ্চকণ্ঠে বললেন: ‘হে সা’দের ছেলে! আল্লাহ তোমার বংশধরকে বিচ্ছিন্ন করুন যেভাবে তুমি আমার বংশধরকে বিচ্ছিন্ন করেছ।’

আলী বিন হুসাইন দুশমনের মোকাবিলায় প্রচণ্ড লড়াই শুরু করেন। বহু সংখ্যক শত্রু সেনা হত্যা করে শ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পিতা ইমাম হুসাইনের কাছে এসে বললেন :
‘হে মহান পিতা ! পিপাসায় আমার জীবন ওষ্ঠাগত,যুদ্ধের প্রচণ্ডতায় আমি ক্লান্ত,আমাকে একটু পানি দিয়ে জীবন বাঁচাতে দিন।’ ইমাম হুসাইন কান্না-বিজড়িত কণ্ঠে বললেন : ‘হায়! কে সাহায্য করবে? প্রিয় ছেলে! ফিরে যাও, যুদ্ধ চালাও, সময় ঘনিয়ে এসেছে। একটু পরেই আমার নানা মুহাম্মাদ (সা.) -এর সাথে সাক্ষাৎ করবে। তাঁর হাতের পেয়ালা এমনভাবে পান করবে যে, এরপর আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।’

আলী ময়দানে ফিরে যান,জীবনের মায়া ত্যাগ করে শাহাদাতের জন্য প্রস্তুতি নেন। প্রচণ্ড হামলা শুরু করেন। হঠাৎ মুনকিজ বিন মুররা আবদী (আল্লাহর লানত তার উপর বর্ষিত হোক) আলী বিন হুসাইনের দিকে তীর নিক্ষেপ করেন। এ তীরের আঘাতে তিনি ধরাশায়ী হয়ে পড়েন। তিনি চিৎকার দিয়ে বলেন :
 ‘বাবা! খোদা হাফেজ, আপনার প্রতি সালাম। আমার সামনেই নানা মুহাম্মাদ (সা.) আপনাকে সালাম জানাচ্ছেন আর বলছেন : ‘‘হে হুসাইন ! তাড়াতাড়ি আমাদের সাথে মিলিত হও ’’। এরপরই একটি চিৎকার দিয়ে তিনি শাহাদাতের শরবত পান করেন। ইমাম হুসাইন নিহত সন্তানের মাথার কাছে দাঁড়ালেন। তার গালে গাল লাগিয়ে চুমু খেলেন আর বললেন : হে বৎস! আল্লাহ সে সম্প্রদায়কে হত্যা করবে যে তোমাকে হত্যা করেছে। এরা আল্লাহর কাছে কতই না অপরাধ করেছে,আল্লাহর রাসূলের সম্মানে কতই না আঘাত হেনেছে!

বর্ণিত হয়েছে, ইমামের বোন যাইনাব তাবু থেকে বের হয়ে ময়দানের দিকে ছুটে চললেন এবং ভয়ানক চিৎকার দিয়ে বললেন :  ’হে আদরের ধন! হে ভাতিজা!’ আপন ভাতিজার লাশের কাছে এসে তিনি গড়িয়ে গড়িয়ে কাঁদছিলেন। ইমাম হুসাইন এসে তাকে নারীদের তাঁবুতে ফিরিয়ে নেন। এরপরই আহলে বাইতের যুবকরা একে একে ময়দানে অবতীর্ণ হন এবং অনেকেই ইবনে যিয়াদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ সময় ইমাম হুসাইন ফরিয়াদ করে বললেন : ‘হে আমার চাচাতো ভাইয়েরা! হে আমার বংশধরগণ! ধৈর্য ধারণ করো। আল্লাহর শপথ, আজকের দিনের পর কোনো দিন অপমানিত ও লাঞ্ছিত হবে না।’ কবি বলেন :

‘এসেছে নিশি,পূর্ণশশী তুমি তো আসোনি
জীবন ওষ্ঠাগত,আমার জীবন হে আলী আসোনি
খাঁচার পাখি মরুর দিকে উড়ে গেলো
কিন্তু হে হোমা পাখি! তার কাছেও আসোনি
আমার শরৎ অন্তর তোমার দিদারে হতো বসন্ত
হে গোলাপ পুষ্প! কেনো তুমি আসোনি
ছড়ালাম অশ্রু,গেলাম সবার আগে তোমার গমন পথে
তোমার প্রতীক্ষায় হলাম পেরেশান তুমি তো আসোনি
অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষায় ছিলাম তুমি যদি আসো।
তোমার পায়ে জান করবো কুরবান,তুমি তো আসোনি।’

