আগস্ট ১৬, ২০২২ ১৫:৫০ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের সাপ্তাহিক আয়োজন 'প্রিয়জন'। আজকের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় রয়েছি আমি গাজী আব্দুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি হাদিস শোনাতে চাই। ইমাম আলী (আ.) বলেছেন : "হে মানুষ! দুনিয়ার মোহ থেকে দূরে থেকো। কারণ, এটাই হলো সকল বিচ্যুতির কারণ, সকল বিপদের দরজা এবং সকল ফেতনার সঙ্গী এবং সকল ভোগান্তির কারণ।

আকতার জাহান: আমরা সবাই যেন দুনিয়ার মোহ থেকে দূরে থাকতে পারি- এ কামনা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

আসরের প্রথম মেইলটি এসেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে আর পাঠিয়েছেন শামীম উদ্দিন শ্যামল।

তিনি লিখেছেন, “আমি ফেসবুক লাইভের পাশাপাশি মাঝে মাঝে ওয়েবসাইট থেকে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান নিয়মিত শুনে যাচ্ছি। রেডিও তেহরান মানে শ্রোতাবান্ধব, প্রচণ্ড শ্রোতাপ্রিয়, বস্তুনিষ্ঠ ও বলিষ্ঠ একটি কণ্ঠস্বর। শ্রোতাদের  মূল্যায়ন ও চাহিদার কথা হয়তো এমনভাবে কোনো বেতার গুরুত্ব দেয় না। শ্রোতাদের প্রতি ভালোবাসা আর সকলকে একইভাবে মূল্যায়ন করা হয় এই মাধ্যমে।”

গাজী আব্দুর রশীদ: রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য শামীম উদ্দিন শ্যামল ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের পর ভারত থেকে আসা একটি মেইল চেক করছি। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে এটি পাঠিয়েছেন...

আশরাফুর রহমান: মনীষা রায়- তাই না?

গাজী আব্দুর রশীদ: একদম ঠিক বলেছেন। মেখলিগঞ্জ মানেই মনীষা রায়।

আকতার জাহান: তো কী লিখেছেন এ শ্রোতাবোন?

আশরাফুর রহমান: তিনি লিখেছেন, ১৪ জুলাই প্রচারিত রংধনু আসর শুনে খুব ভালো লাগল। এদিন এই আসরে একটি রূপকথার গল্প খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন আক্তার জাহান দিদি ভাই এবং গাজী আব্দুর রশীদ ভাই।  সাত বোন ও সাত নেকড়ের গল্পটি শুনে হৃদয় ভরে গেল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে দারুণ উপভোগ করলাম। শেষে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার ছোট্ট সোনামনী তানি-মুনির গাওয়া গানটিও খুব ভালো লেগেছে। 

গাজী আব্দুর রশীদ: মনীষা দিদির আরেকটা মেইল আমার হাতে রয়েছে। এতে তিনি একটি গান শুনতে চেয়েছেন।

আকতার জাহান: কোন্‌ গানটি শুনতে চেয়েছেন তিনি?

গাজী আব্দুর রশীদ: ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ বিখ্যাত এই লালনগীতিটি।

আশরাফুর রহমান: ঠিক আছে, আজকের আসরের শেষ দিকে গানটি বাজিয়ে শোনানোর ইচ্ছে রইল। তো বোন মনীষা রায়, নিয়মিত ইমেইল করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আকতার জাহান: বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার বন্ধন এন্ড লাকি শ্রোতা সংঘের সভাপতি নজরুল ইসলাম পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনিও গত ১৪ জুলাই তারিখে প্রচারিত রংধনু  আসরটির প্রশংসা করেছেন। লিখেছেন, ওই দিনের অনুষ্ঠানটি ছিল চমৎকারিত্বে ভরপুর। অনুষ্ঠানের রুপকার আশরাফুর রহমান ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুষ্ঠানটির বেশিরভাগ সময় জুড়ে  ছিলো চীনের রূপকথার একটি গল্প কাহিনী। সাত বোন ও সাত নেকড়ের কাহিনী। যদিও এটা বাচ্চাদের কাহিনী তবু আমার খুবই ভালো লেগেছে। গল্প শুনতে শুনতে কল্পনার পাখায় ভর করে কৈশোরে  ফিরে গিয়েছিলাম। গল্পটির শিক্ষা হলো- স্বার্থপর ব্যক্তি নিজের সর্বনাশ নিজেই ডেকে আনে। একতাই বল। একতাবদ্ধ ব্যক্তিরাই বিপদ মুক্ত  থাকে।

