ডিসেম্বর ২৮, ২০২১ ১৯:০৪ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ২৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা -আইনমন্ত্রী যেভাবে মত জানিয়েছেন, তাতে কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রথম আলো

  • আ.লীগ কর্মীদের তাণ্ডব, সমাবেশ শুরুর আগেই বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুর-দৈনিক কালেরকণ্ঠ

  • মেয়েদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো আশিক: র‍্যাব-দৈনিক ইত্তেফাক
  • মুসলিম নিধনের আহ্বানের কড়া নিন্দা, ভারতীয় দূতকে পাকিস্তানে তলব-- দৈনিক মানবজমিন
  • লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট : যুগান্তর
  • ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড কারবালার ঘটনাকেও হার মানিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী-দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • বিস্ফোরণে উড়বে না, আটকে দেবে কালাশনিকভের গুলিও, মোদীর জন্য এল ২৪ কোটির জোড়া ‘গার্ড’- দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • পরামর্শদাতা নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন রাজ্যপালের, তথ্য সহ রাজভবনে তলব মুখ্যসচিবকে ’ আজকাল
  • মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়া কেউ রুখতে পারবে না’, দৃঢ়কণ্ঠে বললেন কপিলমুনি আশ্রমের মহান্ত-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা!

শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার প্রশ্ন (২৮ ডিসেম্বর)


১. নওগাঁয় ১৪৪ ধারা জারির পর সমাবেশ স্থগিত করেছে বিএনপি। দৈনিক মানবজমিনের এই খবরকে কীভাবে দেখছেন আপনি?
২. আমিরাতে শুক্রবারের ছুটি বাতিল, লিভ টুগেদার বৈধ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই খবর এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে- কেন আমিরাত এই পথে গেল?

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা -আইনমন্ত্রী যেভাবে মত জানিয়েছেন, তাতে কোনো সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রথম আলো

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তাঁর ভাইয়ের করা আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী যেভাবে মতামত জানিয়েছেন, তাতে কোনো সুযোগ নেই। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইনমন্ত্রী যে মতামত দিয়েছেন, সেটি তাঁরা পর্যালোচনা (স্টাডি) করছেন। প্রয়োজনে অধিকতর যাঁর যাঁর পরামর্শ নেওয়া দরকার, সেটা নেওয়া হবে। তবে এখন যতটুকু তাঁরা পর্যালোচনা করে দেখছেন, তাতে এ নিয়ে আরও কথাবার্তা বলতে হবে। তবে আইনমন্ত্রী যেভাবে জানিয়েছেন, তাতে কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং অবস্থান বুঝতে পারছেন।’ এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সোমবার নিজের দপ্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনের বিষয়ে আইনি মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় তাঁর পরিবার। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্তে বলা হয়েছে, তিনি বিদেশ যেতে বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে পারবেন না। তবে দেশের ভেতরে যেকোনো হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিতে পারবেন।

আ.লীগ কর্মীদের তাণ্ডব, সমাবেশ শুরুর আগেই বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুর-দৈনিক কালেরকণ্ঠ

বিস্ফোরণে উড়বে না, আটকে দেবে কালাশনিকভের গুলিও, মোদীর জন্য এল ২৪ কোটির জোড়া ‘গার্ড’- দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

গার্ড’ কিনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে এই ‘গার্ড’ রক্ষী নয়। বরং একে ‘রক্ষাকারী বর্ম’ বলা যেতে পারে। তবে এমন বর্ম যা গায়ে চাপানো যায় না। বদলে চেপে বসা যেতে পারে। চার চাকার লিমুজিন। এটিই মোদীর নতুন বাহন। নতুন বর্ম। নাম ‘গার্ড’। ‘ বানিয়েছে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা মার্সিডিজ। গার্ডের পুরো নাম মার্সিডিজ-মে ব্যাচ এস ৬৫০ গার্ড। এটি মার্সিডিজ-এর এস সিরিজের সাম্প্রতিকতম মডেল। এস ৬৫০ গার্ড-এর বড় গুণ হল গুলি মোকাবিলা করার ক্ষমতা। গার্ড বর্মভেদী বুলেটকেও থামাতে পারে। এমনকি একে -৪৭-এর গুলির আঘাতও প্রতিহত করতে পারে মোদীর নতুন বাহন। আর কী ক্ষমতা? মোদীর এই নতুন বর্ম-বাহন বিস্ফোরণেও টিকে যাবে বেমালুম। দু’মিটার দূরত্ব থেকে যদি কেউ ১৫ কেজির বিস্ফোরকও ফাটায়, তা হলেও বনেটে একটু টোল পড়বে না ‘গার্ড’-এর। এস ৬৫০-এর জানলার ভিতরে রয়েছে পলি কার্বোনেটের আস্তরণ। মাইনজাতীয় বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে গাড়ির নীচের অংশেও রয়েছে বিশেষ সুরক্ষা বর্ম। এমনকি যদি গ্যাস হামলাও হয়, তবে আরোহীকে পরিশ্রুত বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা করবে গার্ড।

