'একরাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি'
বিএনপি নেতাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যেতো: কৃষিমন্ত্রী
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৭ ডিসেম্বর রোববারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- একরাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি: কৃষিমন্ত্রী-মানবজমিন
- ২৮৩ আসনে ভোটে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি: মহাসচিব-প্রথম আলো
- বিএনপির আগামীকালের হরতাল পিছিয়ে ১৯ ডিসেম্বর-ডেইলি স্টার বাংলা
- চুয়াডাঙ্গায় বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত-ইত্তেফাক
- শেষ বেলায় আতঙ্কে অনেক প্রার্থী-যুগান্তরের প্রধান খবর
কোলকাতার শিরোনাম:
- শিল্পপতি সজ্জন জিন্দলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ অভিনেত্রীর! -আনন্দবাজার পত্রিকা
- সংসদ হামলা: নিরাপত্তায় বড় গলদ ছিল-সাফ জানালেন মমতা-সংবাদ প্রতিদিন
- মুম্বাইয়ে নারী নির্যাতনের অভিযোগ আমলরা ছেলের বিরুদ্ধে-গণশক্তি
- সংসদের ঘটনা উদ্বেগজনক-প্রকাশ্যে মুখ খুললেন মোদী-আজকাল
শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি।

একরাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি: কৃষিমন্ত্রী-দৈনিক মানবজমিনসহ বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত এ খবরে লেখা হয়েছে, বিএনপিকে ভোটে আনতে সব চেষ্টাই করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি একরাতে সব নেতাকে জেল থেকে মুক্তির প্রস্তাবেও বিএনপি রাজি হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বারবার নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে আসলে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হবে। শুধু পিছিয়ে দেয়া নয়, বলা হয়েছে, সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে। আজ একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করলে বাংলাদেশে আজকে হরতালের দিন গাড়ি চলতো না। এছাড়া আমাদের অন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না। বিকল্পও ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করেই করেছি। তাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যেতো। এই নেতার দাবি, সংবিধান সমুন্নত রেখে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতেই নির্বাচনে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে আওয়ামী লীগের চেষ্টার কমতি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার আশঙ্কা-বাংলাদেশে 'আরব বসন্ত' ঘটাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-মানবজমিন
আর প্রথম আলোর শিরোনাম ‘আরব বসন্তের’ মতো বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র : রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র- এ খবরে লেখা হয়েছে, রাশিয়া লক্ষ করছে, বাংলাদেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।রুশ কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে তাস লিখেছে, মারিয়া জাখারোভা তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘গত ১২-১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সরকারবিরোধীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করে, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক লক্ষ করছি।’

মারিয়া জাখারোভা আরও বলেন, ‘জনগণের ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তের’ মতো করে বাংলাদেশকে আরও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হতে পারে।’মারিয়া জাখারোভার বক্তব্য অনুসারে, এমন আশঙ্কার গুরুতর ভিত্তি রয়েছে যে আগামী সপ্তাহগুলোয় ‘পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে অসুবিধাজনক’ বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অবরোধ আরোপ করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ওপর আঘাত আসতে পারে; সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে, এমন সম্ভাবনা কম।

