আগস্ট ১২, ২০২০ ১৪:২১ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা!১২ আগস্ট বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনে আস্থা নেই যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন ও কানাডার-ইত্তেফাক
  • গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নেই-দৈনিক সমকাল
  • জেলে বসেও তেলেসমাতি বালিশকাণ্ডের হোতার-দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • সিনহা হত্যা:৪ পুলিশসহ ৭ আসামি রিমান্ডে
  • স্বাস্থ্যের ডিজি আজাদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক-দৈনিক যুগান্তর
  • পর্দার আড়ালে গডফাদাররা-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • করোনা-অদৃশ্য আতঙ্ক-মানবজমিন
  • মুখোমুখি প্রদীপ-লিয়াকত-এক অন্যকে মদ্যপ বলে দায় চাপানোর চেষ্টা-মানবজমিন

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • কাশ্মিরে সন্ত্রাস দমন অভিযানে নিহত এক সেনা জওয়ান ও এক জেহাদি-সংবাদ প্রতিদিন
  • ফেসবুক পোস্ট ঘিরে রণক্ষেত্র বেঙ্গালুরু,পুলিশের গুলিতে নিহত ৩-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • মোদিকে প্রশ্ন মমতার: পাওনা না পেলে লড়ব কীভাবে করোনার সঙ্গে?-আজকাল

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. জিডিপির এত প্রবৃদ্ধি হলো কীভাবে? এটা প্রথম আলোর শিরোনাম। তাহলে মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলারের যে তথ্য দেয়া হচ্ছে তাও কী প্রশ্নবিদ্ধ নয়?
২. জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি কেলি ক্রাফট বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেরকে এখন ‘ইরানবিরোধী অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়ন’ অথবা ‘মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি’র মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে। তার এ বক্তব্যকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

পর্দার আড়ালেই গডফাদাররা-বাংলাদেশ প্রতিদিন

(মাদকের বেশির ভাগ চালানের হোতা থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে, ধরা পড়ছেন চুনোপুঁটি)

মাদকের গডফাদাররা পর্দার আড়ালেই থাকে!

মাদক পাচারে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন, জামিন নিয়ে আসামির লাপাত্তা, পাচারে কাট-আউট পদ্ধতিসহ নানা কারণে বেশির ভাগ মাদক চালানের মূল হোতাদের টিকিটি পাচ্ছে না প্রশাসন। মূল হোতা চিহ্নিত করতে না পারায় অনেক মামলায় শুধু বাহককে আসামি করে দেওয়া হচ্ছে চার্জশিট। ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মাদক চালানের হোতারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ইদানীং দেখা যাচ্ছে মাদক চালানের বাহক জানে না ক্রেতা-বিক্রেতার নাম। তাদের চালানের সঙ্গে দেওয়া হয় শুধু একটি মোবাইল নম্বর। তদন্তকালে দেখা যায় নম্বরটি অন্য জনের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। এ ছাড়া মাদক পরিবহনে কাট-আউট পদ্ধতি অনুসরণ করায় ক্রেতা-বিক্রেতা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।

এতে তদন্তে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে। তার পরও অধিদফতর চেষ্টা করছে হোতাদের চিহ্নিত করে মামলার চার্জশিট দেওয়ার।’ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদক মামলার তদন্তে বড় বাধা অধিদফতরের লোকবল সংকট, আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়া, তদন্তে যথাযথভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে না পারা এবং চালান বাহক ক্রেতা-বিক্রেতার নাম বলতে না পারা। ফলে অনেক চালানের মূল হোতাদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু বাহককে আসামি করে মামলার চার্জশিট দিতে হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক পাচারের হোতারা আইনে ফাঁকফোকর বের করে মামলা থেকে নিজেদের রক্ষায় নানা কৌশল অবলম্বন করছে। মাদকের চালান বাহক গ্রেফতার হলেও নিজেদের সুরক্ষার জন্য অনুসরণ করছে নিত্যনতুন কৌশল। যার মধ্যে রয়েছে কাট-আউট পদ্ধতি, অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার, মাদক পরিবহনে রোহিঙ্গা ও নারীদের ব্যবহার, মাদক পরিবহনে ফিশিং পদ্ধতি অনুসরণ, মাদক পাচারে রিলে পদ্ধতি অনুসরণসহ নানা কৌশল অবলম্বন। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করার ফলে বেশির ভাগ মাদক চালানের ক্রেতা বা বিক্রেতার হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। তাই অনেক মামলায় চালানের হোতাকে বাদ দিয়ে শুধু চালান বাহককে আসামি করে মামলার চার্জশিট দিতে হচ্ছে।

