নভেম্বর ২৮, ২০২১ ১৬:৪৪ Asia/Dhaka
  • হাফ পাস না দিলে, দেখব গাড়ি কেমনে চলে’

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ২৮ নভেম্বর রোববারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • যে কারণে পেছাল আবরার হত্যা মামলার রায়’-দৈনিক কালেরকণ্ঠ
  • হাফ পাস না দিলে, দেখব গাড়ি কেমনে চলে’-প্রথম আলো
  • ইসি গঠন ও বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া হচ্ছে: আইনমন্ত্রী- মানবজমিন
  • ডেল্টার চেয়ে বেশি সংক্রামক হতে পারে ওমিক্রন: হু-র প্রধান বিজ্ঞানী-দৈনিক ইত্তেফাক
  • শিক্ষার্থীদের হাফপাস দিতে হবে: ফখরুল- যুগান্তর
  • বাংলাদেশে বিনিয়োগ সুবিধা লুফে নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক জনকণ্ঠ

ভারতের শিরোনাম:

  • ওমিক্রন রুখতে কী করা উচিত কী নয়, সরকারকে ১৫টি কাজের তালিকা বিশেষজ্ঞদের -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • সংসদ অধিবেশনের শুরুতে আন্দোলনে মৃত কৃষকদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব আনার দাবি কংগ্রেসের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
  • ত্রিপুরায় ফুটল ঘাসফুল, আগরতলার ১৩টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল, পুরসভা দখল বিজেপির –আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তা প্রশ্ন (২৮ নভেম্বর)
১.কুমিল্লায় প্রিসাইডিং অফিসার ও এসআইকে ছুরিকাঘাত। একটি ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের ব্যাপারে বাংলাদেশের পত্র পত্রিকার শিরোনাম এটি। নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে কী বলবেন আপনি?
২. মরক্কো এবং ইসরাইলি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে। ফিলিস্তিনের হামাস বলছে এটি আরববিশ্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। কেন এটি আরববিশ্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে গণ্য হবে?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

হাফ পাস না দিলে, দেখব গাড়ি কেমনে চলে’-প্রথম আলো

নিরাপদ সড়ক ও গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার রাপা প্লাজার সামনে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, তেজগাঁও সরকারি কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজ, তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, হলিক্রস কলেজ, ধানমন্ডি গর্ভমেন্ট বয়েজ হাই স্কুলসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।

সড়কে অবস্থান নিয়ে কয়েক শ শিক্ষার্থী নিরাপদ সড়ক ও গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনেক শিক্ষার্থীর হাতে এ নিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ‘হাফ পাস না দিলে দেখব গাড়ি কেমনে চলে’ বলে সমবেত হয়ে স্লোগান শোনা যায়।  আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্তু নামে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠ ছাড়ব না।’লালমাটিয়া মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাসে উঠলে হাফ (অর্ধেক) ভাড়া নেয় না। নারী শিক্ষার্থীদের তুলতেও চায় না। কোনোভাবে বাসে উঠলেও চালক ও চালকের সহকারী আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে।’  শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হলেও অ্যাম্বুলেন্স ও ওষুধ কোম্পানির গাড়ির মতো জরুরি সেবার কাজে থাকা যান চলাচলের পথ করে দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের হাফপাস দিতে হবে: ফখরুল- যুগান্তর

শিক্ষার্থীদের চলমান হাফ পাসে দাবিতে চলমান আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের হাফ পাশ দিতে হবে, না হলে এই গণবিরোধী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। 

রোববার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।  রাজধানী ছাড়াও দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে একই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়ে। তারা বাস ভাড়া কমানোর দাবিতে আজ রাস্তায় নেমেছে। তাদের হাফপাস দিতে হবে। কেন বলছে? কারণ তাদের লেখাপড়া করতে খরচ অনেক বেশি। তাদের মা-বাবারা যারা নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত তারা সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। একদিকে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, শিক্ষার খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে বাসের ভাড়া অনেকগুণ বেড়েছে। সবমিলিয়ে একটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। এই গণবিরোধী সরকার প্রথমে ডিজেল আর তেলের দাম বাড়াল। সঙ্গে সঙ্গে বাসমালিক-শ্রমিকদের বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে স্ট্রাইকে নামিয়ে দিলো। মনে আছে তো আপনাদের? তারা তাদের আওয়ামী সিন্ডিকেটের পকেট ভারি করার জন্য কৌশলে জনগণের পকেট কাটছে। 