তবে যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আরব বসন্ত’ হওয়ার উপাদান বাংলাদেশে নেই। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন একইসুরে বলেছেন ‘আরব বসন্ত’ হওয়ার উপাদান বাংলাদেশে নেই। সাংবাদিকদের মোমেন বলেন, ‘রাশিয়া কি বলেছে, এটা আমাদের ইস্যু না।
চুয়াডাঙ্গায় বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত-ইত্তেফাকের এ খবরে লেখা হয়েছে, শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতের কোনো এক সময় ভারতীয় সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।তবে এখনও পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তারা। এরই মধ্যে লাশ ফেরত নিতে পরিবারের লোকজন স্থানীয় বাড়াদি বিজিবি ক্যাম্পে লিখিত জানিয়েছে। দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ‘দুজন বাংলাদেশি ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল। ভারতের কৃষ্ণনগর থানাধীন এলাকায় বিএফএফের গুলিতে তারা নিহত হয়েছেন বলে জেনেছি। লাশ সেখানে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা অবৈধভাবে গরু নিয়ে আনতে গেছিল।’
ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, তেজগাঁওয়ের ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ জোসনা গ্রেপ্তার হয়েছেন। খবরে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে তেজগাঁও থানার কাওরান বাজার শুটকী পট্টির সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার জোসনা কাওরান বাজার রেললাইন বস্তি এলাকার মাদকের অন্যতম নিয়ন্ত্রক। তিনি মূলত গাঁজা ব্যবসায়ী। তিনি সাধারণত সবজির ঝুড়ি নিয়ে ঘুরেন। এর আড়ালেই তিনি তার গ্রাহকদের কাছে গাঁজা পৌঁছে দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ১২৫ পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জোসনা জানায়, তার স্বামী মাদকসেবী। স্বামীর মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে গিয়েই মাদক কারবারিতে জড়িয়ে যান। তিনি গ্রেপ্তার হলে তার স্বামীই তার জামিন করান। জোসনার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ বার তিনি কারাগারে ছিলেন। প্রতিবারই জামিনে বের হয়ে আবারও মাদক কারবারে জড়িয়ে যান।
সিডনি পলিসি এন্ড এনালাইসিস সেন্টারের রিসার্চ এন্ড কমিউনিকেশন অফিসার আকিব মোঃ সাতিলের একটি নিবন্ধ ১৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডি.সি. ভিত্তিক খ্যাতনামা ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিনে ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে। এটি তুলে ধরেছে দৈনিক মানবজমিন।
শিরোনামটি এরকম- বাংলাদেশ কেন একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে?
বিস্তারিত নিবন্ধে লেখা হয়েছে, ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন দর্শকরা মাঠে খেলতে থাকা দলগুলোর জয়ের সম্ভাবনা কতো শতাংশ সেটা দেখতে পান। কখনও কখনও, শেষ কয়েক ওভারে ম্যাচের ফলাফল এতোটাই স্পষ্ট হয়ে যায় যে বিজয়ী দলের জয়ের সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকে। বাংলাদেশে ওই একই রকম দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালের ০৭ জানুয়ারি নির্ধারিত নির্বাচনে দেশটি তার "নতুন" প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলগুলোর নির্বাচন বয়কটের কারণে এই নির্বাচনে শেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী লীগের (আ.লীগ) জয়ের সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশের বেশি। টাইম ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে সমালোচকরা নির্বাচনটিকে "রাজ্যাভিষেকের সমতুল্য" বলে আখ্যা দিয়েছেন।
অবশ্য এটাই প্রথম নয়। ১০৫ জন নোবেল বিজয়ী সহ প্রায় ২০০ জন বিশ্বনেতার এক চিঠি অনুসারে, বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনে বৈধতার ঘাটতি ছিল, যেগুলোতে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ জিতেছে।
দেশটির সবচেয়ে বড় বিরোধী দল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তাদের মিত্ররা নির্বাচন 'বয়কট' করার ডাক দিয়েছে। তবে, দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতে বয়কটের এই সিদ্ধান্ত বিএনপি'র নেতৃত্ব চাপিয়ে দেয়নি, সেটা বরং তৃণমূল থেকেই এসেছে। বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বহু মিটিংয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল।