মাদক চালানে নারী ও রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা ও নারীরা গ্রেফতার হলেও তদন্ত কর্মকর্তাদের খুব একটা তথ্য দিতে পারে না। এতে চালানের হোতারা অনেকটা সুরক্ষিত থাকে। তাই মাদক পাচারে নারী ও রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে।

দুর্নীতির খবর:

সিগারেট খাওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার, পরে পুলিশকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে মুক্তি-দৈনিক প্রথম আলো

সোহেল মীর নামের এক ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার ওসিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। এর আগে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সামনে সোহেল মীর মাদকদ্রব্য সিগারেট খেয়েছিলেন, এমন অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার এসআই পবিত্র সরকার, এসআই খালিদ শেখ, এএসআই শাহিনুর রহমান, কনস্টেবল মিজান ও পুলিশের সোর্স মোতালেব।

মেডিকেল কলেজে ধূমপান করার অপরাধে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিষয়টি জানেন না মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ–উন নবী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পরদিন (২ আগস্ট) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়া সবকিছু বন্ধ ছিল। আর মেডিকেল কলেজ তো আগে থেকেই বন্ধ। তাঁর হাসপাতাল থেকে সেদিন কাউকে গ্রেপ্তার করার কথা তিনি জানেন না। কোতোয়ালি থানাপুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি।

অভিযোগের ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। বক্তব্য জানতে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সোহেল মীর নামের এক ব্যক্তি তাঁদের থানার ওসিসহ পাঁচজনের নামে আদালতে মামলা করেছেন বলে জানতে পেরেছেন।

মামলার কাগজপত্র এবং ভুক্তভোগী সোহেল মীরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহেল মীর (৫৫) পেশায় একজন ব্যবসায়ী। স্ত্রী আর এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায়। কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জে কাপড়ের দোকান রয়েছে। তাঁর মেয়ে থাকে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায়। মেয়ের বাসায় আসার জন্য ২ আগস্ট বিকেলে সোহেল কালীগঞ্জ থেকে নৌকায় করে সদরঘাটের ওয়াইজঘাটে আসেন। এরপর আম্বিয়া টাওয়ারের সামনে আসার পর কোতোয়ালি থানার এসআই পবিত্র সরকার, এসআই খালিদ শেখ, এএসআই শাহিনুর রহমান, কনস্টেবল মিজান ও পুলিশের সোর্স মোতালেব সোহেলকে ঘিরে ধরেন।

সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ আমার দেহ তল্লাশি করে। কিন্তু আমার কাছে তারা কিছু পায়নি। তবে আমার কাছে টাকা ছিল মোট ২ হাজার ৯০০। তখন ওই টাকা আমার কাছ থেকে কেড়ে নেন এসআই খালিদ। এরপর তাঁরা আমাকে চলে যেতে বলেন। আমি টাকা চাইলে সবাই মিলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। আমাকে মারধর করতে দেখে কয়েকজন লোক সেখানে চলে আসেন। পুলিশ এগিয়ে আসা লোকজনকে বলেন, আমার কাছ থেকে ২১৪টি ইয়াবা পাওয়া গেছে। কনস্টেবল মিজান নিজের পকেট থেকে ইয়াবা বের করে মানুষকে দেখান। পুলিশ তাদের আরও বলেন, আমার নামে নাকি জেএমবির মামলা আছে। সেই মামলায় আমার নামে নাকি ওয়ারেন্ট আছে। তখন আমাকে পুলিশ টানাহেঁচড়া করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে হাজতখানায় এনে রাখে।

সোহেল মীরকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মুঠোফোন থেকে স্ত্রী সাবিনা খাতুনকে ফোন দেয় পুলিশ। তখন সোহেল মীর থানায় আটক হওয়ার কথা জানান স্ত্রীকে।

সোহেলের স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন এসআই খালিদ শেখ। সাবিনা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ আমাকে কোতোয়ালি থানায় আসতে বলেন। থানার ফোন পেয়ে আমি কোতোয়ালি থানায় আসি। থানায় বসে এসআই খালিদকে ফোন করলে তিনি আমাকে নয়াবাজার ব্রিজের গোড়ায় আসতে বলেন। সেখানে এসআই খালিদ স্বামীকে ছাড়াতে চাইলে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসার কথা বলেন। না হলে স্বামীকে ক্রসফায়ার করবেন বলে হুমকি দেন।

