সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ ১১:০৪ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা! পত্রপত্রিকার পাতার বিশ্লেষণমূলক অনুষ্ঠান কথাবার্তার আজকের আসরে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। ১০ সেপ্টেম্বর (রোববার) ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিকগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন খবরকে শীর্ষ শিরোনাম করা হয়েছে। অন্যদিকে কোলকাতার বাংলা দৈনিকগুলোতে জি-২০ সংক্রান্ত খবর আজও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। প্রথমেই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দুটি খবরের বিশ্লেষণ জানব সহকর্মী সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে।

ঢাকার পত্রপত্রিকার শিরোনাম:

  • আর্জেন্টাইনদের হৃদয় জয় করেছে বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রীকে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট- দৈনিক কালেরকণ্ঠ
  • ইনজেক্টেবল স্যালাইনের সংকট, বিপাকে রোগী- যুগান্তর
  • এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ- মানবজমিন
  • বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার আলাপচারিতা-সমালোচনাকারীদের মুখে চুনকালি পড়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী- দৈনিক আমাদের সময়
  • বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার, কে করবে ব্যর্থতার জবাবদিহি-প্রথম আলো
  • সবার জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন : প্রধানমন্ত্রী-নয়াদিগন্ত

কোলকাতার পত্রপত্রিকার শিরোনাম

  •  জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে ভারী বৃষ্টি, জলমগ্ন প্রগতি ময়দান-সহ বহু এলাকা- আজকাল
  • ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক’, মোদির বাসভবনের বৈঠকে বললেন শেখ হাসিনা- সংবাদ প্রতিদিন
  • জি-২০ বৈঠক থেকেই রাষ্ট্রনেতাদের ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’, এর মন্ত্র শোনালেন মোদি- পূবের কলম
  • মধ্যরাতের গোপনীয় চিঠি রাজ্যপালের, একটি পাবেন দিদি, অন্যটি মোদী! মুখবন্ধ খামে কী বার্তা দিলেন বোস- আনন্দবাজার

কথাবার্তার প্রশ্ন (১০ সেপ্টেম্বর)

 ১. বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এর কারণ কী বলে মনে করেন আপনি?

২. তেহরানে অনুষ্ঠিত পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে সৌদি প্রতিনিধিদল। কীভাবে দেখছেন বিষয়টিকে?

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর বিস্তারিত

বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার, কে করবে ব্যর্থতার জবাবদিহি-প্রথম আলো 

দেশের মূল্যস্ফীতি তাপমাত্রার মতো। কাগজে-কলমে যতটা, অনুভূত হয় আরও বেশি। গড় মূল্যস্ফীতি এখন ৯ শতাংশ হলেও যাঁদের আয় সীমিত, তাঁদের কাছে মূল্যস্ফীতির হার হবে দ্বিগুণেরও বেশি। অথচ সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল তা ৬ শতাংশের নিচে রাখা হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এই ব্যর্থতার দায়ভার সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরেই বর্তায়। জবাবদিহি কেন্দ্রীয় ব্যাংককেই করতে হবে। সরকার ও সাধারণ মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জবাবদিহির কিন্তু অসংখ্য উদাহরণ আছে। কেননা নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতি একদিকে যেমন একটি সরকারকে অজনপ্রিয় করে, অন্যদিকে সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ থাকে চরম কষ্টে। ফলে মানুষের জানার অধিকার আছে, কেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা গেল না? আর সাধারণ মানুষ যাতে জানতে পারে, সে কারণেই বিভিন্ন দেশ আইন করে সেই ব্যবস্থাও রেখেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে• ভারতে পরপর তিন প্রান্তিকে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লিখিত জবাব দিতে হয়• ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর ও অর্থমন্ত্রীর মধ্যে খোলা চিঠি বিনিময় করতে হয়• ফিলিপাইনে প্রেসিডেন্ট ও দেশের মানুষের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখতে হয় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই জবাবদিহির একটা নির্দিষ্ট কাঠামো আছে। যেমন ভারতে আরবিআই অ্যাক্ট ৪৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক ইন্ডিয়া (আরবিআই) যদি পরপর তিন প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত প্রতিবেদন দিতে হয়। সেই প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কর্মপরিকল্পনা এবং কত দিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, তার সম্ভাব্য সময়সীমাও লিখে দিতে হয়। ব্যর্থ হওয়ার ঠিক এক মাসের মধ্যে আরবিআই গভর্নর এই চিঠি লিখতে বাধ্য।