আল্লামা আব্বাস বিন মুহাম্মাদ রেযা আল কুম্মির লেখা 'শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস' শীর্ষক বইয়ে বলা হয়েছে: 

যখন ইমাম হুসাইন (আ.) এর সাথীরা শহীদ হয়ে গেলেন এবং কেউ ছিলো না তার পরিবার ছাড়া, যারা ছিলেন ইমাম আলী (আ.), জাফর বিন আবি তালিব (আ.), আক্বীল বিন আবি তালিব (আ.) ও ইমাম হাসান (আ.) এর সন্তানেরা, তারা একত্রিত হলেন এবং পরস্পরকে বিদায় জানালেন এবং যুদ্ধ করতে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলেন। আলী আকবার (আ.), যার মা ছিলেন আবি মুররাহ বিন উরওয়াহ বিন মাসউদ সাক্বাফির কন্যা লায়লা, যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন।

আলী আকবার (আ.)’র নানা উরওয়াহ বিন মাসউদ ছিলেন ইসলামি দুনিয়ার চারজন সম্মানিত ব্যক্তির একজন এবং এর আগে কাফেরদের মধ্যে দুই জন সর্দারের একজন, যার সম্পর্কে কোরআন বলেছে যে সে বলেছিল, “কেন কোরআন দুই শহরের কোন ব্যক্তির ওপরে নাযিল হলো না, (যে) বিখ্যাত?” [সূরা যুখরুফ: ৩১]

তিনি ছিলেন সেই ব্যক্তি যাকে কুরাইশরা পাঠিয়েছিলো হুদাইবিয়াতে শান্তিচুক্তি করার জন্য তাদের ও রাসূল (সা.) এর শান্তিচুক্তি করার জন্য, তখন পর্যন্ত তিনি অবিশ্বাসী ছিলেন। হিজরি নবম বছরে যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তায়েফ থেকে ফেরত এলেন, তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং অনুমতি চাইলেন যাতে নিজের শহরে ফেরত গিয়ে জন গণের মাঝে ইসলামের দাওয়াত দেয়া যায়। তিনি ফেরত গেলেন এবং তাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানালেন এবং যখন তিনি নামাযের জন্য আযান দিচ্ছিলেন তখন তাঁর গোত্রের এক ব্যক্তি তাঁর দিকে তীর ছুঁড়ে এবং তিনি শাহাদাত বরণ করেন। যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর শাহাদাতের খবর পেলেন তিনি বললেন, “উরওয়াহর উদাহরণ হচ্ছে ইয়াসীনের সেই বিশ্বাসীর মত, যে তাঁর গোত্রকে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো এবং তারা তাঁকে হত্যা করেছিলো।”
‘শারহে শামায়েলে মুহাম্মাদিয়া’তে রাসূলুল্লাহ'র (সা.) কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি বলেছেন, “যদি কেউ ঈসা বিন মারইয়াম (আ.) এর দিকে তাকায় সে উরওয়াহ বিন মাসউদের সাথে তার সবচেয়ে বেশী মিল পাবে।”

[‘মালহুফ’-এ বর্ণিত আছে] আলী বিন হুসাইন ছিলেন সব মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুদর্শন ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। তিনি তার বাবার কাছ থেকে যুদ্ধের জন্য অনুমতি চাইলেন। ইমাম (আ.) তাকে অনুমতি দিলেন এবং এরপর তার দিকে ভগ্ন হৃদয়ে তাকালেন এবং তাঁর চোখ থেকে অশ্রু বইতে লাগলো এবং তিনি কাঁদলেন।