টাকা দেওয়ার বিষয়ে সাবিনা তাঁর স্বামী সোহেলের সঙ্গে কথা বলতে থানায় যান। সেখানে সাবিনার সঙ্গে কথা বলেন এসআই পবিত্র সরকার, এসআই খালিদ ও এএসআই শাহীন। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সামনে কথা না বলে থানার ভেতর অন্য স্থানে সাবিনার সঙ্গে কথা বলেন ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে থানায় গিয়ে ২ লাখ টাকা দেন সাবিনা। টাকাটা নেন এসআই পবিত্র সরকার ও এসআই খালিদ। সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন এসআই শাহীন। খালিদ আরও দেড় লাখ টাকা সকালের মধ্যে দিতে বলেন সাবিনাকে। খালিদ সাবিনাকে বলেন, সোহেলকে আমরা পাঁচআনি (ডিএমপি অ্যাক্ট) মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করব। আমরা আমাদের উকিল দিয়ে সোহেলকে ওই দিনই ছাড়িয়ে আনব।

পরদিন সকাল ৯টায় থানায় গিয়ে সাবিনা দেড় লাখ টাকা দিয়ে আসেন। পরে ওই দিনই (৩ আগস্ট) আদালত থেকে ছাড়া পান সোহেল মীর।

সাবিনা বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আদালত তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। আমরা নিরাপত্তা চাই। আমরা সুবিচার চাই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব বিজয় তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন,‌ এ রকম একটি মামলা হয়েছে জেনেছি। তবে আমরা এখনো অফিশিয়ালি কাগজটা হাতে পাইনি। অফিশিয়ালি কাগজটা হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কমিটি কীভাবে করব? যেহেতু অফিশিয়াল কোনো কাগজপত্র পাইনি। আমরা শুনে কিংবা টিভির ব্রেকিং নিউজ দেখে তো কোনো কমিটি করতে পারব না। অফিশিয়ালি আমাদের নোটিশে আসতে হবে।

ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ভারতের বেঙ্গালুরুতে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি, বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩ এ খবর দিয়েছে শহরের পুলিশপ্রধানের বরাতে এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে ও এনআইয়ে। খবরে বলা হয়েছে,সাম্প্রদায়িক সহিংসতার উসকানি দিয়ে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ভারতের বেঙ্গালুরুর পূর্বাঞ্চলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের গুলিতে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৬০ পুলিশ আহত হয়েছে। খবরে আরো বলা হয়েছে, কংগ্রেসের এমএল শ্রীনিবাস মূর্তির ভাইয়ের ছেলে নবীন ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছিল। মঙ্গলবার রাতের প্রতিবাদে পাথর নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা ও সহিংতার অভিযোগে ১১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা এমএলএর বাড়ির চারপাশের অনেক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন । সামাজিক মাধ্যমে অবমাননামূলক মন্তব্যের দায়ে নবীনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।ফেসবুকে দেয়া পোস্টটি মুছে দিয়েছেন তিনি। যদিও তার অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হয়েছিল বলে দাবি করেন নবীন।

ভারতের সবচেয়ে বড় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) খবরে বলা হয়, মহানবীকে নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেয়ায় শ্রীনিবাস মূর্তির বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও গুলি চালিয়েছে।

টুইটারের এক পোস্টে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানায়, ডিজি হাল্লি ও কেজি হাল্লিতে সংঘাত হয়েছে। সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও গুলি ব্যবহার করেছে। পুলিশ কমিশনার ঘটনাস্থলে গেছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২৪টি ফোর-হুইলারে অগ্নিসংযোগ ও ২০০টি বাইক ভস্মীভূত করে হয়েছে। সহিংসতায় একটি থানা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার কামাল পান্ত বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনা হয়েছে। সহিংসতা কবলিত ডিজি হাল্লি ও কেজি হাল্লি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। বেঙ্গালুরু শহরে বড় ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

হামলা ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে টুইটারে পোস্ট দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েডুরাপ্পা। লোকজনকে আইন হাতে তুলে না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা দীনেশ গুনডু রাও।

