জুলাই ২৬, ২০২২ ২০:২৪ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের সাপ্তাহিক আয়োজন 'প্রিয়জন'। আজকের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় রয়েছি আমরা তিনজন। আমি গাজী আব্দুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি হাদিস শোনাতে চাই। আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী (আ.) বলেছেন: "আল্লাহর নিকট প্রিয়তম পথ হলো- দুই ঢোক। একটি হলো- ক্রোধকে তিতিক্ষা দ্বারা গিলে ফেলবে। আরেকটি হলো- দুঃখকে ধৈর্য দ্বারা গিলে ফেলবে।"

আকতার জাহান: ক্রোধ ও দুঃখ দূর করার বিষয়ে দারুণ দুটি উপদেশ শুনলাম। আমরা সবাই তা মেনে চলার চেষ্টা করব- এ প্রত্যাশা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্র ও ইমেইলের দিকে।

আসরের প্রথম চিঠিটি এসেছে বাংলাদেশের ঢাকা সেনানিবাসের উত্তর ভাসানটেক থেকে। তেহরানের সরাসরি ঠিকানায় এটি পাঠিয়েছেন এফ এইচ অয়ন।

চিঠির শুরুতেই তিনি পড়াশোনার চাপ ও ব্যক্তিগত কারণে দীর্ঘদিন চিঠি লিখতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

গাজী আব্দুর রশীদ: ক্যারিয়ার গঠন কিংবা ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে অনুষ্ঠান শোনায় ব্যাঘাত ঘটতেই পারে। এ নিয়ে মন খারাপ কিংবা দুঃখ প্রকাশের কিছু নেই। ব্যস্ততা কমে যাওয়ায় আপনি আবারো অনুষ্ঠান শোনা শুরু করেছেন- এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আকতার জাহান: যাইহোক, আমি অয়ন ভাইয়ের চিঠির কিছু অংশ পড়ে শোনাচ্ছি। তিনি লিখেছেন, রেডিও তেহরানের সাপ্তাহিক আয়োজন প্রিয়জন অনুষ্ঠানে আমূল পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও সৈয়দ মূসা রেজা বা বহলুল ভাইয়ের কণ্ঠ মিস করি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ- মূসা ভাইকে আবারো প্রিয়জনে উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হোক। পাশাপাশি বাংলা ভাষায় টিভি অনুষ্ঠান প্রচার, প্রভাতি অনুষ্ঠান চালু, মোবাইল অ্যাপ ও এফএমে অনুষ্ঠান প্রচারসহ আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।

আশরাফুর রহমান: ভাই এফ এইচ অয়ন, আপনার অবগতির জন্য বলছি- সৈয়দ মূসা রেজা ভাই বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। তার প্রতি আপনার ভালোবাসা আমাদেরকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। আর আপনার প্রস্তাবগুলো আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। দীর্ঘদিন পর চিঠি লিখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এবার ইমেইলের ইনবক্সের দিকে নজর দিচ্ছি। জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার পূর্ব নলছিয়া থেকে হারুন অর রশীদ পাঠিয়েছেন আসরের প্রথম মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের নিয়মিত শ্রোতা হিসেবে ফেসবুকে গত ১২ জুলাইয়ের লাইভ অনুষ্ঠান শুনলাম। আকতার জাহান ও রেজওয়ান হোসেনের উপস্থাপনায় ইরানের কালজয়ী গল্পের পসরা থেকে 'গল্প ও প্রবাদের গল্প' অনুষ্ঠানে অশ না খেয়েই গাল পুড়েছে শুনে দারুণ মজা পেয়েছি। প্রবাদের ওই চমৎকার গল্পটি ছিল খুবই মজাদার ও রসনাপূর্ণ।"

গাজী আব্দুর রশীদ: 'গল্প ও প্রবাদের গল্প' অনুষ্ঠানে রয়েছে হাস্যোরসের পাশাপাশি জীবনঘনিষ্ঠ বহু শিক্ষা ও উপদেশঅনুষ্ঠানটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। তো, মতামত জানিয়ে ইমেইল করার জন্য হারুন অর রশীদ ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আকতার জাহান: বাংলাদেশের পর এবার নজর দিচ্ছি ভারতের দিকে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুইপাড়া থেকে এস এম নাজিম উদ্দিন পাঠিয়েছেন এবারের ইমেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "একজন একনিষ্ঠ শ্রোতা হিসেবে আমার মনে হয়- রেডিও তেহরানের দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য আছে যা পৃথিবীর আর কোনো বেতারের নেই। এক. সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কণ্ঠস্বর। দুই. মজলুম মানুষের কণ্ঠস্বর। সাম্রাজ্যবাদীদের অসৎ উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে রেডিও তেহরান যেমন বরাবর সোচ্চার, ঠিক তেমনই তাকফিরি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের মত মজলুম মুসলমানদের হয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে এই বেতার। দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনের অধিকার আদায়ের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যথার্থভাবেই মজলুম মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেছে রেডিও তেহরান। মূলত এই ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যের কারণেই আজও রেডিও তেহরানের সঙ্গেই আছি।"

