নভেম্বর ২১, ২০২৩ ২১:০৫ Asia/Dhaka

ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে অব্যাহত ইসরাইলি হামলা বন্ধে যুদ্ধবিরতির একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আলাপ আলোচনা চলছে। এরইমধ্যে গাজায় ইসরাইলি সেনাদের হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী। সেখানে খাদ্য, ওষধু ও পানির সংকট ভয়াবহ। আশ শিফা হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে নির্বিচারে হত্যা চালিয়েছে। গাজার এই সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে গত দুটি পর্বে আমরা আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বক্তব্য শুনেছি। এ বিষয়ক সাক্ষাৎকারের শেষ পর্বেও তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন।

পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

এটি গ্রহণ, উপস্থাপনা ও গ্রন্থণা করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।

রেডিও তেহরান:  অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে আপনার কি মনে হয় খুব শিগগিরি যুদ্ধ থেমে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা দুই রাষ্ট্র নীতির দিকে বিশ্ব নেতারা এগিয়ে আসবে..

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ: দেখুন, এখানে একটা জিনিষ বলে রাখা দরকার সেটি হচ্ছে, যুদ্ধ এক দিনেই থেমে যেতে পারে সেটি হলো আমেরিকা। আমেরিকর হাতেই এই যুদ্ধের চাবি আছে। যুদ্ধ কতদূর যাবে আর কোথায় গিয়ে থামবে তার পুরোটাই আমেরিকার হাতে। প্রতিদিন দশ মিলিয়ন ডলার আমেরিকা ইসরাইলের পেছনে ঢালছে। আর এটি আমেরিকার নাগরিকদের পয়সা। আমেরিকার নাগরিকরা যখন জেগে উঠবে তখন আর যুদ্ধ চলবে না। আমি আমেরিকার নাগরিকদের ওপর এখনও ভরসা রাখছি এ ব্যাপারে। রবীন্দ্র নাথের একটি কথা আছে- 'মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো মহাপাপ।' যে কারণে আমি বলছি যে, আমেরিকার জনগণ যদি জেগে ওঠে এবং তাদের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আর তার একটা সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আর তখনই এই যুদ্ধ থামানো যাবে।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক ইমতিয়াজ- যদি এই যুদ্ধ থামানো যায় বা না থামে তাহলে ফিলিস্থিনসহ মধ্যপ্রাচের পরিস্থিতি কি হবে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এই যুদ্ধ কি তৃতীয় কোনো ফ্রন্টের জন্ম দেবে  কি না? আর সেই পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক হতে পারে?

গাজায় ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞ

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ: দেখুন, এটি অবশ্যই ভাববার বিষয়, আমেরিকা কতদিন গাজায় এই যুদ্ধ ধরে রাখতে পারবে! তবে আরেকটি কথাও মনে রাখতে হবে। আমেরিকায় জিউয়িসি লবি প্রচণ্ড শক্তিশালী। সেখানে সবকিছু বলা যায় তবে একটি বিষয় বলা যায় না সেটি হচ্ছে' ইসরাইল।' আরেকটি কথাও কিন্তু আছে। সেটি হচ্ছে আমেরিকায় যারা মারা যান তার মধ্যে জিউসরাই কিন্তু বেশি। অর্থাৎ অ্যান্টি জিউস আমেরিকায় অনেক বেড়ে গেছে। কারণ এটি মূলত ইউরোপের একটি সমস্যা। আর সেখানেই চলে আসে যায়ানিজমের কথা। আর ইসরাইলকে নিয়ে যতটা না ধর্ম তারচেয়ে বেশি রাজনীতি।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব শুনছেন ফিরছি শিগগিরি আমাদের সাথেই থাকুন।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক ইমতিয়াজ, আপনি জায়ানিজমের কথা বলছিলেন, আচ্ছা সাধারণ জিউসদের কিংবা স্কলার জিউসদের এই যুদ্ধ নিয়ে কি মত-তারা কি থামানোর পক্ষে –আপনার মূল্যায়ন কি?

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ: জ্বি সাধারণ জিউস এবং জিউস স্কলাররা যায়ানিজমের বিরুদ্ধে। আর এ বিষয়ে আমি আবারও বলব গাজা যুদ্ধ একদিনেই থামতে পারে আর সেটি হচ্ছে-আমেরিকা যদি চায়। এখন আমেরিকা থামাবে কি না সেটিই এখন দেখার বিষয়।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, গাজা যুদ্ধ নিয়ে শেষ পর্বের শেষ প্রশ্নটি হচ্ছে- কেন ইসরাইল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এত মাথাব্যথা, তাদের কি লাভ এখানে?

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ: দেখুন, আমেকিার তো লাভ আছে। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন জুনিয়র ছিলেন সে তখন নিজেই বলেছিলেন ইসরাইল হচ্ছে তাদের একটি লাভবান ইনভেস্টমেন্ট। তখন সেখানে তিন বিলিয়ন ডলার দিত আমেরিকা ইসরাইলকে। এটি যে আমেরিকার লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট সেটি বোঝা দরকার। আর ঐ সিস্টেমেই তারা ইসরাইলকে দেখছে আজও। তবে আমি মনে আমেরিকার অধিকাংশ জনগণ গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, লেখালেখি করছে এবং  নিন্দা জানাচ্ছে।

তো জনাব অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ-গাজা যুদ্ধ নিয়ে তিন পর্বে রেডিও তেহরানের সাথে কথা বলার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২১

ট্যাগ