[‘তাসলিয়াতুল মাজালিস’ গ্রন্থে] বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তার দাড়ি আকাশের দিকে তুললেন এবং বললেন, “হে আল্লাহ, এ লোকগুলোর উপর সাক্ষী থাকো, যে যুবক চরিত্রে ও বক্তব্যে তোমার রাসূলের সবচেয়ে নিকটবর্তী, সে তাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যখনই আমরা চাইতাম তোমার রাসূলের চেহারা দেখতে আমরা তার দিকে তাকাতাম। হে আল্লাহ, তাদের কাছ থেকে পৃথিবীর নেয়ামতগুলো ফিরিয়ে নাও এবং তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দাও এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করে দাও। তাদের নীতিকে হেয় করো এবং তাদেরকে তাদের সর্দারদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে দিও না, কারণ তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো আমাদের সাহায্য করার জন্য। এরপর তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।”
এরপর তিনি উমর বিন সা’আদকে উচ্চ কণ্ঠে ডাকলেন, “তোমার কী হয়েছে? আল্লাহ তোমার বংশ শেষ করুন, আল্লাহ তোমার কাজকে ব্যর্থ করে দিন এবং তিনি যেন কাউকে তোমাদের উপর শক্তিশালী করেন, যে তোমাদের বিছানায় তোমাদের মাথা কেটে ফেলবে যেভাবে তোমরা আমাদের গর্ভ চিরেছ এবং আমার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পবিত্রতা বিবেচনা করো নি।”

এরপর তিনি একটি আওয়াজ তুললেন এবং কোরআনের এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ বাছাই করেছিলেন আদম ও নূহ ও ইবরাহীমের বংশধর ও ইমরানের বংশধরদের, বিশ্ব জগতের ওপরে।” [সূরা আল ইমরান: ৩৩]
আলী বিন হুসাইন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন এ কথা বলে, “আমি আলী বিন হুসাইন বিন আলী, আল্লাহর ঘরের কসম, আমরা রাসূল (সা.) এর সাথে আত্মীয়তা রাখি এবং শাবাস (বিন রাব’ঈ) এবং নীচ ও হীন শিমারের ওপরে শ্রেষ্ঠত্ব রাখি। আমি তরবারি দিয়ে তোমাদের আঘাত করবো যতক্ষণ না তা বাঁকা হয়ে যায়, হাশেমী আলাউই (আলীর রক্তজ) যুবকের তরবারি, আমি আমার বাবার প্রতিরক্ষা করতেই থাকবো এবং আল্লাহর শপথ, অবৈধ সন্তানের সন্তান আমাদের ওপরে কর্তৃত্ব করবে না।”
তিনি শত্রুদের বার বার আক্রমণ করলেন এবং বহু শত্রুকে হত্যা করলেন।

[‘তাসলিয়াতুল মাজালিস’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে] তিনি এতো বিপুল সংখ্যক শত্রুকে হত্যা করলেন যে শত্রুবাহিনী কাঁদতে শুরু করলো। বর্ণিত আছে যদিও তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন তারপরও তিনি একশ বিশ জন শত্রুকে হত্যা করেছিলেন। ‘মানাক্বিব’-এ বর্ণিত আছে তিনি সত্তর জনকে হত্যা করার পর তার বাবার কাছে ফিরলেন অনেকগুলো আঘাত নিয়ে।

[‘তাসলিয়াতুল মাজালিস’, ‘মালহুফ’ গ্রন্থে আছে] তিনি বললেন, “হে বাবা, পিপাসা আমাকে মেরে ফেলছে এবং লোহার (অস্ত্রের ও বর্মের) ওজন আমার শক্তি শেষ করে দিয়েছে। কোন পানি আছে কি যাতে আমি শক্তি ফিরে পাই এবং শত্রুদের উপর আঘাত করি?”
[‘মালহুফ’ গ্রন্থে আছে] তা শুনে ইমাম হুসাইন (আ.) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, “হে সাহায্যকারী, হে প্রিয় সন্তান, অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধ করো এবং খুব শীঘ্রই তুমি তোমার নানা মুহাম্মাদ (সা.) এর সাক্ষাত পাবে। তুমি তার উপচে পড়া পেয়ালা থেকে পান করবে এবং আর কখনোই পিপাসার্ত হবে না।”

[‘তাসলিয়াতুল মাজালিস’ গ্রন্থে আছে] ইমাম হুসাইন (আ.) তাকে বললেন, “হে আমার প্রিয় সন্তান, তোমার জিভ বের করো।”

