ঋণের টাকায় ‘রোল মডেল’, প্রশ্নবিদ্ধ ঋণ, ক্ষতিকর প্রকল্প
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৪ জুলাই সোমবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- কেএনএফের সঙ্গে নুরের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে: র্যাব-প্রথম আলো
- তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কারিগরি দুর্বলতা ও দক্ষ লোকের অভাবে নাগরিকদের তথ্য ফাঁস-ইত্তেফাক
- নেতাকর্মীরা বিসিএস দেয় কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় টিকতে পারে না: ওবায়দুল কাদের -যুগান্তর
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা, ডেঙ্গু মহামারী রূপ নিয়েছে-মানবজমিন
- ঢাবির রোকেয়া হলে রাতে ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগ -ডেইলি স্টার বাংলা
কোলকাতার শিরোনাম:
- অভিষেকের বিদেশযাত্রা আটকানো উচিত হবে না, ইডিকে বলল সুপ্রিম কোর্ট, রুজিরাকে বাধা নিয়েও প্রশ্ন -আনন্দবাজার পত্রিকা
- মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি সরকার, বিরোধী চাপের মুখে লোকসভায় জানালেন অমিত শাহ -সংবাদ প্রতিদিন
- মণিপুর নিয়ে রাজ্যজুড়ে ধিক্কার মিছিল -গণশক্তি
এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
কেএনএফের সঙ্গে নুরের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে: র্যাব-প্রথম আলো
ণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হকের সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কেএনএফের ভেরিফায়েড পেজে থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (নুরুল) সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা কেএনএফের সঙ্গে যোগাযোগের আলামত পেয়েছি। এই যে যোগাযোগ রয়েছে কি না, কেএনএফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, এটা নিয়ে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে কী যোগাযোগ রয়েছে, সেটা তদন্ত করে জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক।’ তিনি বলেন, এই সংগঠন সরকারের তৈরি। এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে অন্য কারও ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কারিগরি দুর্বলতা ও দক্ষ লোকের অভাবে নাগরিকদের তথ্য ফাঁস-ইত্তেফাক
বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের ৫ কোটিরও বেশি নাগরিকের তথ্য ফাঁসের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের কারিগরি দুর্বলতা এবং যথাযথ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবল না থাকায় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশিত হওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের কারিগরি দুর্বলতা মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।সম্প্রতি বাংলাদেশের ৫ কোটিরও বেশি নাগরিকের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে ঢুকলেই পাওয়া যায়। অভিযোগ উঠেছে, গুগলে সার্চ করলেই যে কেউ ওয়েবসাইটিতে ঢুকে ৫ কোটি নাগরিকের নাম, জন্মতারিখ ও এনআইডি নম্বর দেখতে পারছেন।
২৭ জুলাই সংঘাত হলে দায় সরকারের: মির্জা ফখরুল-যুগান্তর
২৭ জুলাই বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুবলীগ কর্মসূচি দিয়ে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৭ জুলাই কোনো সংঘাত-সংঘর্ষ হলে এর দায় ক্ষমতাসীন দল ও সরকারকে নিতে হবে হুশিয়ারি করেছেন তিনি। মির্জা ফখরুল সরকারি দলকে তাদের সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের আহ্বানও জানান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা, ডেঙ্গু মহামারী রূপ নিয়েছে-মানবজমিন
করোনার চোখ রাঙানির পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু এবার আরও এক ভয়াবহ বার্তা দিয়েছে- ডেঙ্গু ফিরছে মহামারী রূপে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস আজেপ্তাই জাতীয় মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে দ্রুত। ফলে, গোটা পৃথিবীতেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। হু’র হিসেব অনুযায়ী গতবছর ১২৯টি দেশে মোট প্রায় ৫২ লক্ষ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল।
ঋণের টাকায় ‘রোল মডেল’-প্রথম আলো
ঋণের টাকায় বিলাসবহুল রোল মডেল তৈরি হয়েছিল। চীন, ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে বিশ্বের শীর্ষ বড়লোক বৃদ্ধির দেশে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন কয়েক প্রজন্ম ধরে এই রোল মডেলের কিস্তিটা শোধ করবে কে? কম খাওয়া প্রবাসী শ্রমিক আর লোডশেডিংয়ে বিধ্বস্ত জনপদ?
২০১০ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ‘স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’ বাংলাদেশকে বিনিয়োগের ‘উপযোগী’ হিসেবে ‘রেটিং’ দেওয়া শুরু করে। যেহেতু প্রথমবার রেটিং পায় বাংলাদেশ, মিডিয়ার আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এরপর ২০১২ সালে বহুজাতিক বিনিয়োগ কোম্পানি গোল্ডম্যান স্যাকস তার ‘নেক্সট ইলেভেন’ তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় বাংলাদেশকে বলা হলো ‘বিশ্বের উঠতি অর্থনীতির একটি’। এর পরপরই বিশ্বের শীর্ষ ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক জেপি মরগ্যানের ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভে’র তালিকায়ও জায়গা পায় বাংলাদেশ। এরপর ২০১৭ সালে আরেকটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্স ঘোষণা দিল, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৮তম বড় অর্থনীতি হবে। আর সেটাও হবে নাকি অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডসের মতো শক্তিশালী অর্থনীতিকে পেছনে ফেলে!