তিনি বলেন, আজ বাসের ভাড়া কমানোর দাবিতে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা আন্দোলন করছে। সরকার বলছে, বিআরটিসি বাসের ভাড়া তো কমালাম কিন্তু প্রাইভেট বাসের ভাড়াতো আমরা কমাতে পারবো না। আমি বলি, তোমরা প্রাইভেট মোবাইল, টেলিফোন, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারো আর বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারো না? তোমরা শিক্ষার্থীদের বাস ভাড়া কমিয়ে দাও। সেখানে যদি ২/৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয় তা তোমরা দিবে না কেন? আগামী প্রজন্মের উচ্চ শিক্ষার জন্য, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আজকের সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের হাফপাসের দাবিতে সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। প্রয়োজনে সরকার ভর্তুকি দেবে। 

উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ। এমন ব্যর্থ হয়েছে, তারা চুরি ছাড়া কিছু করে নাই। হাসপাতালগুলোতে যাবেন তাহলে চিকিৎসার দৈন্যদশা দেখবেন। করোনার সময় দেখেছেন, হাসপাতালে সিট নাই, অক্সিজেন নাই, ডাক্তার নাই ওষুধ নাই। মেট্রোরেল বানাচ্ছে? সেটার জন্য ঢাকা শহর দশ বছর ধরে খোড়াখুড়ি করে রেখেছে। এখনে কাজ হয়নি। ব্যয় বেড়েছে দশগুণ। দশহাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পদ্মাসেতুতে চল্লিশ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। যা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিতেও চিন্তা করা যায় না। 

সমাবেশে দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি গোলাম সরোয়ার, আসাদুজ্জামান নেসার, আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, আজহারুল হক মুকুল, এবিএম পারভেজ রেজা, লিটন মাহমুদ, শাহাবুদ্দিন মুন্না, ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, কাদের হালিমী, ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল আলম, আকতারুজ্জামান বাচ্চু, মোস্তাফিজুর রহমান মনির, আরিফুর রহমান আরিফ, আজগর হায়াত লিমন, মোখলেছুর রহমান, তকদির হোসেন স্বপন, আশ্রাফ উদ্দিন রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।

যে কারণে পেছাল আবরার হত্যা মামলার রায়’-দৈনিক কালেরকণ্ঠ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় আজ রবিবার ঘোষণা করা হয়নি। এ রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে আগামী ৮ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে। রায় পেছানোর ঘোষণা দিয়ে বিচারক বলেন, সাক্ষ্য ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক পর্যালোচনা করে রায় ঘোষণার জন্য আরো কিছু সময় প্রয়োজন। তাই আজ রায় ঘোষণা করা হলো না। রায় ঘোষণা ৮ ডিসেম্বর।

রবিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান দুপুর ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায়ের নতুন দিন ধার্যের ওই আদেশ দেন।

ইসি গঠন ও বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া হচ্ছে: আইনমন্ত্রী- মানবজমিন

নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব আগামী দুটি অধিবেশনের মধ্যেই সংসদে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান।বিলটি বাছাই কমিটি পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ ও জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের কথা বলেন। চুন্নু ওই আইনটির পাশাপাশি উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগেও আইন করার দাবি করেন।জবাবে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচারক নিয়োগ আইন এবং নির্বাচন কমিশন গঠন আইন- দুটোরই খসড়া করা হচ্ছে।সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে।