আশরাফুর রহমান: ‘সত্য, ন্যায় ও মজলুমের কণ্ঠস্বর’ রেডিও তেহরানের সাথে থাকার জন্য নাজিমউদ্দিন ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের বন্ধন অ্যান্ড লাকি শ্রোতা সংঘের সভাপতি নজরুল ইসলাম পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

‘জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইরানিদের অবদান’ শীর্ষক নতুন ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে তিনি লিখেছেন, “জ্ঞান বিজ্ঞানে ইরানের অবদান-এর সুস্পষ্ট ধারণা পেতে হলে আমাদেরকে যেতে হবে সোনালী অতীতে। ইরান তখন সাহিত্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দারুণ এগিয়ে  ছিল। প্রাচীন তথা প্রাথমিক যুগে ইরানকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সূতিকাগারও বলা হতো। আল খারিজমীকে বীজগণিতের জনক বলা হয়। গণিতের শিক্ষক হিসেবে এই আলোচনা আমার কাছে অত্যন্ত চমৎকার লেগেছে। ইরানের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস জানতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি।”

গাজী আব্দুর রশীদ: শ্রোতাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে গত ৩ জুলাই ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইরানিদের অবদান’ শীর্ষক যে  নতুন ধারাবাহিক অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছে তার বেশ প্রশংসা পাচ্ছি আমরা। বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখায় নজরুল ইসলাম ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে। আর পাঠিয়েছেন ‘আলোকিত মানুষ চাই, আন্তর্জাতিক বেতার শ্রোতা ক্লাব’-এর সভাপতি, এ, টি, এম, আতাউর রহমান রঞ্জু।

তিনি লিখেছেন, “রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ আজ একটি জীবন্ত বায়োডাটা, ইতিহাসের সাক্ষী ও ইসলামী ঝাণ্ডার নাম। পারস্য উপসাগর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অজস্র পাঠক-শ্রোতার মণিকোঠায় তার স্থান। রেডিও তেহরান শ্রোতাদের মাঝে আজ মেলবন্ধন তৈরি করেছে। আমি চেষ্টা করছি রেডিও তেহরানকে সবার মাঝে তুলে ধরার। আসুন, আমরা বেতার শুনি, বেতারে আস্থা ও বিশ্বাস রাখি।”

আকতার জাহান: ভাই আতাউর রহমান রঞ্জু, রেডিও তেহরানের শ্রোতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন জেনে ভালো লাগল। আশা করি নিয়মিত লিখবেন।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা কথা বলব বাংলাদেশের একজন সিনিয়র শ্রোতার সঙ্গে। টেলিফোনের অপর প্রান্তে যিনি অপেক্ষা করছেন প্রথমেই তার পরিচয় জানা যাক-

 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে মনীষা রায় পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। লিখেছেন, “গত ৯ জুলাই শ্রদ্ধেয় রেজওয়ান হোসেন দাদা ভাই ও শ্রদ্ধেয়া আক্তার জাহান দিদি ভাইয়ের সুমিষ্ট উচ্চারণে পবিত্র আরাফাত বা আরাফা দিবসের তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনা খুবই ভালো লেগেছে। অনুষ্ঠানটি থেকে অনেক অজানা তথ্য পেয়ে ভালো লেগেছে। সুন্দর অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য রেডিও তেহরান কর্তৃপক্ষকে অনেক ধন্যবাদ।”

আশরাফুর রহমান: আরাফা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগল।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের বরিশাল সদরের কাশিপুর থেকে। আর পাঠিয়েছেন তৃণমূল বেতারশ্রোতা তথ্য ক্লাবের সভাপতি জিল্লুর রহমান জিল্লু। 

তিনি রেডিও তেহরান-এর সকল কলাকুশলী এবং ভক্তশ্রোতা বন্ধুদের জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, “মানুষে মানুষে, দেশে দেশে, ধর্মে ধর্মে হানাহানি বন্ধ হোক, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সাথে তাদের নিজ দেশের বসতভিটায় ফিরে পেতে পারে সেই কামনা করি।”  

