'জ্বালানির মজুতও ‘বিপজ্জনকভাবে কমে’ আসছে'
'ডলার–সংকটে জ্বালানির মূল্য পরিশোধে সমস্যা, বাংলাদেশে ‘তেল না পাঠানোর হুমকি'
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ২৩ মে মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- নির্বাচন ছাড়াই সংসদের মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাখ্যা দিলেন ঢাবির সেই অধ্যাপক–ইত্তেফাক
- বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় জাতিসংঘ-মানবজমিন
- রয়টার্সের সংবাদ–সংকটে জ্বালানির মূল্য পরিশোধে সমস্যা, বাংলাদেশে ‘তেল না পাঠানোর হুমকি’-প্রথম আলো
- আ.লীগ আধুনিক দল নয়, সন্ত্রাসীদের আখড়া: ফখরুল-যুগান্তর
- সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা : কৃষিমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ
কোলকাতার শিরোনাম:
- কর্ণাটকের ছায়া মধ্যপ্রদেশে, গেরুয়া শিবির ছেড়ে কংগ্রেসে যোগের ঢল-সংবাদ প্রতিদিন
- গ্রেপ্তারের শঙ্কা অভিষেকের, ফের ছুটলেন সুপ্রিম কোর্টে-গণশক্তি
- শিয়রে সর্বনাশ-আনন্দবাজার
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার পর পদ হারালেন ওয়াসার চেয়ারম্যান। কী বলবেন এ সম্পর্কে?
২. ইউক্রেনে এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান পাঠানোর সবুজ সংকেত দিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়া বলছে এর মধ্যদিয়ে ন্যাটো জোটের চলমান যুদ্ধে জড়িযে পড়ার প্রশ্ন আসবে। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর
রয়টার্সের সংবাদ ডলার–সংকটে জ্বালানির মূল্য পরিশোধে সমস্যা, বাংলাদেশে ‘তেল না পাঠানোর হুমকি’-প্রথম আলো
ডলার–সংকটে আমদানি করা জ্বালানির মূল্য পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সেই সঙ্গে জ্বালানির মজুতও ‘বিপজ্জনকভাবে কমে’ আসছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পাঠানো দুটি চিঠির একটির সূত্রে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। ছয়টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাংলাদেশের কাছে জ্বালানি তেল বাবদ ৩০ কোটি ডলার পাবে। অর্থ না পাওয়ায় এদের কেউ কেউ বাংলাদেশে তেল পাঠানো কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তেলবাহী কার্গো ‘না পাঠানোর হুমকি’ দিয়েছে বলে চিঠির সূত্রে আরও জানিয়েছে রয়টার্স। গত বছর গ্রীষ্মকালে জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ–সংকট চরম আকার ধারণ করে বাংলাদেশে। এতে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রয়টার্সের হাতে যে চিঠি এসেছে, সেখানে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে জ্বালানি মূল্য পরিশোধে বিপিসি বিলম্ব করছে।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন ভারতের পাওনা রুপিতে পরিশোধ করতে পারে, তার অনুমতি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বিপিসি।এ চিঠির বিষয়ে বিপিসি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে যৌক্তিকভাবে ডলার ছাড় করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।
৯ মে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বিপিসি বলেছে, ‘দেশের বাজারে বিদেশি মুদ্রার সংকট থাকায় এবং সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের চাহিদা পূরণ করতে না পারায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সময়মতো আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না।’এর আগে গত এপ্রিল মাসে পাঠানো আরেক চিঠিতে বিপিসি বলে, ‘মে মাসের তফসিল অনুযায়ী জ্বালানি আমদানি করা না গেলে দেশব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে, সেই সঙ্গে জ্বালানির মজুত বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে।’ এ বিষয়ে রয়টার্স বিপিসি ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা কেউ ফোন কলে সাড়া দেয়নি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়; দাম বাড়ে অন্যান্য পণ্যের, বৃদ্ধি পায় মার্কিন ডলারের বিনিময় হার। বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করতে রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার ছাড়ে। এসব কারণে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়। প্রতি মাসেই তা কমছে।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ঋণের আবেদন করে। আইএমএফ ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে, ঋণের প্রথম কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পেয়েছে।
