জুলাই ২২, ২০২৩ ১২:৪৮ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২২ জুলাই শনিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ‘রাতের অন্ধকারে এমপি হয়েছ, আমরাই তো তৈরি করেছি’-প্রথম আলো
  • তিন মন্ত্রীর সাফ কথা সংবিধানমতেই নির্বাচন, শেখ হাসিনাও পদত্যাগ করবেন না-ইত্তেফাক
  • বিভিন্ন স্তরের সরকারি চাকরিজীবী ভোটের আগে অঢেল সুবিধা -যুগান্তর
  • নির্বাচনের আগে মানবাধিকারের অঙ্গীকার পর্যালোচনা-কালের কণ্ঠ
  • তালাকে কেন নারীরা এগিয়ে?-মানবজমিন
  • বাংলাদেশ আমদানি ব্যয়, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপে ভুগছে: প্রধানমন্ত্রী-ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • ৩৮ থেকে বেড়ে হচ্ছে ৪০, এনডিএ-তে আরও দুই সহযোগী দলকে নিয়ে আসছেন মোদী-শাহেরা-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা তৃণমূলের, শাহ-নাড্ডার কাছে নালিশ সুকান্তর-সংবাদ প্রতিদিন
  • মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করল পলিট ব্যুরো-গণশক্তি

এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

‘রাতের অন্ধকারে এমপি হয়েছ, আমরাই তো তৈরি করেছি’-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী বলেছেন, ‘রাতের অন্ধকারে তোমরা এমপি হয়েছ, আমরাই তো তৈরি করেছি। অহংকার ভালো না দাদাভাই। তোমরা এমপি হয়েছ, মুরব্বিদের সম্মান করে চলো। তা না হলে সমস্যা হবে। তখন কিছু বলতে পারবা না। সংগঠন আমরাই তো করেছি, তোমরা করো নাই।’

শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আয়োজিত এক শান্তি সমাবেশে আসগর আলী এসব কথা বলেন।সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীরা বলছেন, আসগর আলী মূলত কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফের উদ্দেশে কথাগুলো বলেছেন।

তিন মন্ত্রীর সাফ কথা সংবিধানমতেই নির্বাচন, শেখ হাসিনাও পদত্যাগ করবেন না-ইত্তেফাকের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ীই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা আবারও জানিয়ে দিলেন সরকারের তিন জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে পুনর্বহাল করে সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি ও তাদের ৩৬টি মিত্র দল এক দফার আন্দোলনে থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এই তিন নেতা সাফ জানিয়েছেন- সংবিধান থেকে তারা চুল পরিমাণও সরবেন না, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনাও পদত্যাগ করবেন না।সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ মানে সংবিধানের চরম লঙ্ঘন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক আর কখনো ফিরবে না। আর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বললেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না।

বিভিন্ন স্তরের সরকারি চাকরিজীবী ভোটের আগে অঢেল সুবিধা-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৪ বছরে অঢেল সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন বিভিন্ন স্তরের চাকরিজীবীরা। বিশেষ করে গত দুটি (২০১৪ ও ২০১৮) নির্বাচনের আগে এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এগুলো দেওয়া হয়েছে।বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনি কাজে সরাসরি যুক্ত থাকেন প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শিক্ষকসহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তাদের সন্তুষ্ট রাখতেই মূলত এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা মনে করছেন-পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে নির্বাচন কিংবা অন্য কিছুর সম্পর্ক নেই। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে সরকারের উচিত ছিল তাদের বেতন-ভাতা আরও আগেই বৃদ্ধি করা।

আ.লীগ-বিএনপি মুখোমুখি, সংঘাতের শঙ্কা-যুগান্তর

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পালটাপালটি কর্মসূচি, হামলা-পালটাহামলায় গরম হয়ে উঠেছে রাজপথ। বাড়ছে সংঘাত-সহিংসতার শঙ্কা। মাঠের লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। দুই দলের নেতাকর্মীদের অসহিষ্ণুতা ও অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে বন্দরনগরীতে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