আ.লীগ কর্মীদের তাণ্ডব, সমাবেশ শুরুর আগেই বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুর-দৈনিক কালেরকণ্ঠ

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাস্থলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালিয়ে প্রায় অর্ধশত বিএনপির কর্মীকে আহত করেছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সভাস্থল শহরের শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্ক মাঠে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালিয়ে মঞ্চের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক তৈফিক আলী খান কবির জানান, দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার আগে শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথ লাউকাঠি ব্রিজ, চৌরাস্তা এবং লোহালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় সভাস্থলে আগত বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়ে আহত করা হয়। এ ছাড়া সভাস্থলের পরিবর্তে বাধা দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয় কর্মীদের। বিভিন্ন এলাকায় হামলার ঘটনায় প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তবে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তৎপর দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।

এদিকে নির্ধারিত সময় বিকেল ২টায় বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সরোয়ার, বিলকিস জাহান শিরিন, মোশারফ হোসেন, মনির হোসেন, মাহাবুবুর রহমান নান্নু, মো. শহীদুল আলম তালুকদার, মো. শাজাহান মিয়া, স্নেহাংশু সরকার কুট্টি এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড কারবালার ঘটনাকেও হার মানিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী-দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড কারবালার ঘটনাকেও হার মানিয়েছে। আজ 'বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ' স্মারকগ্রন্থ ও 'ন্যায় কণ্ঠ' স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার করাই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও আইনের শাসনের কথা শুনতে হয়।

মেয়েদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো আশিক: র‍্যাব-দৈনিক ইত্তেফাক

কক্সবাজারে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিককে বখাটে বলে দাবি করে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল ইসলাম সরকার বলেছেন, সে প্রায় সময়ই অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো। নিজে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আশিককে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসব কথা বলেছেন।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ধর্ষণের ঘটনা প্রচার পাবার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় আশিক। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার চাতুরী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আশিককে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে আশিক। ধারণা করা হচ্ছে পূর্বের শত্রুতার জের ধরে স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে।

তার পুরো পরিবার অপরাধের সঙ্গে জড়িত দাবি করে র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, তার বড়ভাই ফারুখ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও দুইকোটি টাকাসহ গ্রেফতার হয়েছিল। তার আরেক ভাই কামরুলের বিরুদ্ধেও ছিনতাই ইয়াবাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আশিক কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।

র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার কক্সবাজারে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিক।

পর্যটকদের নিরাপত্তায় র‌্যাব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার একটি বিশ্ব নন্দিত নগরী। এখানে প্রতিদিন দেশী বিদেশী পর্যটক আসেন। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে জন্য র‌্যাব দৃঢ় অবস্থানে আছে। কিছু অপরাধীর কারণে কক্সবাজারের সুনাম নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। আমরা অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কোন অবস্থায় কক্সবাজারেকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেবে না বলে জানান তিনি।

স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আশিক ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন মামলার এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি আশিকের বড় ভাই মো. কামরুল এবং ‘ধর্ষণের’ ঘটনাস্থল মমস গেস্ট হাউজের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহীন।

উল্লেখ্য, গেল ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত আশিকসহ ৩-৪ জন যুবক জোর করে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। শহরের হোটেল-মোটেল জোনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে মমস্ গেস্ট হাউজে দুইদিন আটকে রেখে তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আশিক। ১৫ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন। এ ঘটনা প্রচার করলে মেয়ের পিতামাতাকে অপহরণ করে হত্যার পর গুম করার হুমকি দিতে থাকে। ভয় উপেক্ষা করে গেল ১৮ ডিসেম্বর কক্সবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার পেলে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১৫। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে  সোমবার রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে আশিককে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, আশিকের বড়ভাই মো: কামরুল (৩৪) তার মা রাজিয়া বেগম (৫৫), বাবা নজরুল ইসলাম (৬০) এবং শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকার মো. হায়দার ওরফে হায়দার মেম্বারের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (৪০)।

