অক্টোবর ১৬, ২০২৩ ১৫:৩৫ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৬ অক্টোবর সোমবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • গাজায় কেয়ামতের মতো যেসব দৃশ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি-প্রথম আলো
  • গাজার হাসপাতালগুলোতে শুধুই হাহাকার আর আর্তনাদ-ইত্তেফাক
  • যুগান্তরকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত কাঁদছে গাজা, ওদের কান্নার জবাব দিন-যুগান্তর
  • আদালত থেকে লোহার খাঁচা অপসারণ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ-ডেইলি নয়া দিগন্ত
  • ইসরাইলের মতো ফিলিস্তিনেরও রাষ্ট্র গঠনের অধিকার আছে: চীনা রাষ্ট্রদূত-ডেইলি স্টার বাংলা
  • হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলা-ছাত্রলীগ-যুবলীগের অজ্ঞাত ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা–মানবজমিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • ‘ভারতে থাকতে হলে ভারত মাতা কি জয় বলতেই হবে’, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক-সংবাদ প্রতিদিন
  • পিটিয়ে খুন ২পরিযায়ীর দেহ আনতে পরিবার গেল গুজরাটে-গণশক্তি

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

আজও বাংলাদেশ ভারতসহ বিশ্ব মিডিয়ায় প্রধান খবর-ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ। প্রথম আলোর মতামত কলামের শিরোনাম এরকম-গাজায় কেয়ামতের মতো যেসব দৃশ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিস্তারিত কলামে লেখা হয়েছে, আমরা গাজায় যে বিপর্যয় ঘটতে দেখছি, তা গণহত্যার দিকে মোড় নিচ্ছে। এটা কোনো ‘আক্রমণ’ নয়। দখল নয়। কোনো যুদ্ধ নয়। পুরোদস্তুর গণহত্যা। গাজায় কেয়ামতের মতো যেসব দৃশ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা দখলদার নিষ্ঠুর সেনাবাহিনীর আসল উদ্দেশ্য কী, তার প্রমাণ। তারা আগেই বিপর্যস্ত এই একটুকরা জমির দখল চায়। এ জন্য নির্বিচারে অসহায়, বিপর্যস্ত শিশু, নারী ও পুরুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।

গাজায় ইসরাইলের বর্বরোচিত শিশু হত্যাকাণ্ড

দশকের পর দশক পশ্চিমা দেশগুলোর সম্মতি ও অনুপ্রেরণায় ইসরায়েল সরকার এবং তাদের উন্মত্ত সহযোগী বসতি স্থাপনকারীরা একটু একটু করে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল। এই নির্মম স্বভাবের মিত্রের প্রতি সংহতি জানিয়ে পশ্চিমারা তাদের পর্যটনস্থলগুলো নীল-সাদা অথবা স্টার অব ডেভিডে সজ্জিত করেছে।

এগিয়ে যাও, কাপুরুষ আর তাদের দোসরেরা। পৃথিবীকে তোমাদের প্রকৃত রং-রূপ দেখাও। আমরা তোমাদের মনে রাখব। ভুল করবেন না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর জাতিবিদ্বেষী মন্ত্রিসভার সদস্যরা বহুদিন ধরেই ‘চলো ফিলিস্তিনিদের প্রাণঘাতী সহিংসতার মজা দেখাই’, এই পথ ছেড়ে গাজাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে চাইছিলেন।

এই দানবীয় পরিকল্পনা নেতানিয়াহুর। তাঁর মতো ঘৃণিত মানুষই পারেন পৃথিবীর বুক থেকে গাজাকে মুছে দিয়ে গাজা শেষ করা। যে কেউ যেকোনো জায়গা, যেকোনো ফোরামে যদি এই কথা অস্বীকার করেন, তাহলে বলতে হবে তিনি মিথ্যাবাদী, অন্ধ অথবা দুই-ই। এটা ন্যায়সংগত কোনো জবাব বা প্রতিশোধ নয়, যাঁরা কখনোই ফিলিস্তিনিরা যে অন্তহীন দুর্দশা দেখেননি বা গ্রাহ্য করেননি, আমি আবারও সেই সব সেনাসদস্যের উদ্দেশে বলতে চাই, এটা গণহত্যা।

কূটনীতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের সমস্যা সমাধান নিয়ে তথাকথিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে তাগিদ, তার বাইরে আসল ঘটনা হলো, এই বর্বরতা একটা শেষের দিকে এগোচ্ছে। গাজার প্রতিটা ইঞ্চির মতো গাজাবাসীকে ও তাঁদের স্মৃতি ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হলো এবারকার উদ্দেশ্য।

আর ইত্তেফাক লিখেছে, গাজার হাসপাতালগুলোতে শুধুই হাহাকার আর আর্তনাদ। এ খবরে লেখা হয়েছে, গাজায় দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর একের পর এক হামলায় ইতোমধ্যে নিহতের সংখ্যা ২৫০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৮ হাজারের বেশি লোক, যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও নারী। এমন ভয়াবহ মানবিক সংকটে গাজাবাসী কোথায় যাবে তারও দিশা মিলছে না। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এমন অবস্থায় গাজার হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে হাহাকার এবং ব্যথার আর্তনাদ।

ইত্তেফাকের আরো খবরে লেখা হয়েছে, পাকিস্তানজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী মিছিল, যুদ্ধবিরতির ডাক কাকারের। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজায় যে কোনো দখলদারিত্ব হবে 'বড় ভুল'।