প্রকৃতপক্ষে, কেবল বিএনপির নেতাকর্মীরা নন, জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতারাও আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে ছিলেন। তাহলে কেন প্রধান বিরোধী দল, এমনকি সরকার সমর্থক কিছু দলের তৃণমূল নেতারাও শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে (দেশটির) রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি বোঝাটা অপরিহার্য।
অসাধু আম্পায়ার

বাংলাদেশে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে চারটি নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে পরিচিত 'টেকনোক্র্যাট' নির্বাচনকালীন সরকার ছিল। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর তত্ত্বাবধানের জন্য ১৯৯৬ সালে এই ব্যবস্থাটি সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছিল।
কিন্তু, ওই ব্যবস্থাটি সংশোধনের প্রয়োজনের কথা বলে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আওয়ামী লীগ সংসদে নিজেদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ব্যবস্থাটি বাতিল করে।
আর এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকটও জন্মলাভ করে।
ক্ষমতাসীন দলগুলো কর্তৃক আমলাতন্ত্রে রাজনীতিকরণের কারণে বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক দেখিয়েছেন যে কিভাবে স্থানীয় পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের প্রার্থীদের পরাজিত করার জন্য জোট গঠন করে থাকে। তাছাড়া, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে সিনিয়র এবং জুনিয়র আমলাদের রাজনৈতিক বক্তৃতা আমলাতন্ত্রের একটি পক্ষের প্রতি স্পষ্ট পক্ষপাতিত্বই প্রদর্শন করে।
নির্বাচনী দৌড়ে এই আমলারাই নিজ নিজ এলাকায় প্রিসাইডিং অফিসারে পরিণত হন৷ তাদের দেওয়া অসীম ক্ষমতার জন্য তারাই "নির্বাচনের দেবতা"। মনোনয়ন অনুমোদন করা থেকে শুরু করে ভোট গণনা পর্যন্ত সমস্ত কিছুর দায়িত্বে থাকা বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা ওই আমলাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব যে কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং তৃণমূল সেটা অন্য যে কারও চেয়ে বেশি ভালো জানে।
টেকনিক্যালি নির্বাচন কমিশনারদেরই চূড়ান্ত বক্তব্য রাখার এবং চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু, তাদের ভূমিকাও সমানভাবে সন্দেহজনক। উদাহরণস্বরূপ, নির্বাচন কমিশন ২০২৩ সালের আগস্টে একেবারে ন্যূনতম জনউপস্থিতির দুটি কম পরিচিত রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধিত করেছিল, যদিও প্রায় এক ডজন 'সিরিয়াস প্রতিযোগী'র আবেদন তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এছাড়াও, নির্বাচন কমিশনের একজন সচিবসহ সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র কেনার নজির রয়েছে, যা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি তাদের পক্ষপাতিত্বেরই লক্ষণ।
মন্দ জায়গায় বিনিয়োগ
অসাধু আম্পায়ারদের তদারকি করা এই ধরণের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মন্দ জায়গায় বিনিয়োগ করার মতো। একটি উদাহরণের মাধ্যমে এটি আরও কিছুটা স্পষ্ট করা যেতে পারে। বাংলাদেশের সবচেয়ে কম ভোটার (২১২,০১২) ঝালকাঠি-১ আসনে বসবাস করেন। কমিশন ঘোষণা করেছে যে ভোটার প্রতি ব্যয় ১০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। এটা সুপরিচিত যে প্রার্থীদের দ্বারা প্রকৃত ব্যয়ের পরিমাণ বৈধভাবে অনুমোদন থেকে অনেক বেশি। এমনকি যদি কোনো প্রার্থী নিয়ম মেনেও চলেন, তবে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে এবং বোঝাতে তাদের প্রায় ২০,০০০ ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। পরিমাণটা নেহায়েত ছোট নয়।
কোন্ যুক্তিবাদী লোক এমন একটি নির্বাচনে এই পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবেন যেখানে তারা জানেন যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রশাসন কাজ করবে এবং নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি?