যুগান্তরের শিরোনাম-হাসপাতালে শয্যার জন্য ডেঙ্গু রোগীর হাহাকার

২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৮৯৬ জন, ১ মৃত্যু। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, এডিস মশাবাহী ডেঙ্গুর সংক্রমণ জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলছে। এখন ঢাকার বাইরে থেকেও রোগী আসছে। এ প্রেক্ষাপটে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপে শয্যার জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে। অসংখ্য রোগী অন্যের সঙ্গে বিছানা ভাগাভাগি করে হাসপাতালে ভর্তি থাকছেন। নির্ধারিত ওয়ার্ড ছাড়াও বিছানা না পেয়ে রোগীরা হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ঘুরে এমন উদ্বেগজনক চিত্র দেখা গেছে।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এ বছর প্রতি মাসে যত রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তা গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় শয্যা না থাকায় ডেঙ্গু রোগীর ভিড়ে অন্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।

তালাকে কেন নারীরা এগিয়ে? মানবজমিন

এখন সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে নারী ও পুরুষ উভয়ই চিন্তা করেন যে, আমার উপার্জনে তো কোনো সমস্যা নেই। তাহলে তার সঙ্গে কেন আমাকে থাকতে হবে। নিজের স্বার্থে বা প্রয়োজনে সামান্যতম বিচ্যুতি হলে সেই সম্পর্কের সংশোধন ছাড়াই সেটা বিচ্ছেদে রূপ নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে মানুষ ডিভোর্সকে উদ্‌যাপন করছে। দিন দিন এর সংখ্যা ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। অভাব-অনটনের পাশাপাশি এর অন্যতম প্রধান কারণ সোশ্যাল মিডিয়া। বর্তমান সময়ে এমন হয়েছে যে, পাশে ঘুমিয়ে থাকা মানুষটিকেও চিনছে না। সময় দিচ্ছে না। মানুষ ভুলেই যাচ্ছে তার পরিবার, সংসার ও পাশে থাকা মানুষের কথা। এ ছাড়াও একে-অপরকে সম্মান না দেয়া। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অভাব-অনটন, সন্দেহ, গোপন বিয়ে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, যৌতুক, মাদক সেবন, যৌন অক্ষমতা, উদাসীনতা ইত্যাদি। মানুষের রিয়েল লাইফ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার লাইফটা পার্সোনাল লাইফে খুব কমপ্লিকেশন করে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এ সকল ঘরে সন্তান থাকলে তারা অবহেলিত ভাবে বেড়ে উঠছে। সন্তানদের মধ্যে অসহায়ত্ব তৈরি হচ্ছে। 

Image Caption

মিমি সুলতানা। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন প্রেমিক সৈকত হাসানের সঙ্গে। বিয়ের পর দুই বছর ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এরপরই এলোমেলো হতে থাকে সব। স্বামীর সঙ্গে থাকেন ঢাকায়। কথা ছিল একে-অপরকে সারাজীবন আঁকড়ে থাকবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন রূপ নিয়েছে দুঃস্বপ্নে।

চার বছরের সংসারে বাজছে ভাঙনের সুর। এই দম্পতির মধ্যে তৈরি হয়েছে তিক্ততা। সিদ্ধান্ত নেন ডিভোর্সের। এই নারী সংসার ভাঙনের কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন, আর্থিক টানাপড়েন, ভুল বোঝাবুঝি, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সোশ্যাল মিডিয়া ও অতিরিক্ত ইন্টারনেটের ব্যবহার।

মিমি সুলতানা মানবজমিনকে বলেন, বিয়ের দুই বছর পর থেকে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। দুই পরিবার মিলেই আমাদের বিয়েটা হয়েছিল। বর্তমানে দুইজনই আমরা পড়াশোনা করছি। শ্বশুরবাড়িতে সবকিছু আছে কিন্তু তাদের সংসারে আর্থিক সংকট কাটে না। আমার শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। তিনি অসুস্থতার কারণে এখন বিশ্রামে থাকেন। আমার স্বামী খামখেয়ালিভাবে চলাচল করে। তারা দুই ভাই। সেও পড়াশোনা করে। এমন একটা পর্যায় চলে এসেছে যে জমানো টাকাও নেই, এদিকে তেমন কোনো বড় ইনকাম নেই। 