আকতার জাহান: ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও কয়েকজন শ্রোতা ইমেইল পাঠিয়েছেন। আমি তাদের নাম-ঠিকানা জানিয়ে দিচ্ছি।

  • দেশমাতৃকা প্রসাদ রায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম থেকে
  • আব্দুস সালাম সিদ্দিক, আসামের বড়পেটা থেকে
  • সৌদি আরবের তাবুক থেকে জাফরুল ইসলাম জাফর
  • শ্রী বৃত্তি রায়, ঠাকুরগাঁও বাংলাদেশ থেকে
  • খুলনার মহেশপুর থেকে মোহাইমেন নূর রহমান
  • কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থেকে আবদুল কুদ্দুস মাস্টার
  • কিশোরগঞ্জের খড়ম পট্টি থেকে শরিফা আক্তার পান্না
  • এবং আবু তাহের, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে।

গাজী আব্দুর রশীদ:  শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোয় আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের প্রতিটি দিন হোক ঈদের মতো আনন্দমুখর।

বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার খোশবাড়ীর রংধনু বেতার শ্রোতা সংঘের সভাপতি শাওন হোসাইন পাঠিয়েছেন পরের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, “গত ৩০ জুন তারিখে আমার প্রিয় বেতার কেন্দ্র রেডিও তেহরান বাংলা'র সান্ধ্য অধিবেশনে কান পেতেছিলাম। অন্যান্য নিয়মিত আয়োজনের পর আমার প্রিয় আয়োজন রংধনু শুরু হলে আমি ও আমার পরিবারের ক্ষুদে সদস্যরা মন লাগিয়ে শুনতে বসি। এদিন বিখ্যাত কবি জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি'র বিখ্যাত মসনবি গ্রন্থ থেকে এক বৃদ্ধের গল্প নিয়ে রংধনু আসর প্রচার করা হয়। গল্পটি আমাদের সবার জন্য বেশ শিক্ষণীয় ছিল। আর অনুষ্ঠানের শেষাংশে ছোট্ট বন্ধু মায়শা তারাননুম সাফার সাক্ষাৎকার ও তার পরিবেশিত গানটি বেশ চমৎকার হয়েছিল। সুন্দর আসরটি শুনে আমি ও আমার পরিবারের ক্ষুদে সদস্যরা বেশ আনন্দিত।“  

আশরাফুর রহমান: রংধনু আসর আপনাদেরকে আনন্দের পাশাপাশি শিক্ষণীয় বার্তা দিতে পেরেছে জেনে ভালো লাগল। আশা করি আমাদের অন্য অনুষ্ঠান সম্পর্কেও মতামত জানাবেন। তো চিঠি লিখার জন্য শাওন হোসাইন ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা থেকে। আর পাঠিয়েছেন প্রদীপ চন্দ্র কুন্ডু। 

প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাবার পর তিনি লিখেছেন, “নিয়মিত পত্রযোগাযোগ করতে না পারলেও রেডিও তেহরানের বাংলা এবং অন্য কিছু ভাষার অনুষ্ঠানের প্রতি সর্বদাই নজর রাখি। সবটুকু না হলেও বাংলা অনুষ্ঠান কিছুটা অন্ততঃ নিয়মিতভাবে শুনি। রেডিওতে অনুষ্ঠান শুনেই আমি আনন্দ পাই। রেডিও তেহরান আমার কাছে সব সময়ই অন্যতম প্রিয় বেতারকেন্দ্র।” 

চিঠির একাংশে তিনি ৮ জুনের রিসেপশন রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। জানিয়েছেন- শ্রবণমান অন্য দিনের তুলনায় যথেষ্ট ভালো ছিল।

আকতার জাহান: রেডিও তেহরান সম্পর্কে সার্বিক মূল্যায়নের পাশাপাশি শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠানোয় প্রদীপ চন্দ্র কুন্ডু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

তো শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আপনাদের জন্য রয়েছে একটি আবৃত্তি। কাজী নজরুল ইসলামের কাণ্ডারী হুঁশিয়ার কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শরীফ বায়জীদ মাহমুদ।

গাজী আব্দুর রশীদ:  কবিতাটি শুনলেন। তো বন্ধুরা, আপনারা ভালো ও সুস্থ থাকুন আবারো এ কামনা করে গুটিয়ে নিচ্ছি চিঠিপত্রের আজকের আসর।

আশরাফুর রহমান: কথা হবে আবারো আগামী সপ্তাহে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৭

ট্যাগ