Image Caption

গেল এক দশকে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন।সাংবিধানিক এ সংস্থার সদস্যদের নিয়োগে আইন করার কথা থাকলেও স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে তা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এ বিষয়ে মতভেদ আছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়োগ নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে সরকারকে।৫ সদস্যের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। সরকারের তরফ থেকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে, পূর্ববর্তী দুই কমিশনের মত আসন্ন নির্বাচন কমিশনও সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।সম্প্রতি সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী সংসদে বলেন, “তারা একটা আইনের ড্রাফট (নির্বাচন কমিশন গঠনে) করেছে, সেটা দিতে এসেছিলেন। উনারা বলেছিলেন এটাতে সবই আছে।

এটা অধ্যাদেশ আকারে করে দিলেও তো হয়ে যায়। তখন আমি স্পষ্ট বলেছি, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এই আইন সংসদে আলোচিত না হওয়া পর্যন্ত আইনটি করা ঠিক হবে না। এতে আমি বোধ হয় সংসদ সদস্যদের সম্মান কমাইনি, বাড়িয়েছি।আইনমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এটা সংসদে আলোচিত হওয়া উচিত। আমার পরিকল্পনা, এর (চলতি সংসদের) পরের সংসদ বা তার পরের সংসদে আমরা এটা আলাপ করব। কিন্তু অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কাজ তাড়াহুড়া করে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে করা যাবে না বলেই আমি বলেছি। সে জন্য আমি আশ্বস্ত করিনি। তবে দুটোই আমরা করার চেষ্টা করছি।

ডেল্টার চেয়ে বেশি সংক্রামক হতে পারে ওমিক্রন: হু-র প্রধান বিজ্ঞানী-দৈনিক ইত্তেফাক

বিশ্বে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নিয়ম শিথিল হয়ে গিয়েছিলো। মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাকেও অনেকে মানতো না। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট এসে তাদের আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এই করোনা সংক্রমণ। নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সম্পর্কে এমনটাই বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

করোনা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা কতটা জরুরি, তার উপরও বিশেষ জোর এই বিজ্ঞানী। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খোঁজ মেলা করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট  বি.১.১.৫২৯-কে শুক্রবারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে ওমিক্রন নাম দেওয়া হয়েছে। এটিকে উদ্বেগের কারণ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট করোনার বাকি রূপগুলোর তুলনায় আরও বেশি সংক্রামক ও ক্ষতিকারক হতে পারে বলেও ধারণা গবেষক-বিজ্ঞানীদের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথনকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যারা করোনাবিধি অনুসরণ করছিলেন না, এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট তাদের কাছে সচেতন হওয়ারই একটি বার্তা। মাস্ককে পকেটে থাকা টিকা বলা হয়। সংক্রমণ রুখতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়লে তার সঙ্গে কীভাবে লড়াই করতে হবে, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রাপ্তবয়স্কদের সম্পূর্ণ টিকাকরণ, ভিড় যথাসম্ভব এড়ানো, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের হার আরও বাড়ানো এবং করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে, তার উপর কড়া নজরদারি। বিজ্ঞান ভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমেই আমরা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে লড়তে পারি।”

তিনি আরও জানান, করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের থেকেও বেশি সংক্রামক হতে পারে। তবে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা কাজ করছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন  ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

ইতিমধ্যেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট হংকং, ইসরায়েল ও বেলজিয়ামেও ছড়িয়ে পড়েছে এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটির স্পাইক প্রোটিনে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ বার অভিযোজন হয়েছে। এতবার অভিযোজন হওয়ায়, তা বাকি ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় আরও সংক্রামক ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে কিনা, বর্তমানে তা পরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা।

এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, “করোনার আগের রূপগুলোর সঙ্গে এই ভ্যারিয়েন্টের তুলনা করা উচিত নয়। নতুন ভ্যারিয়েন্টের চরিত্র বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন। আপাতত টিকাকরণের উপরই জোর দেওয়া উচিত। এছাড়াও জনস্বাস্থ্যবিধিগুলোও মেনে চলা প্রয়োজন।”

একাধিক দেশে ইতিমধ্যেই বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ঝুঁকি নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগেও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, কিন্তু তাতেও করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়নি। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা সাময়িক হওয়া উচিত এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