ইনজেক্টেবল স্যালাইনের সংকট, বিপাকে রোগী- যুগান্তর

যশোরে ইনজেক্টেবল স্যালাইন সরবরাহে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দেড় মাস ধরে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য স্যালাইন সরবরাহ নিশ্চিত করা হলেও অন্য রোগীরা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। খোলাবাজারে তাদের স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। একই সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের রোগীরাও ছুটছেন বাইরের ফার্মেসিতে। বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সংকট প্রকট হয়েছে।

ফার্মেসি সংশ্লিষ্টদের দাবি, স্যালাইনের চাহিদার ১০ শতাংশ সরবরাহ হচ্ছে না। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করছেন। সংকটের অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা দুই থেকে তিন গুণ দামে স্যালাইন বিক্রি করছে। স্বজনরা জানান, দোকানের পর দোকান ঘুরেও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। চরম ভোগান্তির শিকার মুমূর্ষু ও সার্জারির রোগীরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। যশোর শহরের জেনারেল হাসপাতাল মোড়ে বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, তার স্ত্রী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। শুক্রবার বিকাল থেকে স্যালাইন খুঁজছি। শহরের ওষুধের দোকানগুলো তন্নতন্ন করে খুঁজেছি। কোথাও পাইনি। শনিবার দুপুরে হাসপাতাল মোড়ের একটি দোকানে পেয়েছি। কিছু আগেই তারা সাপ্লাই পেয়েছে।

আর্জেন্টাইনদের হৃদয় জয় করেছে বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রীকে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট- দৈনিক কালেরকণ্ঠবিশ্বকাপে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলকে সমর্থন করে বাংলাদেশিরা আর্জেন্টাইন জনগণের হৃদয় জয় করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। গতকাল শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় দূতাবাস খোলার জন্য আর্জেন্টিনাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী আর্জেন্টিনার সঙ্গে খেলাধুলা, কৃষি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো খাতগুলোতে সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে তাঁরা শিল্প, ব্যবসা ও বাণিজ্য এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সহযোগিতা আরো জোরদারে সম্মত হয়েছেন।

অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেন।

এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের অভিযোগ- মানবজমিন

ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মারধরের শিকার দুই নেতা হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ছাত্রলীগের নেতাদের দাবি, এডিসি হারুন শনিবার বিকেলে ৩১তম বিসিএসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তার স্বামী পরিচয় দেয়া ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের এক কর্মকর্তা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতাকে নিয়ে সেখানে যান। একপর্যায়ে সেখানে এডিসি হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ভিড় করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এডিসি হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার আলাপচারিতা-সমালোচনাকারীদের মুখে চুনকালি পড়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী- দৈনিক আমাদের সময় 

জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার আলাপচারিতা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনাকারীদের মুখে চুনকালি পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল শনিবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এর প্রেক্ষিতেই এ মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরও মজবুদ হয়েছে। জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনা অন্তত ১৫ মিনিট কথা বলেন। এ সময় আগামী শীতে তাকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।

দু্ই নেতার আলাপে বাংলাদেশের রাজনীতি কিংবা মানবাধিকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

বার জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন : প্রধানমন্ত্রী-নয়াদিগন্ত

সবার জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব পরিবারের সমান সদস্য হিসেবে আমাদের অবশ্যই মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং সবার জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার সংকল্প করতে হবে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ভারতের নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে ভারত মন্ডপম কনভেনশন সেন্টারে জি-২০ লিডারস সামিট ২০২৩-এ এক অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এই প্রসঙ্গে তিনি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আগামী দিনে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে জি-২০ নেতাদের কাছে পাঁচটি সুপারিশ করেছেন।

সুপারিশগুলো হলো :
প্রথম- টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়ন জি-২০ -সহ সকল বহুপক্ষীয় উদ্যোগের আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকা উচিৎ।

দ্বিতীয়- স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য জি-২০ এর উচিৎ শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখা এবং একতরফা ট্যারিফ অগ্রাধিকার এবং ট্রিপস ছাড়ের সম্প্রসারণকে সমর্থন ও সহজতর করা, যাতে নির্বিঘ্ন ও টেকসই রূপান্তর নিশ্চিত করা যায়।

তৃতীয়- কৃষিপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মসৃণ, সময়োপযোগী ও প্রত্যাশিত সরবরাহ নিশ্চিত করতে জি-২০ ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির বাজার উন্মুক্ত রেখে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে।