গার্মেন্টসের আয়, প্রবাসী আয়, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, একের পর এক চমক লাগানো মেগা প্রকল্প হচ্ছে, মিডিয়া উচ্ছ্বসিত, অর্থনীতিবিদেরাও খুশি। অথচ কেউ জিজ্ঞেস করে না ‘নেক্সট ইলেভেন’, ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’ এগুলো কী জিনিস? এগুলো আসলে কার কাজে আসবে? ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির মানে কী? অর্থনীতি ‘২৮তম’ হলে গরিব মানুষেরা ঠিক কী সুবিধা পায়? মোটা চালের দাম কমে? আশুলিয়ায় ঘরভাড়া কমে? বাচ্চার দুধের খরচ দেয় সরকার? আর এই রেটিং এজেন্সিগুলো আসলে কারা? একেকটি অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পেছনে তাদের ভূমিকা কী? ভালো রেটিংয়ের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনমান বৃদ্ধির আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে?
রেটিং দেওয়া হয় মূলত বিনিয়োগকারীদের জন্য। বিদেশি ব্যাংক, বিদেশি কোম্পানি, বিপুল পরিমাণ অলস পুঁজি নিয়ে বসে আছে। তাদের দরকার নতুন দেশ, নতুন মার্কেট। বিদেশি বিনিয়োগকারী তো দাতব্য প্রতিষ্ঠান নয়। স্থানীয় মানুষের স্বার্থ রক্ষা হলো কি না, সেটা দেখা তার দায়িত্ব নয়। রেটিং ভালো মানে ব্যবসার ঝুঁকি কম। মানে সুদে–আসলে টাকা ফেরত আসবে। এজেন্সিগুলোর ‘রেটিং’ দেখেই ব্যাংক ঋণ দেয়, কোম্পানি বিনিয়োগ করে।
কিন্তু ভালো ‘রেটিং’ পেলেই কি উন্নয়ন হয়ে গেল? জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইস্যুগুলোকে আড়ালে রেখে বিদেশিদের রেটিং বা ব্র্যান্ডিং নিয়ে মাতামাতি শেষ পর্যন্ত কী ফল দিল? বেশি বেশি বিদেশি ঋণ নিয়ে ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশের অবস্থাটা কী দাঁড়াল? অতিরিক্ত ঋণনির্ভর মেগা প্রকল্পগুলোয় অর্থনীতির অবস্থা ভালো হয়েছে, না খারাপ হয়েছে? রূপপুর, মাতারবাড়ী, পায়রা বা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কি জনগণের ‘টার্মস’ মেনে হয়েছে? এখন ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে জনগণকে পিষ্ট করা কেন?
প্রশ্নবিদ্ধ ঋণ, ক্ষতিকর প্রকল্প
একের পর এক প্রশ্নবিদ্ধ মেগা প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে, প্রতিটা মেগা প্রকল্পই একেকটা ঋণের ফাঁদ, অথচ আমাদের অর্থনীতিবিদেরা সরকারি লোকদের মতোই বলে গেছেন, আমাদের ঋণ-জিডিপির অনুপাত অন্যান্য দেশের তুলনায় কম, তাই চিন্তা নেই। অথচ একের পর এক মেগা প্রকল্পের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্লান্ত–বিধ্বস্ত প্রবাসী শ্রমিকের ঘাড়েই যে চড়তে হবে, সেই সতর্কবার্তা কি ছিল? মেগা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যে বেশির ভাগই অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর, সেই বিশ্লেষণ কি ছিল?
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি সরকার, বিরোধী চাপের মুখে লোকসভায় জানালেন অমিত শাহ-সংবাদ প্রতিদিন
মণিপুর ইস্যুতে উত্তাল গোটা দেশ। জাতিদাঙ্গার জেরে ক্রমেই পরিস্থিতি করুণ হচ্ছে পূর্বের রাজ্যটির। প্রতিদিনই উঠে আসছে খুন, গণধর্ষণের ঘটনা। বিরোধীরা এ নিয়ে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে মোদি সরকারের উপর। আর বিরোধীদের এই লাগাতার চাপের জেরে অবশেষে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানিয়ে দিলেন, মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি সরকার।
অভিষেকের বিদেশযাত্রা আটকানো উচিত হবে না, ইডিকে বলল সুপ্রিম কোর্ট, রুজিরাকে বাধা নিয়েও প্রশ্ন -আনন্দবাজার পত্রিকা
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশযাত্রা আটকানো উচিত হবে না বলে সোমবার ইডিকে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। এর পাশাপাশি অভিষেক-পত্নী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে কেন, তা ইডির কাছে জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। রুজিরার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি হয়েছিল কেন, তা-ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী শুক্রবার ইডি এই বিষয়ে আদালতকে জানাবে।
বিনা কারণে বিদেশে যেতে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি— এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা। বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রুজিরার আইনজীবী কপিল।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২৪