মার্চ ০২, ২০২৪ ১১:২৫ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২ মার্চ শনিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম: 

  • বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ, আটক কয়েকজন-প্রথম আলো
  • ১৪ বছরে রাজধানীতে যত ভয়াবহ অগ্নি ট্র্যাজেডি কিন্তু দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়নি ইত্তেফাক
  • উলটো বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম-যুগান্তর
  • বিএনপি নেতারা তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন: কাদের-মানবজমিন
  • ভবনটি ছিল যেন বিস্ফোরণের অপেক্ষায় থাকা ‘বোমা’-ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • শনি-দুপুরে ব্রিগেডের প্রস্তুতি মিছিলে থাকবেন জানিয়েও ফের কুণাল-তোপ সুদীপকে, তৃণমূলে আরও ডামাডোল!-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • CAA নিয়ে অবস্থান কী? জানতে চান মতুয়ারা-সংবাদ প্রতিদিন
  • একজোট থেকেই বাংলাকে রক্ষার লড়াইয়ের ডাক সেলিমের- গণশক্তি
  • সন্দেশখালির পাল্টা মণিপুরের প্রসঙ্গ তুলে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ তৃণমূলের-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। বেশিরভাগ দৈনিকে বেইলি রোড ট্রাজেডির খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে। প্রথম আলোর শিরোনাম বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ, আটক কয়েকজন। এ খবরে লেখা হয়েছে, রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করেছে।পুলিশ–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ সম্পর্কে দৈনিকটির আরও কয়েকটি শিরোনাম তুলে ধরছি। বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজউকের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। বেইলি রোড ট্রাজেডি: আমরা মৃত্যু উৎপাদান করি। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, রেস্তোঁরায় ভরা ঢাকার এসব ভবন আসলে 'টাইম বোমা'।

বেইলি রোড নিয়ে প্রথম আলোর অপর একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বেইলি রোডের ভবনটিতে আগুনের ঝুঁকি জেনেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বেইলি রোডের ভবনটিতে যে আগুনের ঝুঁকি ছিল, তা জানত সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা। তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ভবন কর্তৃপক্ষও গায়ে মাখেনি। মানুষের মৃত্যুর পর বেরিয়ে এসেছে গাফিলতির চিত্র।বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের বহুতল ভবনে গত বৃহস্পতিবার রাতের আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা কেউ ‘শঙ্কামুক্ত’ নন। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে। আগুনের ভয়াবহতা ও মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গতকাল শুক্রবার বেইলি রোডে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।আগুনের ঝুঁকি ও অনুমোদন না থাকার পরও ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ চলছিল বছরের পর বছর ধরে। আর প্রথম আলোর সম্পাদকীয়র শিরোনাম এরকম-বেইলি রোডের ভবনে আগুন দায়ী ব্যক্তি ও সংস্থাকে আইনের আওতায় আনুন।

বেইলি রোড ট্রাজেডি: ইত্তেফাকের শিরোনাম- এক জনমে আর কত কষ্ট বাকি তোমার, লামিশার বাবাকে ডিআইজি। এ খবরে লেখা হয়েছে, রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনে পুলিশ সদরদপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নাসিরুল ইসলামের মেয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী লামিশা ইসলাম মারা গেছেন। বাবা আমি আটকা পড়েছি, আমাকে বাঁচাও’- মৃত্যুর আগে লামিশা তার বাবাকে ফোন করে এই শেষ কথা বলেছিলেন। দৈনিকটির আরেকটি শিরোনাম-বেতন নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেন না দরিদ্র কৃষকের ছেলে সাগর। সে ওখানে একটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটির কাজ করত। স্ত্রী-সন্তানসহ কাস্টমস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বেইলি রোডের আগুনে।