মুসলিম নিধনের আহ্বানের কড়া নিন্দা, ভারতীয় দূতকে পাকিস্তানে তলব-- দৈনিক মানবজমিন

ভারতের হরিদ্বারে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ডাক দেয়ার কড়া নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। সম্প্রতি সেখানকার হিন্দুত্ববাদী উগ্র ডানপন্থি বেশ কিছু গ্রুপের নেতারা ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম জাতি নিধনের আহ্বান জানান তাদের অনুসারীদের। তিনদিনের এক সমাবেশে হিন্দু নেতারা এর মধ্য দিয়ে ভারতে বসবাসকারী প্রায় ২০ কোটি মুসলিমকে টার্গেট করেছেন। তা নিয়ে ভারতের প্রায় সব মিডিয়াই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।এ খবর দিয়ে অনলাইন ডন লিখেছে, হিন্দু নেতাদের এমন আহ্বানের কড়া নিন্দা জানানো হয়েছে পাকিস্তান থেকে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসীম ইফতিখার আহমেদ বলেছেন, এর প্রতিবাদ জানাতে পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সকে ইসলামাবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। তাকে বলা হয়েছে, ভারতের ভিতরে ওই ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যের বিষয়ে পাকিস্তানের ‘সিরিয়াস উদ্বেগ’ যেন তিনি তার সরকারের কাছে পৌঁছে দেন।পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিস্ময়ের সঙ্গে তারা লক্ষ্য করছে যে, হিন্দু রক্ষা সেনা’র প্রেসিডেন্ট প্রবোধ আনন্দ গিরি ও অন্য হিন্দু নেতারা জাতি নিধনের ডাক দিয়েছেন। এতে ভারত সরকার কোনো দুঃখ প্রকাশ করেনি।নিন্দাও জানায়নি অথবা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। বিবৃতিতে ভারতের প্রতি বার্তা দেয়া হয় যে, ওই ঘৃণামূলক বক্তব্য পাকিস্তান ও সারাবিশ্বের নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে ভয়াবহ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

নিন্দনীয় বিষয় হলো সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে, বিশেষত মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত বক্তব্য এবং তাদের নিপীড়ন চলছে রাষ্ট্রীয় মদতে। এটা ভারতে হিন্দুত্ববাদী শক্তি বিজেপি-আরএসএসের সম্মিলনে গঠিত সরকারের একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে।পাকিস্তানের মুখপাত্র আরো বলেন, ভারতীয় পক্ষকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, হিন্দুত্ববাদী নেতাদের, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচিত সদস্যরা এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী নয়া দিল্লিতে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার আগে। আরো বলা হয়, সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিম ও তাদের উপাসনালয়ের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে ভারতে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি শাসিত কিছু রাজ্যে মুসলিম বিরোধী আইন করা হচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনায় হিন্দুত্ববাদী গ্রুপগুলো মুসলিমদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে সহিংসতা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা দায়মুক্তি পাচ্ছে। কখনো কখনো এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় মদত আছে। এতে তাদের ইসলামভীতি আরো বেড়েছে বলে প্রকাশ পায়। এর মধ্য দিয়ে ভারতে মুসলিমদের পরিণতির ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে।অসীম ইফতিখার আহমেদ আরও বলেছেন, সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারত যে ভয়াবহ ও পর্যায়ক্রমিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে, তার জন্য ভারতকে জবাবদিহিতায় আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায় পাকিস্তান।