সংসারের বড় হওয়ায় এই জিনিসগুলো আমার স্বামীর একটা মানসিক সমস্যা তৈরি করে ফেলেছে। সে এখন আমাকেও সহ্য করতে পারছে না। সারাদিন শুধু বলে চলে যাও, তোমাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। কিছু নিয়ে আমি যদি নরমালি কথা বলি সেটাও তার পছন্দ হয় না। বর্তমানে আমাদের মধ্যে বোঝাবুঝিটা একদম নেই। সবসময় কথায় কথায় ভুল বোঝাবুঝিটা থেকে যায়। সে আমাকে বলছে ডিভোর্স দিতে। আমিও ফাইনালি ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। কাগজপত্র সব রেডি। দু’জনার যে যার মতো মোবাইল ফোন হাতে রাতের দীর্ঘ সময় কাটে। অর্থ সংকট ছাড়া এর পেছনে ইন্টারনেট, ফেসবুকও কম দায়ী নয়। দুইজনে একই বেডে শুয়ে আছি অথচ ফোন হাতে নিয়ে। কখনো ফেসবুক, না হয় ইউটিউব, না হয় কানের মধ্যে হেডফোন দিয়ে গেম খেলছি বা গান শুনছি। আমার মনে হয় ফোন, ফেসবুক এসব যদি না থাকতো তখন সব কষ্ট ভুলে সম্পর্কের জায়গাটা ওই মুহূর্তগুলোতে সুন্দর হতে পারতো।

শুধু মিমি সুলতানা নয়, এই রকম হাজার হাজার নারী-পুরুষ এখন এভাবে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হয়ে বুঝে বা না বুঝে তালাকের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে মোট ১৩ হাজার ২৮৮টি তালাকের আবেদন এসেছিল। এরমধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তালাকের আবেদন সংখ্যা ৭ হাজার ৬৯৮টি। পক্ষান্তরে উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫ হাজার ৫৯০টি তালাকের আবেদন পড়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে প্রায় সব আবেদনেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক কলহ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, যৌতুক, মাদক সেবন করে নির্যাতন, প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা, যৌন অক্ষমতা, সন্দেহ, উদাসীনতা, ব্যক্তিত্বের সংঘাতসহ নানা অভিযোগ। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশে তালাকের হার বেড়ে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৪টি হয়েছে। ২০২১ সালে এই হার ছিল প্রতি হাজারে ০ দশমিক ৭টি। এরমধ্যে গ্রামে তালাকের প্রবণতা বেশি বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৫টি আর শহরে হাজারে একটি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের এক তথ্যে দেখা গেছে, নারীরা তালাকের সংখ্যায় বেশি। সেই তুলনায় পুরুষরা বিচ্ছেদের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কম। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) হিসাবে দেখা গেছে, ২০১১ সাল থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ১২ বছরে করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ৫৮ হাজার ৩০টি তালাকের আবেদন পড়েছে। এরমধ্যে ৩৭ হাজার ৭৯২টি আবেদন করেছেন নারীরা। আর পুরুষরা করেছেন ১৮ হাজার ৬৬৪টি। অপর দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) গত চার বছরে তালাকের সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৪৮টি। ২০১৯ সালে মোট তালাক ৬ হাজার ৩৬০টি। 

