সবচেয়ে বেশি ‘রাষ্ট্রহীন’ মানুষ থাকে বাংলাদেশে
'ধরব আর জেলে ভরে দেব' মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে কঠোর অবস্থান
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১৫ জুন বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- আওয়ামী লীগের নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে: ফখরুল -মানবজমিন
- যে মন্তব্যের জন্য ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে হবে, জানালেন কাদের-যুগান্তর
- পুলিশ কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রী-শাশুড়ির নামে বিপুল ‘অবৈধ সম্পদ’, দুদকের মামলা-প্রথম আলো
- ৫৮২ কোটি টাকা কি বাতাসে খেয়েছে: বিসিআইসিকে হাইকোর্ট-ইত্তেফাক
- সবচেয়ে বেশি ‘রাষ্ট্রহীন’ মানুষ থাকে বাংলাদেশে -কালের কণ্ঠ
- নৌকাকে হারতে দেব না : আরাফাত-বাংলাদেশ প্রতিদিন
কোলকাতার শিরোনাম:
- মোদী সরকারের আসল রূপ-গণশক্তি
- ‘সারা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে দিচ্ছি’! পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে হাই কোর্টের ভর্ৎসনা রাজ্য এবং কমিশনকে-আনন্দবাজার পত্রিকা
- বিশেষ নিরাপত্তায় প্রার্থীদের মনোনয়নের ব্যবস্থা করবে পুলিশ, নির্দেশ হাই কোর্টের -সংবাদ প্রতিদিন
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. আমাদের সময়ে কোনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি: প্রধানমন্ত্রী। এটা হলো দৈনিক মানবজমিনের শিরোনাম। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
২. তেহরানে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেন নয় পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। আপনার মূল্যায়ন কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর
পুলিশ কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রী-শাশুড়ির নামে বিপুল ‘অবৈধ সম্পদ’, দুদকের মামলা-প্রথম আলোর এ খবরে লেখা হয়েছে, ফেনীতে কর্মরত এক পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার করা মামলায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ও শাশুড়িকেও আসামি করা হয়েছে।অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম সৈয়দ আবদুল্লাহ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। বর্তমানে তিনি ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অপরাধ শাখার পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।আদালতের আদেশে সৈয়দ আবদুল্লাহর অর্জিত স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
'ধরব আর জেলে ভরে দেব'-ইত্তেফাক/যুগান্তর
কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যেই হোক, যে পর্যায়েই হোক, মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে কঠোর অবস্থান থাকবে। সব জেলে ঠুকে দেব। ধরব আর জেলে ভরে দেব। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন। ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসির পক্ষে আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমার সময় আবেদন করলে হাইকোর্ট এ মন্তব্য করে। প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন উচ্চ আদালত। আদালত বলেছেন, ‘টাকা কি বাতাসে খেয়েছে? কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এ টাকা আত্মসাৎ করেছে—তাদের নাম দিন। দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
যে মন্তব্যের জন্য ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে হবে, জানালেন কাদের-যুগান্তর
দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে নিয়ে করা বিএনপি মহাসচিবের বিরূপ মন্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিবের কি বিশ্রি মন্তব্য। বিষাক্ত কথা। কী করে বের হয়? দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে বলে কুত্তা মার্কা নির্বাচন। তিনি কি গাজীপুর, বরিশাল, খুলনা, কক্সবাজারের নির্বাচন দেখেননি? সুষ্ঠু নির্বাচনকে বিএনপি বলে কুত্তা মার্কা নির্বাচন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ শব্দ ব্যবহার করার পরও মার্কিন ভিসানীতি এখানে কী করবে— এটিতে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছে বিএনপি।
মানবজমিনের খবরের শিরোনাম- আওয়ামী লীগের নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে: ফখরুল
বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো সবকিছু সাজিয়ে নিতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ ও প্রশাসনে রদবদল করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো সবকিছু সাজাতে চায়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গলার জোরে বলে দেশে গণতন্ত্র আছে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছে। তারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, কিন্তু সেটা টিকেনি। এবারও টিকবে না।
সবচেয়ে বেশি ‘রাষ্ট্রহীন’ মানুষ থাকে বাংলাদেশে-কালের কণ্ঠ
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমার তার নাগরিক হিসেবে স্বীকার না করায় বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে তারা স্টেটলেস (রাষ্ট্রহীন)। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ‘রাষ্ট্রহীন’ এখন বাংলাদেশে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাবে ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশে রাষ্ট্রহীন মানুষের সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩০০। গতকাল বুধবার ইউএনএইচসিআর প্রকাশিত ‘২০২২ সালের বৈশ্বিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির প্রবণতা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য রয়েছে।
২০১৬ সালে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য করে মিয়ানমার। ওই দেশটিতে এখনো ছয় লাখ ৩০ হাজার রাষ্ট্রহীন মানুষ আছে। তারা মূলত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। রাষ্ট্রহীন মানুষের উপস্থিতির তালিকায় মিয়ানমার আছে তৃতীয় স্থানে।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
‘সারা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে দিচ্ছি’! পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে হাই কোর্টের ভর্ৎসনা রাজ্য এবং কমিশনকে-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে চলতে থাকা অশান্তি নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বললেন, ‘‘স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে যদি কমিশন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, তবে আদালত গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়ে দেবে।’’ মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির কথা উল্লেখ করে আদালত এ কথাও জানিয়েছে যে, ‘‘পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা না হলে আদালত নিশ্চুপ দর্শকের মতো বসে থাকবে না।’
বিশেষ নিরাপত্তায় প্রার্থীদের মনোনয়নের ব্যবস্থা করবে পুলিশ, নির্দেশ হাই কোর্টের-সংবাদ প্রতিদিন
পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) মনোনয়নের শেষ দিনও জেলায় জেলায় অশান্তি অব্যাহত। এদিনও উত্তপ্ত ভাঙড়, ক্যানিং। সেখানে বিরোধী প্রার্থীরা প্রথম দিন থেকেই মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ। শেষ দিনে যাতে তা দিতে পারেন, সেই জন্য কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশকে বিশেষ নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বলা হয়েছে, কলকাতা পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে হাই কোর্টে হাজির থাকা বিরোধী প্রার্থীদের এখনই মনোনয়ন জমার জন্য গন্তব্যে পাঠাতে হবে।বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিভিন্ন এলাকার বিরোধী প্রার্থীরা।বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানান, প্রত্যেক প্রার্থীকে কলকাতা পুলিশকে ‘এসকর্ট’ দিয়ে পৌঁছে দিতে হবে মনোনয়ন কেন্দ্র। তাঁরা যাতে সময়ের মধ্যে পৌঁছতে পারেন মনোনয়ন স্থলে, তাই এই ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে।
মোদী সরকারের আসল রূপ-গণশক্তি
বিশ্বব্যাপী অতি প্রভাবশালী সোশাল মিডিয়া টুইটারের প্রাক্তন কর্তা জ্যাক ডরসে এক সাক্ষাৎকারে যা বলেছেন তাতে আর কিঞ্চিৎমাত্র সংশয় থাকার কথা নয় যে মোদী কথিত ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ (গণতন্ত্রের জননী) কালকরমে ‘মার্ডার অব ডেমোক্রেসি’তে (গণতন্ত্রের হত্যা) পর্যবসিত হয়েছে। গণতন্ত্রে স্বৈরাচার কখনোই মাথা তুলতে পারে না।
গণতন্ত্রকে নির্মূল বা হত্যা করেই ফ্যাসিস্ত স্বৈরতন্ত্র নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে। মোদী সরকার বহিরঙ্গে যতই গণতন্ত্রের ধ্বজা ওড়াক বাস্তবের জমিতে একাধিকপত্যকামী স্বৈরাচারী প্রবণতাই প্রকট। সরকার বিরোধী আন্দোলন এই সরকার বরদাস্ত করতে পারে না। এমনকি সরকারের বিরোধিতা, সমালোচনা, নিন্দাও সহ্য করতে পারে না। বিরুদ্ধ কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য সদা সক্রিয় এই সরকার।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৫