এ কথা বলে ইমাম (আ.) তার জিভ তার মুখে দিলেন এবং তা চুষতে দিলেন। এরপর তিনি তাঁর আংটি আলীর মুখে দিলেন এবং বললেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরত যাও এবং আমি আশা করি রাত আসার আগেই তোমার দাদা তোমার হাতে পেয়ালা উপচে পড়া একটি পানীয় দিবেন যা পান করার পর তুমি আর কখনো পিপাসা অনুভব করবে না।”

আলী আকবার যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরত গেলেন এবং বললেন, “যুদ্ধের জন্য বাস্তবতাগুলো পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং তারপর এর প্রমাণগুলো, আকাশের রবের শপথ, আমরা তোমাদের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হবো না যতক্ষণ না তরবারি খাপে প্রবেশ করে।” এরপর তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যান যতক্ষণ  না দুইশত লোককে হত্যা করেন।
[‘ইরশাদ’ গ্রন্থে আছে] কুফার সেনাবাহিনী তাঁকে হত্যা করা থেকে দূরে সরে রইলো, মুররাহ বিন মুনক্বিয আবাদি লেইসির দৃষ্টি তার উপর পড়লো এবং সে বললো, “আরবদের গুনাহ আমার উপর পড়ুক যদি সে আমার পাশদিয়ে যায় এবং তা করে যা সে করছে এবং আমি তার মাকে তার জন্য শোকার্ত না করি।” যখন তিনি সেনাবাহিনীকে আক্রমণে ব্যস্ত ছিলেন, মুররাহ বিন মুনক্বিয তার সামনে গেলো এবং একটি বর্শা ছুঁড়ে দিলো তার দিকে যা তাকে মাটিতে ফেলে দিলো। তা দেখে সেনাবাহিনী তাকে সব দিক থেকে ঘিরে ফেললো এবং তাকে টুকরো টুকরো করে ফেললো তাদের তরবারি দিয়ে।

‘মানাক্বিব’-এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুররাহ বনি মুনক্বিয আবাদি হঠাৎ তার বর্শা আলী আকবারের পিঠে ঢুকিয়ে দেয় এবং অন্যরা তাকে তাদের তরবারি দিয়ে আক্রমণ করে। আবুল ফারাজ বলেন তিনি অবিরাম আক্রমণ করলেন যতক্ষণ না একটি তীর তাঁর কণ্ঠ ভেদ করলো। তিনি রক্তে ভিজে গেলেন এবং চিৎকার করে বললেন, “হে প্রিয় বাবা, আপনার উপর সালাম, এই যে আমার দাদা আল্লাহর রাসূল আমাকে ডাকছেন তাড়াতাড়ি করার জন্য।” এরপর তিনি একটি আওয়াজ তুললেন এবং মৃত্যুবরণ করলেন (আল্লাহর রহমত ও বরকত তার উপর বর্ষিত হোক)।

সাইয়েদ ইবনে তাউস বলেন যে, তখন ইমাম হুসাইন (আ.) আলী আকবারের পাশে এলেন এবং তাঁর নিজের গাল রাখলেন পুত্রের গালের উপর। [তাবারির, ‘তাসলিয়াতুল মাজালিস’ গ্রন্থে] হামিদ বিন মুসলিম বর্ণনা করেছে যে,আমি আশুরার দিন নিজে ইমাম হুসাইন (আ.) কে বলতে শুনেছি, “হে আমার প্রিয় সন্তান, আল্লাহ যেন তাকে হত্যা করেন যে তোমাকে হত্যা করেছে, তারা দয়ালু আল্লাহর বিরুদ্ধে কী সাহস-ই না সঞ্চয় করেছে এবং রাসূলের পবিত্রতা লঙ্ঘন করেছে।”
[‘ইরশাদ’ গ্রন্থে আছে] ইমাম হুসাইন (আ.) এর চোখ থেকে অনেক অশ্রু ঝরতে লাগলো এবং তিনি বললেন, “দুর্ভোগ এ পৃথিবীর উপর, তোমার (শাহাদতের) পরে।” ‘রওযাতুস সাফা’- তে আছে যে, ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর পাশে বসে অনেক কাঁদতে লাগলেন যা কেউ এর আগে তাকে করতে দেখে নি।