গাজী আব্দুর রশীদ: সবশেষে এ শ্রোতাবন্ধু জানিয়েছেন, “রেডিওতে ইদানীং অনুষ্ঠান ভালোই শোনা যাচ্ছে। সবাইকে অনুরোধ করবো রেডিওর অনুষ্ঠান শুনতে। তাহলে হয়ত কর্তৃপক্ষ রিসিপশনের মান নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে আরো ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।”

আশরাফুর রহমান: নজরুল ভাই একদম ঠিক বলেছেন। শ্রোতাবন্ধুরা শ্রবণমান রিপোর্ট পাঠালে অনেক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তা আমাদের সহায়ক হয়। তো নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনে শ্রবণমান রিপোর্ট ও মতামতভিত্তিক মেইল পাঠানোর জন্য নজরুল ইসলাম ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুইপাড়া থেকে এস এম নাজিম উদ্দিন পাঠিয়েছেন পরের মেইলটি।  

লিখেছেন, "বর্তমান যুগে নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক বিষয় হিসেবে নানা ইতিবাচক ও নেতিবাচক সংবাদ সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে একদিকে যেমন আছে সত্য ঘটনার বিবরণ, অন্যদিকে আছে নানা ফেক নিউজ ও একপেশে সংবাদ পরিবেশনের অপচেষ্টা। এসব কারণে এখনো আমরা গতানুগতিক মিডিয়া অর্থাৎ রেডিও ও খবরের কাগজের উপর নির্ভর করে থাকি নির্ভরযোগ্য সংবাদের আশায়। এক্ষেত্রে রেডিওর মতো গতানুগতিক মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ এখনও বেশিরভাগ মানুষ রেডিওর খবরকে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক বলে মনে করে। রেডিও তেহরান ও এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।  

আকতার জাহান: নাজিমউদ্দিন ভাই তার চিঠিতে একটি প্রস্তাবও দিয়েছে। লিখেছেন,

আমার জানতে ইচ্ছে করছে, ইরানের সংখ্যালঘুরা কি কি সুবিধা ও অধিকার ভোগ করে থাকে? ইরানের সংখ্যালঘুরা কেমন আছেন? রাষ্ট্রইবা তাদের জন্যে কি করছে?

এমন একটি আলোচনা যেকোন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুনতে চাই।

গাজী আব্দুর রশীদ: নাজিম ভাইয়ের প্রস্তাবটি আমাদের বিবেচনায় থাকল। তো সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে এবং রেডিও তেহরানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কে নিয়মিত মতামত পাঠানোর জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার তিলনা খোঁচাপাড়া থেকে আলী আহম্মেদ আরিফ পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

৭ জুলাইয়ের পুরো অনুষ্ঠান শোনার পর তিনি চিঠিটি লিখেছেন। আমি বরং তার চিঠির মূল কথাগুলো পড়ে শোনাচ্ছি। আরিফ ভাই লিখেছেন, “৭ জুলাইয়ের বিশ্বসংবাদ ও  দৃষ্টিপাতের পর ইমাম বাকির (আ.)-এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি সত্যিই আমার মন ছুয়ে গেছে। সবশেষে কুরআনের আলো অনুষ্ঠানটি খুব ভালো লেগেছে।”

আশরাফুর রহমান: আরিফ ভাই নিয়মিত মেইল পাঠানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও রেডিও তেহরানের পক্ষে কথা বলেন। আশা করি অন্যরাও এভাবেই আমাদের সাথে থাকবেন।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা কথা বলব সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী শ্রোতা তাজিরউদ্দিনের সঙ্গে। তার দেশের বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলায়। 

আশরাফুর রহমান: বাংলাদেশের জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলছিয়া থেকে হারুন অর রশীদ পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, “স্বার্থের দাঁড়িপাল্লায় যখন মাপা হয় সবকিছু তখন বিবেক ঘুমিয়ে যায়। মানবিকতা ও মনুষ্যত্ব বোধের দরজায় যখন কড়া নাড়ে বিবেকহীনতার ধারাপাত তখন অন্যায় বেড়ে যায় সমাজে, রাষ্ট্রে তথা সমগ্র বিশ্ব পরিমণ্ডলে। মানুষ বেপরোয়া হয়ে ওঠে অন্যায়ের সংস্কৃতিতে। আর এই লাগামহীন অস্থির সময়ে আমি ন্যায়, সাম্য ও মানবতার পক্ষে থাকতে চাই বলে আমি সঙ্গী করে নিয়েছি আইআরআইবিকে। আমি মনে করি সমগ্র বিশ্বে মজলুম ও নিপীড়িত মানুষের একমাত্র ভরসা ও বিশ্বস্ততার প্রতীক আইআরআইবি তথা রেডিও তেহরান।”