বিকল দন্ডাদেশ
২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অনেক বিরোধী নেতাদের (বেশিরভাগই বিএনপি'র) মনোনয়নপত্র দাখিল করতে বাধা দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বা তাদের কারা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা-১০ আসনের সাবেক প্রার্থী শেখ রবিউল আলম, ঢাকা-১৭ আসনের সাবেক প্রার্থী সাইফুল আলম নিরব, ঢাকা-৮ আসনের সাবেক প্রার্থী হাবিব উন নবী খান সোহেল, খুলনা-৪ আসনের সাবেক প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল, নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান, পাবনা-৪ আসনের সাবেক প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক প্রার্থী সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
বাংলাদেশে ২ বছরের বেশি সাজা হলে কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অযোগ্য হন। অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের বেশিরভাগই পলাতক।
রিপোর্ট বলছে, কিছু ক্ষেত্রে বিচারক কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করেন এবং কিছু ক্ষেত্রে বিচারক এমনকি অনেক আগে মারা যাওয়া ব্যক্তিদেরও শাস্তি দেন। এখানে একটি যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন হল, সরকার কি আদৌ চেয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক? উত্তরটি স্পষ্টভাবেই না বলে মনে হচ্ছে।
উপরোক্ত আলোচনা অনুযায়ী, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সিনিয়র নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমার আগে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে কার্যকরভাবে তৃণমূল এবং অন্যান্য নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য রাজি করানোর সম্ভাবনাকে (যতো কমই হোক না কেন) হত্যা করা হয়েছে।
অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই
সংক্ষেপে বললে, তফশিল ঘোষণার পর থেকে নেতাকর্মীদের উপর দমন-পীড়ন এবং উপরে আলোচিত অনেক প্রাসঙ্গিক বিষয়ের কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত থেকে বিএনপি নেতাদের পিছু হটবার কোনো অবকাশ ছিল না।
এটি তৃণমূলের এই বক্তব্যকেই আরও প্রমাণ করেছে যে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়৷ আগামী নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্তে দৃঢ় থেকে আ.লীগকে কার্যকরভাবে ওয়াকওভার দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোন উপায় ছিল না।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

যেখানে সব আশা শেষ হয়ে যায়, সেখান থেকে শুরু হয় মোদি কি গ্যারান্টি। ফের নিজেকে ‘মসিহা’ হিসাবে জনসমক্ষে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বোঝানোর চেষ্টা করলেন, যতদিন তাঁর গ্যারান্টি আছে, ততদিন হতাশার কোনও কারণ নেই। সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় খবরটি পরিবেশিত হয়েছে। মোদি কি গ্যারান্টি (Modi Ki Garantee)। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তিকে ভোটের ময়দানে ব্যবহার করতে নতুন শব্দবন্ধ তৈরি করেছে বিজেপি। বলা ভালো এই নয়া শব্দবন্ধ ব্যবহার করা শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই। সদ্য শেষ হওয়া পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে ভীষণভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল মোদি কি গ্যারান্টি। যা ভোটবাক্সে বিজেপিকে ভালো ডিভিডেন্টও দিয়েছে।
সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার খবরে লেখা হয়েছে, সংসদে গ্যাস হামলার মূলচক্রীর সঙ্গে বাংলার কোনও যোগ নেই। ওরা ঝাড়খণ্ড, বিহারের। সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও করলেন তিনি। তিনি বলেন, নিরাপত্তায় বড় গলদ ছিল। আর গণশক্তি পত্রিকায় এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, বিশৃঙ্খা তৈরি করাই তাদের লক্ষ, যাতে সরকার তাদের দাবি মানতে বাধ্য হয়। বুধবার সংসদের হুজ্জতি কান্ডে ধৃতদের এমনটাই পরিকল্পনা ছিল বলে দাবি করলো দিল্লি পুলিশ। এদিকে আজকাল লিখেছে, সংসদের ঘটনা উদ্বেগজনক, গ্যাস হানার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

শিল্পপতি সজ্জন জিন্দলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ অভিনেত্রীর!-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, জিন্দল গোষ্ঠীর কর্তা সজ্জন জিন্দলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার মুম্বইয়ের বিকেসি থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন এক মহিলা। তিনি পেশায় অভিনেত্রী। তাঁর অভিযোগ, ঘটনাটি ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ঘটেছে। বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্সে সংস্থার সদর দফতরের পেন্টহাউসে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন জিন্দল। অভিযোগকারিণী দাবি করেছেন, চলতি বছরের শুরুতে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁর কথায় গুরুত্ব দেয়নি। পরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। এবার আদালতের নির্দেশেই পুলিশ তাঁর অভিযোগ নিয়েছে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৭