আলী আকবার (আ.) এর যিয়ারত যেভাবে ইমাম সাদিক্ব (আ.) উল্লেখ করেছেন তাতে আছে, “আমার বাবা মা কোরবান হোক তাঁর জন্য যার মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিলো, যাকে হত্যা করা হয়েছিলো কোন অপরাধ ছাড়াই, আমার বাবা মা কোরবান হোক ঐ রক্তের জন্য যা আকাশে আল্লাহর বন্ধুর কাছে পৌঁছেছিলো, আমার বাবা মা কোরবান হোক আপনার উপর যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত গিয়েছিলেন তাঁর বাবার উপস্থিতিতে যিনি আপনাকে উৎসর্গ করেছেন আল্লাহর পথে, এরপর তিনি আপনার জন্য কাঁদলেন এবং তার হৃদয় পোড়া মাটি হয়ে গেলো। তিনি আপনার রক্ত আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিলেন, যার এক ফোটাও ফেরত আসেনি এবং আপনার জন্য তার চিৎকার কখনো বিলীন হবে না।”

[‘মাকাতিলাত তালিবিইন’, ‘মালহুফ’, তাবারির গ্রন্থে আছে] শেইখ মুফীদ বলেন যে, সাইয়েদা যাইনাব (আ.), যিনি ইমাম হুসাইনের (আ.) বোন ছিলেন, ছুটে গেলেন এবং চিৎকার করে বললেন, “হায় আমার ভাই, হায় আমার ভাতিজা।” তিনি এলেন এবং নিজেকে আলী আকবার (আ.) এর লাশের উপর ছুঁড়ে দিলেন। ইমাম হুসাইন (আ.) তাকে (বোনকে) তাঁবুতে ফেরত আনলেন। এরপর তিনি যুবকদেরকে ডাকলেন, বললেন, “তোমাদের ভাইকে নিয়ে যাও।” [তাবারির গ্রন্থে, ‘মাকাতিলাত তালিবিঈন’-এ আছে] তারা তাকে শাহাদাতের স্থান থেকে আনলেন এবং ঐ তাঁবুর সামনে এনে রাখলেন যার সামনে থেকে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন।
আবুল ফারাজ বর্ণনা করেন মুগীরা থেকে যে, মুয়াবিয়া একবার জিজ্ঞেস করেছিলো, “কে খেলাফতের জন্য বেশী যোগ্য?” তাকে বলা হলো, “আপনি”। সে বললো, “না, মানুষের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য হচ্ছে এ পদের জন্য আলী বিন হুসাইন বিন আলী, যে নিজের মাঝে একত্র করেছে বনি হাশিমের সাহস, বনি উমাইয়ার উদারতা এবং (বনি) সাক্বিফের মর্যাদা।”

হযরত আবুল ফযল আব্বাস (আ.)-এর শাহাদাত : পানি যেন চিরকাল লজ্জিত তাঁর কাছে!

বর্ণনাকারী বলেন,ইমাম হুসাইন পিপাসায় কাতার হয়ে ফোরাতের তীরে উপস্থিত হলেন। সাথে রয়েছেন তার  (সৎ) ভাই আব্বাস। ইবনে সা’দের বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল দু’জনের ওপর। তাদের পথ বন্ধ করল। বনী দারাম গোত্রের এক দুরাচার আবুল ফযল আব্বাস-এর দিকে তীর নিক্ষেপ করলে তা তাঁর পবিত্র মুখে বিদ্ধ হয়। ইমাম হুসাইনই তা টেনে বের করে নেন,তার হাত রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। তিনি সেই রক্ত ছুড়ে ফেলে বললেন : ‘হে আল্লাহ ! এ জনগোষ্ঠী তোমার নবী নন্দিনীর সন্তানের ওপর এ জুলুম চালাচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে তোমার দরবারে বিচার দিচ্ছি। ইবনে সা’দের বাহিনী মুহূর্তের মধ্যে ইমাম হুসাইনের কাছ থেকে হযরত আব্বাসকে ছিনিয়ে নেয়। চতুর্মুখী আক্রমণ ও তরবারির সম্মিলিত আঘাতে হযরত আব্বাস শহীদ হন। তাঁর শাহাদাতে ইমাম হুসাইন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কবি তাই তো বলেছেন :