২০২০ সালে মোট তালাক ৬ হাজার ৩৪৫টি। এরমধ্যে নারী কর্তৃক ৪ হাজার ৪২৮টি এবং পুরুষ কর্তৃক ১ হাজার ৯১৭টি। জানুয়ারিতে ৫২৮টি, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫২টি, মার্চে ৪৯২টি, মে মাসে ১১৩টি, জুন ৫৪১টি, জুলাই ৮৭৮টি, আগস্টে ৪৪৮টি, সেপ্টেম্বরে ৭৫৫টি, অক্টোবরে ৬৪২টি, নভেম্বরে ৬৫৪টি, ডিসেম্বরে ৮৪২টি। ২০২১ সালে মোট তালাকের সংখ্যা ৭ হাজার ২৪৫টি। এরমধ্যে নারী কর্তৃক ৫ হাজার ১৮৩টি এবং পুরুষ কর্তৃক ২ হাজার ৬২টি। জানুয়ারিতে ৫২০টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫২৫টি, মার্চে ৬৫৫টি, এপ্রিল ৬০২টি, মে মাসে ৩৬২টি, জুন ৮৬৬টি, জুলাই ২৯৪টি, আগস্টে ৭১২টি, সেপ্টেম্বর ৮১৪টি, অক্টোবরে ৩৬১টি, নভেম্বরে ৭৫৫টি, ডিসেম্বরে ৫৭৯টি। 

২০২২ সালে মোট তালাক ৭ হাজার ৬৯৮টি। এরমধ্যে নারী কর্র্তৃক ৫ হাজার ৩৮৩টি এবং পুরুষ কর্তৃক ২ হাজার ৩১৫টি। চলতি বছরে জানুয়ারিতে ৭০০টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫৩২টি, মার্চে ৬৫৩টি, এপ্রিলে ৪৮২টি, মে মাসে ৬৫১টি, জুন মাসে ৭০৭টি, জুলাই ৪২৭টি, আগস্টে ৮৩২টি, সেপ্টেম্বরে ৫৬৭টি, অক্টোবরে ৯৩৩টি, নভেম্বরে ৬৫৮টি, ডিসেম্বরে ৫৫৬টি। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত মোট তালাক ৩ হাজার ৫৩২টি। এরমধ্যে নারী কর্তৃক ২ হাজার ৬২২টি এবং পুরুষ কর্তৃক ৯১০টি। এ বছরে জানুয়ারিতে ৬৫০টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫৬৪টি, মার্চে ৪৭৬টি, এপ্রিলে ৪২৮টি, মে মাসে ৭০৬টি, জুনে ৭০৮টি। 

দুই সিটিতে নারীদের করা আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, ভরণ-পোষণ না দেয়া, স্বামীর সন্দেহবাতিক মনোভাব, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধকরণ, কাবিন না হওয়া, স্বামীর মাদকাসক্তি, পুরুষত্বহীনতা, নির্যাতন, যৌতুক, মানসিক পীড়ন, পরকীয়া, আর্থিক সমস্যা ও ব্যক্তিত্বের সংঘাতের কথা বলা হয়েছে। আর পুরুষরা পরকীয়া, বেপরোয়া জীবনযাপন, বদমেজাজ, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সন্তান না হওয়া, অবাধ্য হওয়া, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবাধ বিচরণ করা, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী না চলাসহ বিভিন্ন কারণের কথা উল্লেখ করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, চলতি সময়ে মানুষের মধ্যে ছাড় দেয়ার মানসিকতা এবং সামান্য ভুল-ত্রুটি এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা কম। তাদের কাছে নিজের বিষয়টি কতোটুকু গুরুত্ব পেলো বা পেলো না সেটি বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। 

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি যখন নতুন মাত্রা যোগ করে তখন বিচ্ছেদের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। বর্তমান সময়ে পরস্পর সন্দেহ, কার সঙ্গে ফেসবুকিং করছে, কার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করছে এই বিষয়গুলোর কারণে বিচ্ছেদের পরিমাণ বাড়ছে। তিনি বলেন, আগেও আমাদের পরিবারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল বা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ছিল। কিন্তু দিন শেষে তারা হিসাব করতেন যে, আমি তাকে ছেড়ে যাবো না বা আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করবো। দুই পরিবার মিলে ভুল বোঝাবুঝি মীমাংসা করে দিতেন। কিন্তু এখনকার বাস্তবতা ভিন্ন। 