চতুর্থ- শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে নারীকে (বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক) সমান মনোযোগ দিতে হবে।

পঞ্চম- বিশ্বব্যাপী মানব উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য অংশীদার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সহায়তায় দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিদেশীয় সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতিকে বিবেচনায় রেখে একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার সময় এসেছে। আমি বিশ্বাস করি জি-২০ উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হয়েছে এবং খাদ্য, জ্বালানি ও সারের সঙ্কট সারা বিশ্বের মানুষের জীবনযাপনের ওপর অসহনীয় অবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা এক পৃথিবী, এক পরিবারের কথা বলি; আমরা কি তা প্রমাণের মতো কিছু করছি? প্রতি রাতে ৮০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বা বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ, না খেয়ে ঘুমায়। যেখানে, বিশ্ব প্রতি বছর সামরিক খাতে ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, সেখানে মাত্র ২৬ ঘণ্টার জন্য সামরিক ব্যয় হয় ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে সবচেয়ে নাজুক সম্প্রদায়ের খাবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’এছাড়াও তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বছরে নষ্ট হওয়া খাদ্য দিয়ে ২ বিলিয়ন মানুষকে খাওয়ানো যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে ধনী দেশগুলো বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মতো দরিদ্রদের জন্য সাহায্য কমিয়ে দিচ্ছে।’

বাংলাদেশের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে গণতন্ত্র ও জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দারিদ্র্য ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে, চরম দারিদ্র্য ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়ন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা এসডিজি বাস্তবায়ন ও অর্জনের জন্য একটি 'হোল অব সোসাইটি' (একটি নির্দিষ্ট দেশ বা এলাকায় বসবাসকারী মানুষের সমগ্র গোষ্ঠী) পদ্ধতি গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ ২০২১ সালে এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার পেয়েছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। শিক্ষার হার ২০০৬ সালের ৪৫ শতাংশ থেকে গত দেড় দশকে ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৯৮ শতাংশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে, যেখানে গড় আয়ু ২০০৬ সালে ৫৯ বছর থেকে এখন ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। 

 জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে ভারী বৃষ্টি, জলমগ্ন প্রগতি ময়দান-সহ বহু এলাকা- আজকাল 

দিল্লিতে মনোরম আবহাওয়া থাকলেও জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বাড়ল বিপত্তি। টানা বৃষ্টিতে জল জমল প্রগতি ময়দান-সহ একাধিক এলাকায়। এই প্রগতি ময়দান এলাকাতেই জি-২০ আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই রাস্তাতেই যাতায়াত করছেন জি-২০-র রাষ্ট্র নেতারা। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বড়সড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন প্রশাসন। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে দিল্লিতে। যা রবিবার সকালেও অব্যাহত। সফদরজং, বিমানবন্দর এলাকা, রাজঘাট, বসন্ত কুঞ্জ, মুনিরকা, নারেলা-সহ বেশ কিছু জায়গায় গতকাল রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। রবিবার সকালে ভারী বৃষ্টির মাঝেই অক্ষরধাম মন্দির দর্শন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। এরপর রাজঘাটে গান্ধীজির সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রনেতারা। 

মৌসম ভবন সূত্রে খবর, রবিবারেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি থেকে ভারী হতে পারে দিল্লিতে। বৃষ্টির জেরে এক ধাক্কায় কমেছে তাপমাত্রার পারদ। রবিবার দিল্লিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জি-২০ বৈঠক থেকেই রাষ্ট্রনেতাদের ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’, এর মন্ত্র শোনালেন মোদি- পূবের কলম  

জি-২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মোদির স্বাগত বক্তব্যের শুরুতেই মরক্কোর ভূমিকম্পের ঘটনায় হতাহতদের প্রতি শোক জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘আমরা এই কঠিন সময়ে মরক্কোর পাশে আছি।’ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জি-২০-এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রধানকে তার আসন গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে ৬০টির বেশি শহরে ২০০টির বেশি বৈঠক হয়েছে জি-২০ নিয়ে। ভারতের প্রস্তাব ছিল আফ্রিকান ইউনিয়নকে যাতে জি-২০ এর সদস্যপদ দেওয়া হয়। পরে সবার সমর্থন নিয়ে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অধিবেশনে আসন গ্রহণ করেন। মোদির বক্তৃতায় সাম্প্রতিককালের চিত্র সহ করোনা মোকাবিলার প্রসঙ্গ ঠাঁই পায়। মোদি বলেন, এটা উপযুক্ত সময়।
দীর্ঘদিনের পুরনো চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবিলা করতে হবে আমাদের। বিশ্বে মানবতা এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে নিজেদের সমস্ত দায়িত্বগুলি পালন করতে হবে। করোনা অতিমারির পর বিশ্বজুড়ে একটি বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছিল। যুদ্ধ সেই পরিস্থিতি সেই সংকটকে আরও বাড়িতে তোলে। যদি আমরা করোনাকে হারাতে পারি, তাহলে এই অবিশ্বাসের ছায়াকেও আমরা দূর করতে পারব। জি-২০ বৈঠক থেকে মোদির আহবান বিশ্বাস ও ভরসা ফেরানোর কাজ আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। মোদির গলায় শোনা যায়, ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস’-এর মন্ত্র।

ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক’, মোদির বাসভবনের বৈঠকে বললেন শেখ হাসিনা- সংবাদ প্রতিদিন

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে (G20 Summit) রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আহূত নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও (Sheikh Hasina)। আর এদিনই প্রধানমন্ত্রী মোদির বাসভবনে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক করেন তিনি। কী কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের? জানা যাচ্ছে, হাসিনা মোদিকে বলেছেন, চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একান্তই বাণিজ্যিক। কিন্তু ভারতের সঙ্গে ‘রক্তের সম্পর্ক’। 

জের বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায় মোদিকে। এরপর তাঁদের মধ্যে কথা হয় দু’জনের। সামনেই বাংলাদেশের নির্বাচন। তার আগে হওয়া বৈঠকে হাসিনা মোদিকে তাঁদের দেশের নির্বাচনে মার্কিন চাপের প্রভাব নিয়ে কথা বলেন। সেই সঙ্গেই ওঠে চিনের প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, চিনের সঙ্গে তাঁদের দেশের সম্পর্ক মূলত আর্থিক। অর্থাৎ সেই সম্পর্ক কূটনৈতিক শৈত্যে ভরা। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটা আলাদা। তা ‘রক্তের সম্পর্ক’।  এদিকে এদিন হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও (Mamata Banerjee)। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ ও সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। শনিবার রাতে রাজধানীর ভারত মণ্ডপমে বিশ্বের তাবড় নেতাদের সঙ্গে নৈশভোজে হাজির ছিলেন মমতা-সহ ইন্ডিয়া জোটের একাধিক মুখ্যমন্ত্রীও। মমতাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই টেবিলে বসেছিলেন অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথও। তাঁদের সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। 

মধ্যরাতের গোপনীয় চিঠি রাজ্যপালের, একটি পাবেন দিদি, অন্যটি মোদী! মুখবন্ধ খামে কী বার্তা দিলেন বোস- আনন্দবাজার 

‘অ্যাকশন’ দেখার জন্য মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই ‘অ্যাকশন’ কি তিনি নিলেন? কী সেই ‘অ্যাকশন’? তা নিয়ে রহস্য এবং জল্পনা তৈরি হল। মধ্যরাতের কিছু আগেই শনিবার রাত ১১টা ৪২ মিনিটে রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল একটি বার্তা পাঠিয়েছেন নবান্নে। সেই বার্তা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও। মুখবন্ধ খামে গোপনীয় বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতে কী রয়েছে তার কোনও ইঙ্গিতও দেয়নি রাজভবন। সম্প্রতি যাদবপুর-সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদলের জন্য মধ্যরাতকেই বেছে নিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। এ নিয়ে শাসক তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের পক্ষে প্রশ্নও তোলা হয়। রাজ্যপাল কেন রাতেই বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শনিবারও ‘বড়’ সিদ্ধান্ত জানানোর ইঙ্গিত দিয়ে মধ্যরাতের কথা বলেছিলেন বোস। শনিবার সকালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, ‘‘আজ মধ্যরাতের জন্য অপেক্ষা করুন। অ্যাকশন কাকে বলে দেখতে পাবেন।’’ এর পর থেকেই অপেক্ষা ছিল, কী সিদ্ধান্ত জানাতে চলেছেন তিনি? শনিবার মুখবন্ধ খামে কী লিখে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে বোস পাঠিয়েছেন তা নিয়ে মুখে কুলুপ রাজভবনের। ফলে আপাতত রাজভবন, রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কিছু না জানানো পর্যন্ত জল্পনাই ভরসা। তবে এটা ঠিক যে, রাজ্যপাল এমন কিছুই জানিয়েছেন যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় উঠতে পারে। সেই কারণেই এত গোপনীয়তা।# 

ট্যাগ