বাংলাদেশে বিনিয়োগ সুবিধা লুফে নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক জনকণ্ঠ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য তাঁর সরকারের দেয়া সবধরনের সুযোগ সুবিধা লুফে নিতে বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নসহ সমস্ত নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আজ রাজধানীর একটি হোটেলে দুই দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন-২০২১’, এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ‘রেডিসন ব্লু’ হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, ভারত, সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের ২,৩৩২ জন নিবন্ধন করেছে জেনে আমি আনন্দিত হয়েছি।

তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য আমরা সম্ভাবনাময় ১১টি খাত চিহ্নিত করেছি। এ সব হচ্ছে, অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিকস উৎপাদন, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ঔষধ, পাট-বস্ত্র, এবং ব্লু-ইকোনমি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশে এসব খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিশ্বে বাংলাদেশী পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিনদফা নির্বাচনে জয়লাভের ফলে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দক্ষ-পরিশ্রমী জনসম্পদ সৃষ্টি, আকর্ষণীয় প্রণোদনার মাধ্যমে উদার বিনিয়োগ-নীতি এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল বাজারের মধ্যবর্তী ভৌগলিক অবস্থানের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গুরুত্ব দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতি আস্থার ফলে ৬০ শতাংশের বেশী প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ আসছে পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে। তাঁর সরকার ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’কে প্রধান্য দিয়ে দেশে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতি প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে কাজ করছি। ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করেছি। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৮টি দেশে একতরফা শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে। ৩৬টি দেশের সঙ্গে দ্বৈত-করারোপন পরিহার চুক্তি বলবত আছে।

তাঁর সরকার বিভিন্ন বাণিজ্য জোটের সঙ্গে নিবিরভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে অবকাঠামোসহ সকল নীতিগত সহায়তা প্রদানে অঙ্গিকারাবদ্ধ।

বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছি। দেশে ৯৯.৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের ১২ কোটির বেশী মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের আইটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছি। যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পূণর্গঠনে জাতির পিতা শূণ্য হাতেই ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামে নেমেছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

জাতির পিতা সকল কল-কারখানা জাতীয়করণ করে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করে বিনিয়োগ-বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতির পিতা মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ করে সার কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল কৃষক অল্পদামে সার পাবে, বেশী ফসল উৎপাদন করবে, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জিত হবে, উদ্বৃত্ত খাদ্য ও সার বিদেশেও রপ্তানী করা যাবে। তাঁর উন্নয়ন দর্শনের মূলেই ছিল দেশীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং মানব সম্পদের উন্নয়ন। ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর এক জাতির পিতার এক ভাষণের উদ্বৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতা ভাষণে বলেন, ‘আপনাদের অনেক কষ্ট করতে হবে। বাংলাদেশে সম্পদ আছে। সে সম্পদ ব্যবহার করা হয় নাই। ব্যবহার করতে সময় লাগবে। ইনশাল্লাহ, যদি বাংলাদেশের সম্পদ আমরা ব্যবহার করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ যে ‘সোনার বাংলাদেশ’ হবে, সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই।’

আওয়ামী লীগের ২১ দফা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের প্রসংগ টেনে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের ২০০০-২০০১ অর্থবছরে বর্ধিত বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮১৬ মিলিয়ন ডলার। যেখানে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ছিল মাত্র ২৮৬ মিলিয়ন ডলার। আমরা ২০০০-২০০১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি, যেখানে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ছিল মাত্র ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।

তিনি বলেন, আমরা যমুনার উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ করি। তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ ও রপ্তানি উন্নয়নের লক্ষ্যে আইটি-ভিলেজ এবং হাইটেক-পার্ক গড়ার উদ্যোগ নিই। অথচ, বিএনপি বিনামূল্যে ফাইবার অপটিক কেবলে সংযুক্ত হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে।

তাঁর সরকারের সময় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন চিত্রের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন,আমরা জাতীয় শিল্পনীতিসহ খাতওয়ারি শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছি। প্রতিটি প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য বন্ড ব্যবস্থাপনাকে অটোমেশন করছি। আমরা ৩৯টি হাইটেক-পার্ক নির্মাণ করেছি। পর্যায়ক্রমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ২৭.০৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছি। মীরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুন্ড উপজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ গড়ে তুলছি। আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।