 ‘‘কতই না উত্তম ব্যক্তি –যার জন্য ইমাম হুসাইন কারবালার এ কঠিন মুসিবতের সময়ও কেঁদেছেন। তিনি ছিলেন ইমাম হুসাইনের (সৎ) ভাই,তার বাবা ছিলেন আলী, তিনি তা আর কেউ নন রক্তাক্ত বদন আবুল ফযল আব্বাস। তিনি ছিলেন ইমাম হুসাইনের সহমর্মী,কোনো কিছুই তাকে এপথ থেকে সরাতে পারেনি। প্রচণ্ড পিপাসা নিয়ে ফোরাতের তীরে পৗছেন,কিন্তু ইমাম হুসাইন যেহেতু পান করেননি তিনিও তাই পানি মুখে নেননি।’
অন্য কবি বলেন : ‘মুষ্টির মাঝে পানি নিলেন, মনভরে পান করে তৃষ্ণা নিবারণ করবেন কিন্তু যখনই ইমাম হুসাইনের পিপাসার কথা মনে পড়লো, হাতের মুঠোর পানিতে অশ্রু ফেলে ফিরে আসলেন।’
হযরত আবুল ফযল আব্বাস-এর এ মহান আত্মত্যাগ সকল লেখক, চিন্তাশীলের দৃষ্টিতেই গুরুত্বপূর্ণ।
আল্লামা মজলিসী তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘বিহারুল আনওয়ার’-এ লিখেছেন,‘হযরত আব্বাস ফোরাতের তীরে গেলেন। যখনই অঞ্জলি ভরে পানি পান করতে চাইলেন তখন হঠাৎ ইমাম হুসাইন ও তার আহলে বাইতের পানির পিপাসার যন্ত্রণার কথা মনে পড়ল। তাই তিনি পানি ফোরাতেই ফেলে দিলেন,পান করলেন না।’
আরেকজন কবি বলেন :

‘আবুল ফযল আব্বাস তার সবচেয়ে মূল্যবান প্রাণ ইমাম হুসাইনের জন্যই উৎসর্গ করেছেন। ইমাম হুসাইন পান করার পূর্বে তিনি নিজে পান করলেন না। মানুষের কর্মের সর্বোত্তম কর্ম ও মূল কাজই তিনি করলেন। আপনি তো গৗরবের দিবসে রাসূলের দুই নাতির ভাই, আর আপনিই তো পানি পানের দিবসে করেছেন আত্মত্যাগ, হে আবুল ফযল!’
পানি টলটলায়মান, বাদশাহ তৃষ্ণায় ওষ্ঠাগত,
উদ্যম তার অন্তরে হাতে রয়েছে পানির মশক,
মুর্তাযার সিংহ শাবককে হামলা করলো এমনভাবে
এ যেন অগণিত নেকড়ের মাঝে এক বাঘ।
এমন একটি বদন কেউ দেখেনি যাতে কয়েক হাজার তীর,
এমন একটি ফুল কেউ দেখেনি যাতে রয়েছে কয়েক হাজার কাঁটা।

শেইখ মুফীদ তার ‘ইরশাদ’-এ এবং শেইখ তাবারসি তার ‘আ’লামুল ওয়ারা’-তে বলেছেন যে, সেনাবাহিনী ইমাম হুসাইনকে (আ.) আক্রমণ করলো এবং তার সৈন্যদের ছড়িয়ে দিলো এবং তাদের পিপাসা বৃদ্ধি পেলে ইমাম তার ভাই আব্বাস (আ.) কে নিয়ে ফোরাতের দিকে ঘোড়া ছোটালেন। উমর বিন সা’আদের বাহিনী তাদের পথ আটকে দিলো এবং বনি দারিম থেকে এক ব্যক্তি তাদের উদ্দেশ্যে বললো, “আক্ষেপ তোমাদের জন্য, ফোরাতের দিকে তাদের রাস্তা বন্ধ করে দাও যেন তারা সেখানে পৌঁছতে না পারে।” ইমাম হুসাইন (আ.) বললেন, “হে আল্লাহ, তাকে পিপাসার্ত করুন।” সে ক্রোধান্বিত হলো এবং ইমামের দিকে একটি তীর ছুঁড়ে মারলো যা তার থুতনি ভেদ করলো। ইমাম তীরটি টেনে বের করলেন এবং নিজের তালু দিয়ে তার নিচে চেপে ধরলেন। এতে তার হাত রক্তে পূর্ণ হয়ে গেলো। তখন তিনি বললেন, “হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে অভিযোগ করছি তারা কী আচরণ  করছে তোমার রাসূলের (সা.)  কন্যার সন্তানের সাথে।”