রিজার্ভ সংরক্ষণ
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি ব্যয় মেটাতে চলতি অর্থবছরে বিপিসিকে ৫০০ কোটি ডলার এবং এলএনজি আমদানিতে পেট্রোবাংলাকে ২০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। এ ছাড়া ঋণপত্র খুলতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও ৩০০ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সবকিছু যৌক্তিকভাবে ব্যবস্থাপনা করছি। বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। নানা উত্থান-পতন সত্ত্বেও আমরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ সংরক্ষণ করছি।’ বিপিসি প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টন পরিশোধিত তেল ও এক লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ডলারস্বল্পতার কারণ দেখিয়ে কয়েক মাস ধরে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর ১৫০ কোটি ডলার মূল্যমানের বিল পরিশোধ করছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সাল খান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এ বিলম্বের কারণে অনেক স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে; এর প্রতিকার না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে।’ এ বিষয়ে বিপিডিবির মুখপাত্র শামিম হাসান বলেছেন, ‘এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিল পরিশোধের চেষ্টা করছি, কিন্তু অন্যদের মতো আমরাও ডলার–সংকটে আছি।’
এদিকে প্রথম আলোর এক সংবাদে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ক্রয়চুক্তি করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। চুক্তিতে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম হিসাব করা হয় মার্কিন ডলারে। কিন্তু ২০২২ সালে ডলারের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় এক বছরে পিডিবির বাড়তি ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা।
হঠাৎ কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ-প্রথম আলো
আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে নিজেদের শক্ত অবস্থান বজায় রাখবে আওয়ামী লীগ। রাজপথের আন্দোলনে থাকবে বিএনপিও। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার বিএনপিকে রাজপথে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এত দিন বিএনপির কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে ‘শান্তি সমাবেশ’ করে আসছিল ক্ষমতাসীন দলটি। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের সাত–আট মাস বাকি থাকতেই হঠাৎ তারা বিএনপিকে আর কোনো ছাড় না দেওয়ার মতো কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো গতকাল সোমবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধ কর্মসূচি’ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন দল কার্যত বিএনপিকে এই বার্তা দিল, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে নিজেদের শক্ত অবস্থান বজায় রাখবে তারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, নির্বাচনের সাত–আট মাস আগে ক্ষমতাসীন দল যখন বিরোধী দলকে প্রতিরোধ করার কথা বলতে শুরু করে, তখন রাজনীতিতে মুখোমুখি অবস্থা তৈরি হয়।
এর আগে গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকায় এক সমাবেশে বলেছেন, এখন থেকে শান্তি সমাবেশ নয়, সারা দেশে বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে। এ ধরনের অবস্থান নেওয়ার পেছনে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য হচ্ছে, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের নামে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। রাজশাহীতে দলটির এক সমাবেশে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু সাইদের একটি বক্তব্য সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়েছে। তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগ কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এরপরই বিএনপিকে প্রতিরোধ করার কথা বলতে শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, নির্বাচনের সাত–আট মাস আগে ক্ষমতাসীন দল যখন বিরোধী দলকে প্রতিরোধ করার কথা বলতে শুরু করে, তখন রাজনীতিতে মুখোমুখি অবস্থা তৈরি হয়। একইভাবে বিরোধী দলও যখন নিজেদের দাবির বিষয়ে অনমনীয় অবস্থানে চলে যায়, তখন সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর কারণ, দুই পক্ষই এখন পর্যন্ত আলোচনার বাইরে গিয়ে রাজপথেই সমাধান খুঁজছে।