তিনি বলেন, অমরা ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫’ প্রণয়ন করেছি এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে ৭৯টি পিপিপি প্রকল্পে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬’ প্রণয়ন করেছি এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি। ২০১৯ সাল থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ৩৫টি সংস্থার ১৫৪টি বিনিয়োগ সেবা অনলাইনে প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছি। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, সৈয়দপুরে আঞ্চলিক বিমানবন্দর, কক্সবাজারে আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল এবং মাতারবাড়ি ও পায়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা মহামারীর প্রতিঘাত নিরসনে ১ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছি।

‘আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার এখন ৪১১ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ২,৫৫৪ ডলার। রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বাস্তবায়ন করছি। তিনি মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণে এই বিনিয়োগ সম্মেলনটি আয়োজন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং অংশগ্রহণকারিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, সৌদি আরবের পরিবহন ও লজিস্টিক মন্ত্রী সালেহ নাসের এ আল-জাসের, এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা পাঠান ভারতীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়াল, চীনের ভাইস মিনিস্টার ফর কমার্স রেন হংবিন, ওয়ার্ল্ড কোনমিক ফোরোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরেমি জার্গেন্স, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফানসো গার্সিয়া মোরা এবং প্রেসিডেন্ট কনজিউমার ডিউরেবলস অফ কোক হোল্ডিং এএস তুরস্ক এবং সিঙ্গার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. ফাতিহ কেমাল এবিক্লিওগ্লু। এ ছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি পাঠ করেন পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় উপ-মন্ত্রী হোন্ডা তারোর বার্তা।

অনুষ্ঠানে ‘ডিসকভার লিমিটলেস’ শিরোনামের একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি প্রচার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শীর্ষ সম্মেলনের প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচনও করেন।

ওমিক্রন রুখতে কী করা উচিত কী নয়, সরকারকে ১৫টি কাজের তালিকা বিশেষজ্ঞদের -আনন্দবাজার পত্রিকা

করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ‘ওমিক্রন’-এর সংক্রমণ রুখতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বৎসোয়ানা থেকে যাওয়া-আসা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে অনেক দেশ। আরও দেশ হয়তো সেই পথেই এগবে যে হেতু প্রাথমিক ভাবে এই দু’টি দেশেই কোভিড রোগীদের মধ্যে ভাইরাসের এই নতুন রূপটির সংক্রমণ বেশি ঘটতে দেখা গিয়েছে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, শুধু ওই দু’টি দেশের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিলেই ওমিক্রন সমস্যা মিটবে না। আরও অনেক কিছু করতে হবে। আর সেই সবের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কয়েকটি নীতি ঘোষণার পথে হাঁটতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে কী কী করতে হবে সেটা অবিলম্বে চূড়ান্ত করে নিতে হবেই। তা ছাড়াও আগেভাগেই ভেবে নিতে হবে কী কী করা এখন আর উচিত হবে না।

তাঁদের মতে, ওমিক্রনের সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে এখন আশু দশটি কাজ করতে হবে। আর পাঁচটি কাজ না করার ব্যাপারে খুব সতর্ক হতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরোয়া জমায়েতের উপরেই এখন একমাত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। দেশের সর্বত্র প্রকাশ্য জমায়েতের উপর সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করাটা এখন আর কাজের কাজ হবে না। তাতে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে। সেটা আগের তিনটি তরঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়েছে।

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উড়ানও বন্ধ করে দেওয়া উচিত হবে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে গুটিকয়েক দেশে উড়ানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের গতিতে লাগাম টানা যায়নি। সেটা একমাত্র কোনও দ্বীপরাষ্ট্র হলে সম্ভব হতে পারে বলেই মত তাঁদের। না হলে একেবারেই অসম্ভব গোটা পৃথিবীর ক্ষেত্রে। অবাস্তব পরিকল্পনাও বটে। পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি না করে সে ক্ষেত্রে কোনও রাজ্য বা দেশ থেকে বেরনো ও কোনও রাজ্য বা দেশে ঢোকার সময় বিমানযাত্রীদের পরীক্ষা করে নেওয়ার ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করে তোলা উচিত সরকারের।

