সব দেশের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ‘ব্রিক্স’ জোটের আহ্বান
মার্কিন নীতির বিরোধী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের একতরফা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য ওই দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত উদীয়মান জাতীয় অর্থনীতির সঙ্ঘ ‘ব্রিক্স’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল(মঙ্গলবার) এক ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত একতরফা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়া বর্তমানে ব্রিক্সের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ‘জোটের সদস্য সব দেশ মার্কিন এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে অভিন্ন মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্মিলিতভাবে করোনা মোকাবেলাকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমেরিকার এ আচরণ বেআইনি এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব ও নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী’।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন সরকার তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নানা মিথ্যা অজুহাতে শত্রুভাবাপন্ন ও বিরোধী দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এমনকি রোগের প্রাদুর্ভাবের মতো স্পর্শকাতর সময়গুলোতেও তারা আরো বেশি নিষেধাজ্ঞার কৌশল নিয়ে থাকে। আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশ এবং ইরান ছাড়াও রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, কিউবা, সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার দেশগুলোর ওপরও একতরফা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। আমেরিকা যদিও রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তাগত কারণ দেখিয়ে এমনকি বিরোধী দেশগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুয়া অভিযোগ তুলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে কিন্তু এসবের আড়ালে তারা অন্য লক্ষ্য হাসিলের চেষ্টা করে। রুশ জ্বালানিমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নওবাক এ ব্যাপারে বলেছেন, বিশ্ববাসী আমেরিকার এ ধরনের নিষেধাজ্ঞায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বের দেশগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। এমনকি আমেরিকার অভ্যন্তরেও ট্রাম্প প্রশাসনের বেআইনি ও একতরফা এসব নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে। এ অবস্থায় ‘ব্রিক্সে’র সদস্য দেশগুলো মনে করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশের উচিত ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়া। কিন্তু এরপরও ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে। এ নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানে করোনা চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। ইরানকে নতজানু করতে করোনার প্রাদুর্ভাবকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে আমেরিকা যা খুবই অমানবিক।
আমেরিকা মুখে দাবি করছে ইরানের বিরুদ্ধে ওষুধ ও খাদ্যের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সব কিছুর ওপরই তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যাতে ওয়াশিংটনের অন্যায় দাবি মেনে নিতে তেহরানকে বাধ্য করা যায়। এ অবস্থায় আমেরিকার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করবে বলে সবার প্রত্যাশা।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৯