ভারতে করোনার সর্বশেষ খবরে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৬০,৯৬৩ জন আক্রান্ত, এ সময়ে মারা গেছেন ৮৩৪ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৬,০৯১ জন। আর মোট আক্রান্ত ২৩ লাখ ২৯ হাজার ৬৩৮ জন।

রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন( প্রতীকী ছবি)

এদিকে রাশিয়ার তৈরি প্রথম করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কয়েকটি দেশ এবং কিছু বিজ্ঞানী। এ সম্পর্কে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের শিরোনাম-‘রাশিয়ার ভ্যাকসিনে আস্থা নেই আমেরিকা-ব্রিটেনের, সংশয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও’

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, অবশেষে রাশিয়ার হাত ধরে বাজারে এল করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ভি (Sputnik V)। যা নিয়ে সাড়া পড়েছে গোটা বিশ্বেই। করোনা মহামারীর আবহে অনেকেই এই ভ্যাকসিন নিয়ে আশার আলো দেখছেন। কিন্তু একই সঙ্গে উঠে আসছে নানা অস্বস্তিকর প্রশ্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে শুরু করে ভ্যাকসিনের দৌড়ে থাকা আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ এ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষত, যেভাবে তড়িঘড়ি ভ্যাকসিন আনা হচ্ছে, তাতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা যথোচিতভাবে হয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পশ্চিমী দেশগুলির বিশেষজ্ঞরা।

এতদিন ধরে ভ্যাকসিন নিয়ে সাফল্যের দৌড়ে এগিয়ে ছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনকা। ছিল মোডার্না (Moderna), ফাইজারের মতো সংস্থাও। তাদের টেক্কা দিতেই রাশিয়া তড়িঘড়ি স্পুটনিক-ভি আনার কথা ঘোষণা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? তাঁদের প্রধান অভিযোগ, রাশিয়ার এই করোনা ভ্যাকসিন এখনও মানব ট্রায়ালের সমস্ত ধাপ উত্তীর্ণ হয়নি। তাই এর কার্যকারিতা সংশয়াতীত নয়। WHO যেমন বলেছে, সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য কঠোরভাবে পর্যালোচনা করেই ছাড়পত্র দেবে তারা। রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংস্থা যোগাযোগ রেখে চলছে। ভ্যাকসিনের পূর্ব যোগ্যতা অর্জনের নিরিখে WHO’র ছাড়পত্র কীভাবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে কথা চলছে। আবার প্রাক্তন মার্কিন এফডিএ কমিশনার স্কট গোতিলেব সাফ বলেছেন, “ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল না হলে এটা নেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়।” প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্যই প্রকাশ করেনি রাশিয়া।

হু’র তথ্য অনুযায়ী, এই ভ্যাকসিন এখনও প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে। ফেজ টু বা ফাইনাল স্টেজ পরীক্ষা, যেখানে কয়েক হাজার মানুষের উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়, তা করা হয়নি বলে অভিযোগ আমেরিকা-ব্রিটেনের মতো দেশের বিশেষজ্ঞদের।‘প্রথম’ হতে গিয়ে গুণমানের সঙ্গে আপস করা হয়েছে বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির লরেন্স গস্টিন, মার্কিন সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অ্যান্টনি ফাউচিও। সাধারণত যে কাজে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগে, তা দু’মাসে কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তাঁদের।

অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, ভ্যাকসিন কিনতে আগ্রহী ২০টি দেশ, ১০০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির প্রস্তাব, ভারত-সহ ৫ দেশে চূড়ান্ত ট্রায়াল, দাবি রাশিয়ার। খবরটিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ফান্ডের (RDIF) আধিকারিক কিরিল দিমিত্রভ (Kirill Dmitriev) বলছেন, “ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের প্রতি প্রচুর দেশের ঝোঁক আমরা দেখতে পাচ্ছি। এখনও পর্যন্ত ২০টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির প্রস্তাব এসেছে।” দিমিত্রভের দাবি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সম্মিলিতভাবে রাশিয়ার তৈরি এই ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করছে। যাতে রাশিয়াকে ভ্যাকসিন তৈরির কৃতিত্ব দিতে না হয়। ওই আধিকারিকের দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করে বছরে প্রায় ৫০ কোটি ভ্যাকসিন তৈরির জন্য রাশিয়া প্রস্তুত।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১২

 

 

 

ট্যাগ