এমন কোনও নীতি ঘোষণা করা উচিত নয় সরকারের যা চট করে শিথিল করা যাবে না। দু’টি পর্বের টিকাকরণের সুযোগ যত বেশি মানুষের কাছে যত তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেওয়া যায় সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সংক্রমণের মাধ্যমে দেশের আমজনতার মধ্যে সার্বিক স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা (হার্ড ইমিউনিটি) গড়ে উঠবে এই ধারণা থেকেও সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে।

এই সব তো গেল সরকারের এখন কী কী করা উচিত নয়, তার পরামর্শ। সরকারের এই মুহূর্তে কী কী করণীয় তারও ১০টি পরামর্শ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

তার মধ্যে অন্যতম— নতুন সংক্রমণের ধাক্কা সইতে দেশের হাসপাতালগুলির শয্যাসংখ্যা পর্যাপ্ত কি না তা আগেভাগে বুঝে নেওয়া। সকলকে দু’টি পর্বের টিকা দেওয়া। দেশের সব রাজ্যে যাওয়া আসার জন্য টিকা পাসপোর্ট চালু করা। যাঁরা টিকা নিতে চাননি বা টিকা নেননি কোনও কারণে তাঁদের যে ভাবেই হোক বুঝিয়ে টিকা দেওয়ানো। বুস্টার টিকা দেওয়ানো যে যে ক্ষেত্রে তা জরুরি। টিকাকরণের ব্যাপারে স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতনতা বাড়ানো। প্রতিটি রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসাপাতালগুলিতে সম্ভাব্য কোভিড রোগীদের জন্য ক’টি শয্যা রয়েছে তা আগেভাগেই বুঝে নেওয়া। আগের তরঙ্গগুলিতে করা ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নেওয়া আর রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বিজ্ঞানকেই প্রাধান্য দেওয়া। এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই যে আমাদের আরও অনেক বছর বাঁচতে হবে তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।

ত্রিপুরায় ফুটল ঘাসফুল, আগরতলার ১৩টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল, পুরসভা দখল বিজেপির –আজকাল

ত্রিপুরা পুরভোটে বিজেপির জয়জয়কার। ১ কর্পোরেশন, ১৩টি পুর পরিষদ এবং ৬টি নগর পঞ্চায়েতের মোট ৩৩৪ আসনে চলছে ভোট গণনা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০৩টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি, একটিতে তৃণমূল ও বামেরা।

আমবাসা পুর পরিষদের একটি আসনে জয়ী হয়ে খাতা খুলেছে ঘাসফুল শিবির। সেখানে আরও দুটি আসনে বিজেপির কাছে ৯ ও ২৫ ভোটে হেরেছে তৃণমূল। সেই পুর পরিষদেই একটিতে জয়ী হয়েছে বামেরা। এদিকে আগরতলা কর্পোরেশন দখল করল বিজেপি। ইতিমধ্যেই ৫১টির মধ্যে ৩৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু আগরতলায় তৃণমূল দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ১৩টি আসনে। খোয়াই পুর পরিষদে ১৫টির সবকটিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি।

যদিও এই ফলের পর ‘২০২৩ আমাদের’ বলেই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এদিকে বিজেপির এই জয়ের পর বিপ্লব দেবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন এরাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী

সংসদ অধিবেশনের শুরুতে আন্দোলনে মৃত কৃষকদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব আনার দাবি কংগ্রেসের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন (Farmers Protest) প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবুও বিল প্রত্যাহার কার্যকর ও অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তার আগে শনিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে (Om Birla) চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। আরজি জানালেন, অধিবেশনের শুরুতে কৃষক আন্দোলনের সময় মৃত কৃষকদের উদ্দেশে শোকপালন করা হোক।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, দেশের অন্নদাতাদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে এই শোকপ্রস্তাব সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ করানো হোক। তাঁর বক্তব্য, এর মাধ্যমে কৃষক ভাইদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হবে।#

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

  

ট্যাগ