এরপর তারা তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ফিরে এলেন। কিন্তু সেনাবাহিনী হযরত আব্বাস (আ.) কে ঘেরাও করে ফেললো এবং ইমাম হুসাইন (আ.) থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলল। আব্বাস একা একা যুদ্ধ করলেন এবং শহীদ হয়ে গেলেন। যায়েদ বিন ওয়ারখা হানাফি এবং হাকীম বিন তুফাইল তাঈ’ যৌথভাবে তাকে হত্যা করে তাকে বেশ কিছু আঘাতে আহত করার পর এবং তার নড়াচড়া করার মত শক্তি আর ছিলো না। সাইয়েদ ইবনে তাউস কিছুটা একই রকম বর্ণনা দিয়েছেন।

হাসান বিন আলী তাবারসি বর্ণনা করেন যে, (বনি দারিম গোত্রের) অভিশপ্তের তীরটি ইমাম হুসাইন (আ.) এর কপালে বিদ্ধ হয় এবং আব্বাস তা তুলেন। কিন্তু পূর্ববর্তী বর্ণনাটিই বেশী পরিচিত।

তাবারি বর্ণনা করেন হিশাম থেকে, তিনি তার পিতা মুহাম্মাদ বিন সায়েব থেকে, তিনি ক্বাসিম বিন আল আসবাগ বিন নাবাতাহ থেকে যিনি বলেছেন, (কারবালায়) ইমাম হুসাইন (আ.) শহীদ হওয়ার সময় উপস্থিত ছিলো এমন একজন আমাকে বলেছে যে, যখন হুসাইনের  সেনাদল প্রাণ হারালো তিনি তার ঘোড়ায় চড়লেন এবং ফোরাত নদীর দিকে গেলেন। বনি আবান বিন দারিম গোত্রের এক লোক বললো, “আক্ষেপ তোমাদের জন্য, তার এবং ফোরাত নদীর মাঝখানে অবস্থান নাও যেন তার শিয়ারা (অনুসারীরা) তার সাথে যুক্ত হতে না পারে।” তিনি ঘোড়া ছোটালেন এবং সেনাবাহিনীও তাকে অনুসরণ করলো এবং ফোরাত নদীতে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিলো। ইমাম হুসাইন (আ.) বললেন, “হে আল্লাহ, তাকে পিপাসার্ত করুন।” আবানি লোকটি একটি তীর ছুঁড়লো যা ইমামের থুতনি ভেদ করলো, ইমাম তীরটি টেনে বের করলেন এবং তার হাতের তালু দিয়ে তার নিচে চেপে ধরলেন, যা রক্তে পূর্ণ হয়ে গেলো এবং তিনি বললেন, “হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অভিযোগ করি কী আচরণ তারা করছে আপনার রাসূল (সা.) এর কন্যার সন্তানের সাথে।”

আল্লাহর শপথ, বেশী সময় যায় নি যখন আমি দেখলাম তার (আবানি লোকটির) প্রচণ্ড তৃষ্ণা পেয়ে বসলো এবং কখনোই নিবারণ হলো না।

ক্বাসিম বিন আল আসবাগ আরও বলেন যে, আমি তার সাথে ছিলাম যে বাতাস করছিলো তাকে (আবানি লোকটিকে) এবং একটি মিষ্টি শরবত, এক জগ দুধ ও পানি রাখা ছিলো। সে বলছিলো, “দুর্ভোগ তোমাদের উপর। তৃষ্ণা আমাকে মেরে ফেলছে।” এক জগ অথবা এক কাপ পানি যা তার পরিবারের তৃষ্ণা মিটাচ্ছিলো, তাকে দেয়া হলো, সে তা পান করলো ও বমি করলো। এরপর কিছু সময় ঘুমালো। এরপর আবার সে বলতে শুরু করলো, “দুর্ভোগ তোমাদের উপর, আমাকে পানি দাও, তৃষ্ণা আমাকে মেরে ফেলছে।” আল্লাহর শপথ এ রকম কোন দৃশ্য এর আগে দেখা যায়নি এবং তার পেট উটের মত ফেটে গেলো।  ইবনে নিমার বর্ণনা অনুযায়ী এই লোকটির নাম ছিলো যারাআহ বিন আবান বিন দারিম।