পাশাপাশি আসন্ন গণহত্যার হাত থেকে তাদেরকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায় পাকিস্তান।পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, আশা করা হয়, ওইসব ঘৃণামূলক বক্তব্য দেয়ার বিষয়ে তদন্ত করবে ভারত সরকার। তদন্ত করবে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিম ও তাদের উপাসনালয়ে ব্যাপক সহিংসতার বিষয়ে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, তা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেবে। সংখ্যালঘু, তাদের উপাসনালয় এবং জীবনধারা নিরাপদ, নিরুদ্বিগ্ন এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানায় পাকিস্তান।উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরাখ-ের হরিদ্বারে ১৭ থেকে ১৯ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত তীর্থযাত্রা হয়। এর আয়োজন করেন হিন্দুত্ববাদী নেতা যাতি নরসিংহানন্দ। সেখানেই বেশ কিছু হিন্দু নেতা ওই ঘৃণামূলক বক্তব্য দেন।এতে বেশ কয়েকবার সংখ্যালঘুদের হত্যা করার আহ্বান জানানো হয়। নরসিংহানন্দ বলেছেন, অর্থনৈতিকভাবে বর্জনে কাজ হবে না। হিন্দু গ্রুপগুলোকে নিজেদেরকেই আপডেট হতে হবে। তরবারি শুধু মঞ্চেই ভাল দেখায়। এই যুদ্ধে তারাই জিতবে, যাদের কাছে উন্নততর অস্ত্র আছে।হিন্দু রক্ষা সেনা’র প্রেসিডেন্ট স্বামী প্রবোধ আনন্দ গিরি বলেন, মিয়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, রাজনীতিক, সেনাবাহিনী এবং প্রতিটি হিন্দুকে অবশ্যই হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে এবং একটি ‘সাফারি অভিযান’ (জাতি নিধন) চালাতে হবে। আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। হিন্দু মহাসভা নামে রাজনৈতিক দলের জেনারেল সেক্রেটারি সাধ্বী অন্নপূর্ণা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে গণহত্যা চালানোর উস্কানি দেন। তিনি বলেন, অস্ত্র ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। যদি আপনারা ‘তাদের’ জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে চান, তাহলে তাদেরকে হত্যা করুন। হত্যার জন্য প্রস্তুত হোন এবং জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হোন। যদি আমাদের ১০০ জনও তাদের ২০ লাখকে হত্যা করতে প্রস্তুত হয়, তবুও আমরা বিজয়ী হবো এবং জেলে যাবো।

পরামর্শদাতা নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন রাজ্যপালের, তথ্য সহ রাজভবনে তলব মুখ্যসচিবকে ’ আজকাল

বিভিন্ন দপ্তরে পরামর্শদাতা নিয়োগ করবে নবান্ন।রাজ্যের প্রায় ৪০টি দপ্তরে এই পরামর্শদাতা নিয়োগ হওয়ার কথা। কিন্তু এই নিয়োগ কতটা যুক্তিযুক্ত, এবার সেই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মঙ্গলবার এ নিয়ে টুইট করেন তিনি। সেখানেই জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে মুখ্যসচিবকে রাজভবনে যেতে হবে। স্বভাবতই রাজ্যপালের এই টুইট ঘিরে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হল রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে।

রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের বহু প্রকল্প আরও ভালভাবে নজরদারির জন্য বিভিন্ন দপ্তরে পরামর্শদাতা ও পেশাদার পরামর্শদাতা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। যদিও এই নিয়োগ নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বিজেপি। এবার সোচ্চার হলেন ধনখড়। স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘‌নিয়োগের নেপথ্যে রয়েছে স্বজনপোষণ। রাজভবনে একাধিক জায়গা থেকে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে।’‌

মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়া কেউ রুখতে পারবে না’, দৃঢ়কণ্ঠে বললেন কপিলমুনি আশ্রমের মহান্ত-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

লড়াই, সংগ্রামই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের মূল মন্ত্র। সেই পথে হেঁটেই বিরোধী দলনেত্রী থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এবার লক্ষ্য দিল্লির দখল নেওয়া। তাঁকেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান বিভিন্ন শিবিরের রাজনৈতিক নেতারা। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অনমনীয়, অপ্রতিরোধ্য। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আপাতত তিনদিনের গঙ্গাসাগর (Gangasagar) সফরে। মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছে কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দিয়েছেন। আর তারপরই তাঁকে পাশে নিয়ে কার্যত ভবিষ্যৎবাণী করলেন আশ্রমের প্রধান জ্ঞানদাস মহান্ত। বললেন, ”প্রধানমন্ত্রী হওয়া থেকে মমতাকে কেউ রুখতে পারবে না। তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই আমরা।”  মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে উত্তরণের লক্ষ্যে এগোচ্ছে তৃণমূলও (TMC)। জাতীয় স্তরে সংগঠন বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেইমতো বদলাচ্ছে কর্মসূচির ধরনও। নানা রাজ্য়ে সংগঠনের বিস্তার ঘটানোর কাজ চলছে পুরোদমে। 

 

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