এখন সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে নারী ও পুরুষ উভয়ই চিন্তা করেন যে, আমার উপার্জনে তো কোনো সমস্যা নেই। তাহলে তার সঙ্গে কেন আমাকে থাকতে হবে। তিনি বলেন, নিজের স্বার্থে বা প্রয়োজনে সামান্যতম বিচ্যুতি হলে সেই সম্পর্কের সংশোধন ছাড়াই সেটা বিচ্ছেদে রূপ নিচ্ছে। 

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এডভোকেট সরকার মাহমুদ ইলতুৎমিস বলেন, গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৪ থেকে ৫ জন ডিভোর্সের ব্যাপারে আসে। রিসেন্টলি এক নারীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি উচ্চ শিক্ষিত এবং চাকরিজীবী। সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে চায়। আমি প্রথমে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে, কোনোভাবে সমাধান হয় নাকি। শুধু তাকে নয়, এমনকি তার সন্তানকেও সহ্য করতে পারছে না। এ সকল ব্যাপারে একজন মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। এটির মাধ্যমে কিন্তু অনেকটা সমাধান করা সম্ভব। 

চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিলে তখন এই সকল ব্যক্তিগুলো মনে করেন আসলে সবাই আমাকে পাগল ভাববে বা কি বলবে। তিনি বলেন, অধিকাংশ নারী ক্লায়েন্টগুলোর অভিযোগ তাদের স্বামী সময় দেয় না। এদিকে যদি চাকরিজীবী নারী হয় তাদের ক্ষেত্রে পুরুষের অভিযোগগুলো নারীরা সংসারে সময় দিচ্ছে না। আরেকটি সমস্যা হলো আগে সময় কাটানোর ব্যাপারে পারিবারিকভাবে অনেক বেশি নির্ভর থাকতো মানুষ। কিন্তু বর্তমানে মানুষ উদাসীন হয়ে গেছে। আশপাশের ব্যাপারগুলো আর টানে না মানুষকে। 

ডিভোর্সের ক্ষেত্রে এডভোকেটদের কিছু রুলস থাকা প্রয়োজন। বর্তমানে ডিভোর্সের অন্যতম প্রধান কারণ সোশ্যাল মিডিয়া। এর কারণে পাশে ঘুমিয়ে থাকা মানুষটিকে চিনছে না, সময় দিচ্ছে না। ফেসবুকে নানা ধরনের মানুষকে সময় দিচ্ছে, কথা বলছে। নিজ ঘরে অশান্তি বাধিয়ে রেখে সেখানে হাজারটা মানুষের সঙ্গে হাজার রকমের কথা বলছে। একটা পর্যায়ে মানুষ ভুলেই যাচ্ছে তার পরিবার, সংসার ও পাশে থাকা মানুষের কথা।

 এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বিজেপিকে দেশ থেকে উৎখাতের ডাক, একুশের মঞ্চ থেকে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে শান মমতার-সংবাদ প্রতিদিন

একুশের মঞ্চ থেকে শান ‘ইন্ডিয়া’ জোটে। ‘চেয়ার নয়, শান্তি চাই’, দেশ থেকে বিজেপিকে উৎখাতের ডাক মমতার। উদ্বেগ প্রকাশ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়েও।একুশের সমাবেশে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব মমতা।

বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা তৃণমূলের, শাহ-নাড্ডার কাছে নালিশ সুকান্তর-সংবাদ প্রতিদিন

ব্লক স্তরে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তা নিয়ে অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডার কাছে নালিশ জানাবে বঙ্গ বিজেপি। শুক্রবারই দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নাড্ডা ব্যস্ত থাকায় দু’বার চেষ্টা করেও দেখা করতে পারেননি সুকান্ত।ধর্মতলার সমাবেশ শেষ হতেই দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুকান্ত মজুমদার এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপি সভাপতি বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের ন্যক্কারজনক ভূমিকার প্রতিবাদে আমরা বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছিলাম। তার পালটা বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল প্রমাণ করে দিল, আদতে বিডিওরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ব্লক পর্যায়ের নেতা।”#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২২

ট্যাগ