আকতার জাহান: আচ্ছা, হারুন ভাই কি আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন?
গাজী আব্দুর রশীদ: হ্যাঁ, তিনি তিনটি অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছেন। অনুষ্ঠানগুলো হলো- আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল, কুরআনের আলো এবং রংধনু আসর।

আশরাফুর রহমান: ভালো লাগার অনুষ্ঠানগুলোর নাম উল্লেখসহ রেডিও তেহরান সম্পর্কে বরাবরের মতোই চমৎকার মূল্যায়নের জন্য হারুন অর রশীদ আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ভারতের আসামের বড়পেটা জেলার কান্দুলিয়া থেকে আব্দুস সালাম সিদ্দিক পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। এতে তিনি রংধনু আসর সম্পর্কে মতামত জানিয়েছেন। লিখেছেন, "গত ২১ জুলাই তারিখে সবার সাথেই নিবিড়ভাবে উপভোগ করলাম শিশুকিশোরদের মনোরঞ্জনের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান রংধনু আসর। অনুষ্ঠানটিতে শুধু বিনোদনের পশরাই ছিল না, ছিল ইসলামের অতীত ও ঐতিহ্যের এক চিরন্তন সাক্ষী। অনুষ্ঠানে ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (আ.)-এর বীরত্ব ও মহানুভবতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়া হজরত আলীর গৌরবগাঁথা নিয়ে সুন্দর একটি ফার্সি গান প্রচার করা হয় যার ভাবার্থ শুনে সত্যি হৃদয় শীতল হয়েছে।"

আকতার জাহান: একই অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের সিনিয়র শ্রোতা বিধান চন্দ্র সান্যাল। তিনি লিখেছেন, ইতিহাসভিত্তিক সত্য ঘটনা অবলম্বনে পরিবেশিত অনুষ্ঠানটি যথেষ্ট জ্ঞানবর্ধক।

গাজী আব্দুর রশীদ: ভাই আব্দুস সালাম সিদ্দিক ও বিধানচন্দ্র সান্যালের মতামত জেনে ভালো লাগল। আশা করি এভাবে আমাদেরকে অনুপ্রেরণা জোগাবেন।

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, রেডিও তেহরানের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকার জন্য অনেকেই আমাদের কাছে লেখা পাঠিয়েছিলেন। আমরা সেসব লেখা থেকে আজ একজনের লেখা তুলে ধরব। এ লেখাটি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর থানার পুরান তাহিরপুরের শ্রোতা মো: সাইফুল ইসলাম থান্দার। তিনি লিখেছেন,

আশরাফুর রহমান: "১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে আমি রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান শোনা শুরু করি এবং ঐ মাসেই আমি প্রথম চিঠি লিখি। যার প্রতি উত্তরে রেডিও তেহরানের খামে আমার স্থায়ী ঠিকানায় প্রথম চিঠি এসেছিল ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর। রেডিও তেহরান বাংলা অনুষ্ঠানের সন্ধান পাওয়ার ক্ষণটি এবং আমাকে দেয়া রেডিও তেহরানের নিজস্ব খামের চিঠিটি আজও আমার কাছে স্মরণীয় সুখ স্মৃতি হয়ে আছে। প্রথম চিঠির উত্তর পাওয়ার পর থেকে রেডিও তেহরান শোনা ও সেখানে চিঠি লেখা আমার নেশায় পরিণত হয়। এখনো রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান শোনায় আমার ভাটা পড়েনি এতটুকুও। তার নির্ভীক সংবাদীয় উপজীব্য এবং সংবাদ বিশ্লেষণের আসর দৃষ্টিপাত শোনা আমার নিয়মিত কর্মের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।"

আকতার জাহান: মো: সাইফুল ইসলাম থান্দার ভাইকে ধন্যবাদ চমৎকার লেখাটির জন্য।

গাজী আব্দুর রশীদ: তো শ্রোতাবন্ধুরা, আমাদের প্রযোজিকা হাত নেড়ে জানিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের হাতে আজ আর সময় নেই। আপনারা কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে শ্রোতাবোন মনীষা রায়ের অনুরোধের গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।

আশরাফুর রহমান: কথা হবে আবারো আগামী আসরে।  

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬

ট্যাগ