আওয়ামী লীগের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন, তা জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এ ধরনের অবস্থান নিয়ে সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করে তাদের আন্দোলন নস্যাৎ করতে চাইছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপির আচরণের কারণেই তাদের প্রতিরোধ করার কথা বলা হচ্ছে।
ড. মাহবুবউল্লাহ
একজনের বক্তব্যের জন্য পুরো দলকে দোষারোপ করা হচ্ছে, এটি ঠিক নয়। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে গেলে সংঘাত হতে পারে এবং তা গণতন্ত্র ও দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
মাহবুবউল্লাহ, সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আ.লীগ আধুনিক দল নয়, সন্ত্রাসীদের আখড়া: ফখরুল-যুগান্তর
আওয়ামী লীগ কোনো আধুনিক রাজনৈতিক দল নয়, এটি সন্ত্রাসীদের আখড়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২০ মে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণের পূর্বে রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের বাসভবনে ‘আওয়ামী ছাত্রলীগ-যুবলীগের’ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পুলিশের সামনেই হামলা চালায়। পরে সভাস্থলে যাওয়ার সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও গুলিবর্ষণ ছাড়াও বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে ১৭ জন নেতাকর্মীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, এরা সবসময় রক্ততৃষ্ণায় কাতর থাকে। এই দলটি দেশকে হত্যা, দখল, হাঙ্গামা, রক্তারক্তি ও খুনোখুনিতে ভরিয়ে দিতে চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপ শুরু করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। দেশে এখন জবাবদিহিতাহীন নির্মম দুঃশাসন বিরাজমান বলেই সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া বিস্তার লাভ ঘটেছে। তাদের সৃষ্ট অবসন্ন গণতন্ত্রে মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দেশে ন্যায়বিচার মহাশূন্যে বিলীন হয়ে গেছে।
বিচারহীনতার কারণেই সন্ত্রাসীরা বেআইনি কাজ করতে উৎসাহিত হচ্ছে বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া দূরে থাকুক বরং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জনগণের ওপর রক্তাক্ত আগ্রাসনের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।
বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় জাতিসংঘ-মানবজমিন
বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁর পক্ষ থেকে এই বার্তা দিয়েছেন তার মুখপাত্র স্টিফান দুজারিক। সোমবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংএ এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ব্রিফিং চলাকালীন এক সাংবাদিক দুজারিকের কাছে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তার বক্তব্য জানতে চান। এর উত্তরে জাতিসংঘ মহাচিবের এই মুখপাত্র বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বার্তা খুবই স্পস্ট। বিশ্বের অনান্য দেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আমাদের বার্তা একই। আমি বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে স্পস্ট করে বলবো, আমরা একটি বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চাই।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
কর্ণাটকের ছায়া মধ্যপ্রদেশে, গেরুয়া শিবির ছেড়ে কংগ্রেসে যোগের ঢল-সংবাদ প্রতিদিন
মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) বিধানসভা নির্বাচনের আগে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল বিজেপি। গেরুয়া শিবির ছেড়ে একের পর এক নেতা কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। বলা যেতে পারে, কর্ণাটকের (Karnataka) পুনরাবৃত্তি হচ্ছে মধ্যপ্রদেশে। দক্ষিণের রাজ্যটিতেও সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলে দলে বিজেপি নেতা শিবির ত্যাগ করে কংগ্রেসে (Congress) যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ একাধিক হেভিওয়েট নেতাও ছিলেন। সেটি ছিল রাজ্য বিজেপিতে (BJP) গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। কর্ণাটকেও ভোটের মুখে গেরুয়া শিবিরে তেমনই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।রবিবার বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন নরওয়ালির তিনবারের বিজেপি বিধায়ক প্রদীপ লারিয়ার ভাই হেমন্ত লারিয়া।কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিজেপিকে তুলধোনা করে হেমন্ত বলেন, “বিজেপি শাসনে মিথ্যাচারিতা ও লুঠের সরকার চলছে মধ্যপ্রদেশে। গোটা রাজ্যের মানুষ চালের দাম, বেকারত্ব, দুর্নীতিতে বিরক্ত। সরকার চলছে অর্থ ও পেশীশক্তিতে। ক্ষমতাসীন দল রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিস ও প্রশাসনের অপব্যবহার করছে। হনুমানজির আশীর্বাদে এই দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপি সরকারকে ছুড়ে ফেলে দেবেন কমল নাথ।
নতুন সংসদের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পাননি রাষ্ট্রপতি, বিজেপিকে বিঁধে বয়কটের পথে বিরোধীরা-সংবাদ প্রতিদিন
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সংসদের নতুন ভবন উদ্বোধন। অথচ সেখানে ব্রাত্য সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের অধিকারী রাষ্ট্রপতি। যিনি আবার সংসদের অভিভাবক বা সর্বময় কর্তাও। কেন্দ্রের এই বঞ্চনা, উপেক্ষার প্রতিবাদে সরব হলেন বিরোধীরা। শুরু হয়ে গেল ২৮ মে সাভারকরের জন্মদিবসে সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বয়কট করার প্রাথমিক পরিকল্পনাও।
প্রধানমন্ত্রী নয়, পদমর্যাদা অনুযায়ী নব সংসদ ভবনের উদ্বোধন করার অধিকারী রাষ্ট্রপতি। রবিবারই দাবি তুলেছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। এরপর একে একে সেই সুরে বক্তব্য রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস, বাম-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল। সোমবার সেই বক্তব্যকেই আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। একের পর এক চারটি টুইটে তিনি বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকারকে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি ও আরএসএস রাষ্ট্রপতি পদকে একটি নাম কা ওয়াস্তে এক স্মারকে পরিণত করতে চাইছে। উদাহরণস্বরূপ সংসদ ভবনের শিলান্যাসের সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন খাড়গে। তাঁর বক্তব্য, শুধুমাত্র ভোটের অছিলায় দলিত ও জনজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে মোদি সরকার (Modi Govt)।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরোধীদের এই বক্তব্য যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। ভারতীয় সংবিধানের ৭৯ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে দেশের সংসদ গঠিত হয়েছে রাষ্ট্রপতি, রাজ্যসভা এবং লোকসভা নিয়ে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদের শীর্ষাসনে, তাই নয়া ভবন উদ্বোধন হওয়া উচিত তাঁর হাতেই। এই প্রসঙ্গে এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংসদ সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা। কংগ্রেস নেতা মনে করিয়ে দেন, সংসদের যে কোনও অধিবেশন ডাকেন রাষ্ট্রপতি। প্রতি পর্বে অধিবেশন দুই কক্ষে সভাপতিত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত, রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান ও লোকসভায় স্পিকার অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি করেন। কিন্তু সমাপ্তি ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি।