ক্বাসিম বিন আল আসবাগ বর্ণনা করেছেন এক ব্যক্তি থেকে যে কারবালায় ইমাম হুসাইন (আ.) কে দেখেছিলো, তিনি একটি খাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন নদীর তীরের কাছেই, ফোরাত নদীতে যাওয়ার জন্য এবং আব্বাস ছিলেন তার সাথে। সে সময় উমর বিন সা’আদের জন্য উবায়দুল্লাহর চিঠি এসে পৌঁছায় যাতে লেখা ছিলো, “হুসাইন ও তার সাথীদের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ করে দাও এবং তাদেরকে এক ফোটাও স্বাদ নিতে দিও না।” উমর বিন সা’আদ পাঁচশত লোক দিয়ে আমর বিন হাজ্জাজকে পানির কাছে পাঠালো। আব্দুল্লাহ বিন হাসীন আযদি উচ্চকণ্ঠে বললো, “হে হুসাইন, তুমি কি দেখছো পানি বইছে বেহেশতের মত? আল্লাহর শপথ, তুমি এ থেকে এক ফোঁটাও পাবে না যতক্ষণ না তুমি ও তোমার সাথীরা তৃষ্ণায় ধ্বংস হয়ে যাও।” যারা’আহ বিন আবান বিন দারিম বললো, “তার ও ফোরাত নদীর মাঝে অবস্থান নাও।” এরপর সে একটি তীর ছোঁড়ে ইমামের দিকে যা তার থুতনিতে বিদ্ধ হয় এবং তিনি বললেন, “হে আল্লাহ তাকে তৃষ্ণায় মরতে দাও এবং কখনোই তাকে ক্ষমা করো না।” ইমাম (আ.) এর জন্য এক পেয়ালা পানীয় আনা হলো কিন্তু তিনি তা পান করতে পারলেন না অনবরত রক্ত ঝরার কারণে। তিনি রক্তকে আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিলেন এবং বললেন, “একইভাবে আকাশের দিকে।”

শেইখ আব্দুস সামাদ বর্ণনা করেন আবুল ফারাজ থেকে, তিনি আব্দুর রহমান বিন জওযি থেকে যে, এর পরে আবানি ব্যক্তিটি (যারআহ) পাকস্থলী পোড়া এবং ঠাণ্ডা পিঠের রোগে আক্রান্ত হয়েছিলো এবং চিৎকার করতো।

‘উমদাতুত তালিব’-এর লেখক আব্বাস (আ.) এর সন্তানদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন যে, তার (আব্বাসের) কুনিয়া ছিলো আবুল ফযল এবং উপাধি ছিলো সাক্কা (পানি বহনকারী)। তাকে এ উপাধি দেয়া হয়েছিলো কারণ তিনি তার ভাইয়ের জন্য আশুরার দিন পানি আনতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেখানে পৌঁছানোর আগেই শহীদ হয়ে যান। তার কবরটি (ফোরাত) নদীর তীরে তার শাহাদাতের স্থানেই আছে। সে দিন তিনি ছিলেন ইমাম হুসাইনের (আ.) পতাকাবাহী।

আবু নসর বুখারি বর্ণনা করেছেন মুফাযযাল বিন উমার থেকে যে, ইমাম জাফর আস সাদিক্ব (আ.) বলেছেন, “আমার চাচা আব্বাস ছিলেন বুদ্ধিমান এবং তার ছিলো দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি আবু আব্দুল্লাহর (ইমাম হুসাইনের ) সাথে থেকে যুদ্ধ করেছেন এবং মুসিবতের ভিতর দিয়ে গেছেন শহীদ হওয়া পর্যন্ত। বনি হানিফা তার রক্তের দায়ভার বইছে। তিনি ছিলেন চৌত্রিশ বছর বয়স্ক যখন তাকে হত্যা করা হয়। তার এবং উসমান, জাফর এবং আব্দুল্লাহরও মা ছিলেন উম্মুল বানীন, যিনি ছিলেন হিযাম বিন খালিদ বিন রাবি’আর কন্যা।”#

পার্সটুডে/এমএএইচ/

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন

ট্যাগ

ট্যাগ