ভারতে যে ফাঁদে পড়ে মানুষ আত্মহত্যা করছেন, সেই ঋণের অ্যাপ বাংলাদেশে-ভারতের মুম্বাইয়ের আইনজীবী ভূমি সিনহা মুঠোফোনের অ্যাপভিত্তিক একটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪৭ হাজার রুপি নিয়েছিলেন। পরে সুদ ও আসলে তাঁর কাছে দাবি করা হয় ২০ লাখ রুপি।

যুগান্তরকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত-কাঁদছে গাজা, ওদের কান্নার জবাব দিন

রাজনৈতিক সংকটেও শর্তের বেড়াজাল, সংলাপের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না-প্রতম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, মার্কিন প্রাক্‌–নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য অংশীজনদের মধ্যে অর্থবহ সংলাপের সুপারিশ করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির শর্তের বেড়াজালে এই মুহূর্তে সংলাপের সম্ভাবনা নেই। দল দুটির নেতারা প্রকাশ্যে এমন ধারণা দিচ্ছেন। দুই পক্ষই পরিস্থিতির জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।

বিএনপি চাইছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ। আর এই প্রশ্নে কোনো ছাড় দিতে বা আপস করতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। এখন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে কার্যত রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের দিকেই এগোচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, দুটি পক্ষই এই মুহূর্তে নিজ নিজ অবস্থানের সমর্থনে শক্তি দেখিয়ে জিততে চাইছে। ফলে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

প্রথম আলোর খবরে লেখা হয়েছে, ঋণ শোধ করেও পার পাননি ভূমি। ব্ল্যাকমেল (প্রতারণা) আর ফোনের অত্যাচারে তিনি শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যাকেই ভরসা মনে করেছিলেন। পরে স্বজনেরা তাঁকে রক্ষা করেন।

অবশ্য ভারতে অ্যাপভিত্তিক ঋণের ফাঁদে পড়ে ৬০ জনের মতো মানুষ আত্মহত্যা করেছেন বলে গত সপ্তাহে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়। উদ্বেগজনক দিক হলো, বাংলাদেশেও ঋণ দেওয়ার অ্যাপ বাড়ছে। আর ওই সব অ্যাপ আইন মানছে না।

বাংলাদেশে অ্যাপ খুলে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার ঘটনায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট আটটি মামলার তদন্ত করছে। এসব মামলায় গত আগস্টে চীনের ৭ নাগরিকসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের নাগরিকেরা অ্যাপভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণের প্রলোভন দেখান। বিনা জামানতে ঋণ দেওয়ার কথা বলে মানুষকে ফাঁদে ফেলেন। ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, ই-মেইল, মুঠোফোনের নম্বরসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর কাউকে ৫ হাজার টাকা ঋণ দিয়ে ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা দাবি করা হয়। গ্রাহক টাকা দিতে অস্বীকার করলে ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ মামলার ভয় দেখানো হয়।

বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আবার শীর্ষে ঢাকা-ডেইলি স্টার বাংলা

বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় সোমবার শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৯৪ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর' হয়ে পড়েছে।শহরের বাতাসের গুণগত মান ও দূষণের মান অনুযায়ী ঢাকার বাতাসকে 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।ভারতের দিল্লি, চীনের সাংহাই এবং কাতারের দোহা যথাক্রমে ১৭৬, ১৭২ এবং ১৬৫ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

এর আগে গত শনিবার ২১৯ স্কোর নিয়ে ঢাকা দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছিল।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত 

‘ভারতে থাকতে হলে ভারত মাতা কি জয় বলতেই হবে’, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সুরই এবার বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কৈলাস চৌধুরির (Kailash Choudhary) কথায়। শনিবার হায়দরাবাদে এক জনসভায় কৈলাস বলেন, যদি কেউ ভারতে বসবাস করতে চায় তবে তাকে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলতে হবে। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব‌্য বিতর্ক উসকে দিয়েছে।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, “যারা ভারতকে ইন্ডিয়া বলেন, তাঁরা ভারত মাতা কি জয় বলতে চান না। ভারতে বসবাস করে আপনারা কি পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলবেন? যারা বন্দে মাতরম ও ভারত মাতা কি জয় বলবে, তাদেরই কেবল দেশের মাটিতে জায়গা হবে।”

রাজনীতির খবরে গণশক্তির শিরোনাম-সারা দেশে শক্তি কমছে বিজেপি’র, বললেন পাওয়ার। এ খবরে লেখা হয়েছে, ‘‘প্রায় সারা দেশে বিজেপি’র রাজনৈতিক শক্তি কমছে। বিজেপি’র সঙ্গী হচ্ছে যারা, মানুষ তাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন।’’

রবিবার মুম্বাইয়ে দলের শীর্ষ স্তরের নেতাদের বৈঠকে এ কথা বলেছেন এনসিরপি সভাপতি শারদ পাওয়ার। তাঁর ভাইপো অজিত পাওয়ার এনসিপি ভেঙে বিজেপি’তে যোগ দিয়েছেন। তার জেরে মহারাষ্ট্রে জোট সরকার করে আসীন হয়েছে বিজেপি।

নিখোঁজ পরিযায়ীদের খোঁজে হন্যে অসহায় পরিবার-এ শিরোনামটি গণশক্তির। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, পিটিয়ে খুন ২পরিযায়ীর দেহ আনতে পরিবার গেল গুজরাটে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,  গুজরাটের রাজকোটে গহনা ব্যবসায়ীর মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের হামলায় খুন হওয়া পশ্চিমবঙ্গের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ আনতে রবিবার রওনা দিলেন তাঁদের আত্মীয়রা।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৬

ট্যাগ