বছরের শুরুতে বাজেট অধিবেশনের আগে যে যৌথ অধিবেশন হয়, তার সূচনাও হয় রাষ্ট্রপতির ভাষণের মাধ্যমে। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে তাঁর দু’দিকে থাকেন রাজ্যসভা চেয়ারম্যান ও লোকসভা স্পিকার। প্রথম সারিতে হলেও প্রধানমন্ত্রীর স্থান হয় মঞ্চের নিচে, অন্য সাংসদদের সঙ্গেই। একটি অংশের দাবি, আদতে দলিত ও জনজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সর্বোচ্চ আসনে বসালেও এখনও তাঁদের কাছে যেতে অনীহা রয়েছে আরএসএস-বিজেপির। তাই শুভ সূচনা তাঁদের বদলে করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে। এই প্রসঙ্গে আনন্দ শর্মার বক্তব্য, “আসলে ভবনের দেওয়ালে নিজের নাম দেখতে চান মোদি। তাই রাষ্ট্রপতির বদলে নিজেই শিলান্যাস ও এখন উদ্বোধন করতে চলেছেন।” একটি সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে এদিন বিহার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বৈঠকেও উঠেছে এই প্রসঙ্গ।
সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বয়কটের আহ্বান করে খাড়গে ও নীতীশ অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও ঠিক হয়েছে। দেখার শুধু আরও একটি বিষয়ে জোটবদ্ধ হয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির দিকে কতটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেন বিরোধী নেতারা।
শিয়রে সর্বনাশ-আনন্দবাাজর পত্রিকার সম্পাদকীয়
পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি, অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রকোপ যে কতটা গুরুতর, তা ইতিমধ্যে সর্বজনবিদিত।
অনিয়মের অভিযোগে ত্রিশ হাজারের বেশি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করতে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ: বিচারে বিলম্ব হলে যেমন বিচার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনই তড়িঘড়ি বিচারেও বিচারপ্রক্রিয়ার ক্ষতি হয়। মন্তব্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিলম্বিত বিচার অবিচারের শামিল, কিন্তু সুবিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং বিবেচনাও কম জরুরি নয়। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি, অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রকোপ যে কতটা গুরুতর, তা ইতিমধ্যে সর্বজনবিদিত। এই বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিচারকদের ভূমিকাও নিঃসন্দেহে নাগরিকের শ্রদ্ধার্হ এবং অভিবাদনযোগ্য। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগে চিহ্নিত শিক্ষকদের নিয়োগের প্রক্রিয়াটিকে সংশোধন করার জন্য তো তিনি আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ তথা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন, যে যাচাইয়ের পরে তাঁদের চাকরির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে। ডিভিশন বেঞ্চও এই বিষয়ে সহমত। সাধারণ বুদ্ধিতে, এবং মাননীয় বিচারপতির প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা সহকারেই, প্রশ্ন তোলা যায়— এই কয়েক মাস অপেক্ষা না করে এখনই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করা এবং পার্শ্বশিক্ষকের বেতনে কাজ করতেবলার নির্দেশটির যৌক্তিকতা কী ছিল, প্রয়োজনই বা কতটা? অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত না হওয়া অবধি নির্দোষ বলে গণ্য হবেন— ভারতীয় বিচার-দর্শনের এই মৌলিক আদর্শটিও কি একই প্রশ্ন তোলে না?
মনে রাখতে হবে, এমন বিপুল সংখ্যায় চাকরি বাতিল এবং বেতন ছাঁটাইয়ের সম্মুখীন হলে শিক্ষকদের উপর প্রবল মানসিক চাপ পড়ার আশঙ্কা থাকে, আশঙ্কা থাকে তাঁদের সামাজিক মর্যাদাহানির, এবং সর্বোপরি আশঙ্কা থাকে স্কুলের পঠনপাঠনে বড় রকমের ব্যাঘাত সৃষ্টির। বস্তুত, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরেও সামগ্রিক অনিশ্চয়তা এবং অবিশ্বাসের পরিবেশ কতটা কাটবে, বলা শক্ত। অন্য নানা পরিসরের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের, বিশেষত স্কুলের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য আছে: ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকশিক্ষিকাদের (এবং অভিভাবক তথা বৃহত্তর সমাজের) পারস্পরিক আস্থা ও সুসম্পর্ক সুষ্ঠু পঠনপাঠনের জন্য অত্যাবশ্যক। পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সেই সম্পর্কের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান জমানায় আদিগন্ত দুর্নীতির সাম্রাজ্য এবং, তার পাশাপাশি, শিক্ষার প্রতি সরকারি নায়কনায়িকাদের চূড়ান্ত ঔদাসীন্য গোটা পরিস্থিতিকে এক অকল্পনীয় সঙ্কটের অতলে নিক্ষেপ করেছে। এই ভয়াবহ অবস্থার প্রতিকারে সমস্ত স্তরে অবিলম্বে সর্বশক্তি নিয়োগ করা জরুরি, তা না হলে সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সামনে শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যৎ বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