১৪ বছরে রাজধানীতে যত ভয়াবহ অগ্নি ট্র্যাজেডি-ইত্তেফাক

পুরান ঢাকার নিমতলী, চুড়িহাট্টা ও বনানীর এফআর টাওয়ারের পর এবার রাজধানীর অগ্নি-ট্রাজেডির খাতায় যুক্ত হলো বেইলি রোড। গত ১৪ বছরে ঘটে যাওয়া এ চারটি ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৬৮ জনের। অন্যদিকে মগবাজারে ভবনে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১২ জনের। এছাড়া বঙ্গবাজার, নিউমার্কেটসহ গত কয়েক বছরে ঢাকায় বেশ কয়েকটি বড় অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর প্রতিবার আগুন লাগার পর নড়েচড়ে বসে সরকার। আশ্বাস  দেওয়া হয়, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু দৃশ্যপটে  খুব একটা পরিবর্তন  দেখা যায় না। নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডে স্মরণাতীতকালের সবেচেয়ে বীভৎস ও করুণ মৃত্যু হয় ১২৪ জনের।চুড়িহাট্টায় ৭১ জন। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার থেমে যায় সব উদ্যোগ। এখন আর  কেউ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে কথা বলেন না। শেষ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি  সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা। অভিযানও চালানো হয়নি নকশাবহির্ভূত কোনো ভবনের বিরুদ্ধে।

বিএনপি নেতারা তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন: ওবায়দুল কাদের-মানবজমিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নেতারা তাদের বিদেশি প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে ভগবান জ্ঞান করে রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তারা জনগণের ক্ষমতায়নেও বিশ্বাস করে না। তাদের নির্ভরতা কেবলমাত্র বিদেশি শক্তির উপর। সে কারণে বিএনপি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে লবিষ্ট নিয়োগের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী অপপ্রচার ও প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে আসছে।

যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, সরকারের নানা উদ্যোগের পরও দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। অথচ রমজান শুরু হতে আর মাত্র ১০ দিন বাকি। দাম কমার পরিবর্তে কিছু পণ্যের দাম উলটো বাড়ছে। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। নির্ধারিত দাম বাজারে কার্যকর হয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করারও যেন কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে একেবারে অসহায়।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

আজ কৃষ্ণনগরে জনসভা মোদির, CAA নিয়ে অবস্থান কী? জানতে চান মতুয়ারা-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, আজকের সভা থেকে মহুয়া মৈত্রকেও নিশানা করে কথা বলেছেন মোদি। কিন্তু বিজেপি যতই কৃষ্ণনগর লোকসভাকে টার্গেট করুক না কেন, একুশের বিধানসভা ভোটের ফলাফলের অঙ্ক বলছে, কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে যথেষ্ট এগিয়ে তৃণমূল। কোনও নির্বাচন এলেই মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের লক্ষ্যে সিএএ তাসকে আস্তিন থেকে বের করে বিজেপি। এবারও লোকসভা ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করা হবে বলে গত মাসেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ককে হাতে রাখতে সিএএ চালুর আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সকলেই নাগরিক। তাহলে আলাদা করে নাগরিকত্ব কেন। মতুয়াদের উন্নয়নে একাধিক কাজ করেছে রাজ্য সরকার। এবার মতুয়ারাও চাইছে সিএএ নিয়ে বিজেপি শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে। অবস্থান স্পষ্ট করুক নরেন্দ্র মোদি।

শনি-দুপুরে ব্রিগেডের প্রস্তুতি মিছিলে থাকবেন জানিয়েও ফের কুণাল-তোপ সুদীপকে, তৃণমূলে আরও ডামাডোল!-আনন্দবাজার পত্রিকা

সন্দেশখালির পাল্টা মণিপুরের প্রসঙ্গ তুলে নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ তৃণমূলের-আজকালের এ খবরে লেখা হয়েছে, সন্দেশখালির পাল্টা হিসেবে মণিপুরকে তুলে ধরল তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে মহিলাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং দলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। শুক্রবার আরামবাগে দলীয় সভা থেকে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যের শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, চোটের জবাব দিতে হবে ভোটে। এরপরেই আসরে নামে তৃণমূল। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চোখের জল পড়ে সন্দেশখালি নিয়ে। মণিপুর নিয়ে তো পড়ে না?

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২

ট্যাগ