এখানেই শিক্ষাব্যবস্থার পরিচালকবর্গ এবং রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের নেতানেত্রীদের অপরিসীম দায়িত্ব, যে দায়িত্বের কণামাত্রও তাঁরা পালন করেননি। এক দিকে প্রতিবাদীদের লাগাতার বিক্ষোভ আন্দোলন এবং অন্য দিকে বিচারবিভাগের তৎপরতা, এই দুইয়ের কল্যাণে শিক্ষা-প্রশাসনের যে ছবি উন্মোচিত হয়েছে, তা রাজ্যের শাসকদের পক্ষে অকল্পনীয় লজ্জা এবং কলঙ্কের। মনে রাখা দরকার, ডিভিশন বেঞ্চের রায়েও অনিয়মের আশঙ্কাকে স্পষ্ট স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন হল, এই সার্বিক অনাচারের ইতিহাসকে পিছনে ফেলে শাসকরা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবেন কি না। যদি চান, তবে প্রথম কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করা। তার সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক ভাবে শিক্ষক নিয়োগ এবং স্কুলশিক্ষার আয়োজনে যত রকমের ঘাটতি আছে, সেগুলি পূরণ করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়া। আক্ষরিক অর্থেই, কারণ সর্বনাশের সঙ্গে যুদ্ধ না করে তাকে আটকানো আজ আর সম্ভব নয়
গ্রেপ্তারের শঙ্কা অভিষেকের, ফের ছুটলেন সুপ্রিম কোর্টে-গণশক্তি
মাত্র একবারের ‘নির্যাস শূন্য’ জেরার পরেই এবার রাজ্যে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির আশঙ্কায় ভুগছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো, সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতেও তৃণমূলের শীর্ষনেতার এই ভয়ের কথা জানানো হয়েছে!
নিয়োগ দুর্নীতির প্রথম জেরার পরেই কার্যত গ্রেপ্তারির আতঙ্কে অভিষেক ব্যানার্জি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ, আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সোমবার অভিষেক ব্যানার্জির তরফে সেই কথাই জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গত ২০ তারিখেই প্রথম সিবিআই জেরার মুখে পড়েছিলেন অভিষেক ব্যানার্জি। সাড়ে নয় ঘণ্টার জেরা শেষে বাইরে বেরিয়ে প্রবল ‘আত্মবিশ্বাসী’র ঢঙে সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন—‘এই জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। যারা ডেকেছে তাঁদের সময় নষ্ট, আমারও সময় নষ্ট। ৯০ শতাংশ প্রশ্নই বোগাস।’ শুধু তাই নয় নিজাম প্যালেসে রীতিমত মাইক হাতে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন ‘বারেবারে বলছি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে, তথ্য পেলে সেটা জানান। বারেবারে ডাকতে হবে না। বলবেন, হাঁটতে হাঁটতে নিজেই ফাঁসির মঞ্চে চলে যাবো। কয়লা, গোরু, নারদকাণ্ডের পরে এসএসসিকাণ্ডেও একই কথা বলছি।’
যদিও প্রথমবারের সেই ‘সময় নষ্ট’ জেরার পরেই এবার সিবিআইয়ের তরফে যাতে কোনও ‘কড়া পদক্ষেপ’ না নেওয়া হয় তার জন্য আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিষেক ব্যানার্জি। এর আগে জেরা ঠেকাতে আদালতে গিয়েছিলেন, এখন জেরার পরে গ্রেপ্তারি ঠেকাতে রক্ষাকবচের আবেদন!
‘নিজেই হেঁটে গিয়ে ফাঁসিতে ঝুলব’, ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়ব’— এমন সব অপরিণত, হালকা চালের কথা সাংবাদিক বৈঠকে বললেও নিজেরা জেরা আটকাতে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট ছুটেছেন সব জায়গায়, বিপুল টাকায় বড় বড় আইনজীবীদের মাঠে নামাতে হয়েছে।
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! কথাবার্তার আজকের আসর এখানেই গুটিয়ে নিচ্ছি। আবারও কথা হবে আগামী আসরে ততক্ষণ সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুন।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৩