আগস্ট ১৬, ২০২০ ১৫:৩৩ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৬ আগস্ট রোববারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • চাপা পড়ে যাচ্ছে ইয়াবা গডফাদারদের নাম-দৈনিক ইত্তেফাক
  • সিনহা হত্যায় তদন্ত কমিটির গণশুনানি-প্রথম আলো
  • সৌন্দর্যের বেলাভূমে ‘ক্রসফায়ার’- প্রথম আলো
  • করোনায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের, তৃতীয় বাংলাদেশ-মানবজমিন
  • সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখায় অভিযান, আটক ৪৩-দৈনিক যুগান্তর
  • আবারও বিশ্বে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ২লাখ ৯৪ হাজার ২৩৭ জনের সক্রমণ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব মিলছে না: সিপিডি-দৈনিক সমকাল
  • বঙ্গবন্ধুর তিন খুনি  পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করায় জটিলতা- কালের কণ্ঠ

ভারতের শিরোনাম:

  • কার স্বাধীনতা, কেমনই বা-১৫ আগস্ট নাগরিককে যে বিরাট দুর্ভাবনায় ফেলে--দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • মোদির কাপুরুষতার জন্যই ভারতের জমি দখল করেছে চীন-মোদিকে তোপ রাহুলের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
  • আজ দেশবাসীর বাক স্বাধীনতা আছে কী? পের কেন্দ্রকে খোঁচা সোনিয়ার-দৈনিক আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত কমিটির গণশুনানী শুরু হয়েছে আজ। এ খবরটি সব দৈনিকে এসেছে। আর দৈনিক ইত্তেফাকের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম এরকম-চাপা পড়ে যাচ্ছে ইয়াবা গডফাদারদের নাম-এত ঘটনার মধ্যেও দেদার চলছে ইয়াবা ব্যবসা। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,করোনা মহামারি মোকাবিলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনা নিয়ে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন ব্যস্ত। এতে চাপা পড়ে যাচ্ছে ইয়াবা গডফাদারদের নাম। ইতিমধ্যে গডফাদার ও মাদক ব্যবসায়ীরা চলে এসেছে নিজ নিজ এলাকায়।সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যারা আত্মগোনে ছিল, সেই সব গডফাদার ও মাদক ব্যবসায়ী টেকনাফে গিয়ে দেদার চালাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। ইয়াবার বড় বড় চালান আসছে এখন। সম্প্রতি কয়েক দিনে ইয়াবার যেসব চালান এসেছে, তা বিগত এক বছরেও আসেনি।

নারী খুন ও আত্মহত্যা-হিসাবের খতিয়ানে নেই তাঁরা-দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন

এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘মাইয়্যাটা যদি করোনায় মরত, তাও শান্তি পাইতাম। না জানি কত কষ্ট দিয়া মাইয়্যাটারে মারছে। আমি চাই আসামিগোর ফাঁসি হোক। আর কোনো অসহায় মায়ের যেন সন্তানরে হারাইয়্যা ফালাইতে না হয়।’ ৪০ বছরের বেশি বয়সী কল্পনা আক্তার মুঠোফোনে তাঁর ২০ বছর বয়সী মেয়ে মিশু আক্তারের খুনের বিচার চেয়ে কথাগুলো বললেন।কল্পনা আক্তার একা নন, গত ছয় মাসে প্রায় ৩০০ জন মা এভাবে তাঁদের মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছেন বা তাঁরা হিসাবের খাতা থেকে নেই হয়ে গেছেন। কল্পনা আক্তার যেমন বলছিলেন, আগে তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। এখন আছে এক মেয়ে আর এক ছেলে।

বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ধর্ষণ, পারিবারিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়ে খুন হয়েছেন ২৩৪ জন নারী। আর এ সময়ে বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৬২ জন নারী। সব মিলে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ২৯৬। এ সময়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও খুন হন ২৬ জন নারী।

মহামারি করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি: ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৭ লাখ ৬৯ হাজার ছাড়াল। আর আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ। 

করোনায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের,তৃতীয় বাংলাদেশ-দৈনিক মানবজমিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,করোনা ভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত সার্কভুক্ত দেশগুলো। বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, নেপাল ও আফগানিস্তানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৮৮২ জন। এসব দেশে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মারা গেছেন কমপক্ষে ৬১ হাজার ৩৯৭ জন। সব দেশেই ঘটেছে সংক্রমণ। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ভারতের। ভারতে আক্রান্ত ২৫ লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন কমপক্ষে ৫০ হাজার ৯৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমনের ৬৩ হাজারের বেশি আর এ সময় মারা গেছেন ৯৪৪ জন। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাকিস্তানের। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভয়াবহতার দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এখানে শনিবারের তথ্য অনুযায়ী আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৭৪ হাজার ৫২৫ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ৬২৫ জন। ভারতে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১০০০। এ অবস্থায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বেশির ভাগ দেশেই লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে। 

দৈনিক সমকালের অর্থনীতির খবরে লেখা হয়েছে,জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব মিলছে না বলেছে সিপিডি- গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে, তা বাস্তব পরিস্থিতির সাথে মেলে না। রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এমন মতামত দিয়েছে।

আর প্রথম আলোতে এ খবরটি এভাবে পরিবেশিত হয়েছে যে, প্রবৃদ্ধির তথ্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেছে বলে জানিয়েছে সিপিডি। খবরে বলা হয়েছে,জিডিপি প্রবৃদ্ধি এখন একটি রাজনৈতিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একধরনের মোহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির তথ্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই প্রবৃদ্ধির ব্যাখ্যা করলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

 ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

আজ দেশবাসীর বাক স্বাধীনতা আছে কী? পের কেন্দ্রকে খোঁচা সোনিয়ার-দৈনিক আজকাল

স্বাধীনতা দিবসের দিন দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি ইস্যুতে আবারও মোদি সরকারকে একহাত নিলেন সোনিয়া গান্ধী। শনিবার কড়া অথচ সংযত ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে সোনিয়া বলেন, ‘গত ৭৪ বছরের স্বাধীনতায় আমরা সময়ে সময়ে নিজেদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরীক্ষা দিয়েছি। যা ক্রমাগত পরিণত হয়েছে। আজ মনে হচ্ছে সরকার গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং প্রতিষ্ঠিত সংস্কার থেকে সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান করছে। এটা ভারতীয় গণতন্ত্রের সময়ের পরীক্ষাও বটে।’‌

বর্তমান সময়ে দেশবাসীর বাক স্বাধীনতা, বা নিজেদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা আছে সেই প্রশ্ন তুলে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী বলেন, ‘আজ প্রত্যেক ভারতীয়ের উচিত বিবেক দিয়ে ভাবা স্বাধীনতার অর্থ আসলে কী? আজ কি দেশে লেখা, কথা বলা, প্রশ্ন করা, অমত প্রকাশ করা, চিন্তা করা বা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের স্বাধীনতা আছে?’ শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং বিভিন্ন ভাষা, ধর্মের সংমিশ্রনই নয়, যে কোনও প্রতিকূলতায় একজোট হয়ে লড়াই করার জন্যও বিশ্বে সমাদৃত ভারত, বলে মন্তব্য করেন সোনিয়া‌। স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ সহ গালওয়ান উপত্যকার শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করেন তিনি।

মোদির কাপুরুষতার জন্যই ভারতের জমি দখল করেছে চিন’, মোদিকে-তোপ রাহুলের দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে,প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাপুরুষতার জন্যই চিনারা ভারতের জমি দখল করতে পেরেছে। দেশের সেনাবাহিনীর উপরও বিশ্বাস নেই মোদির। ‘সারেন্ডার মোদি’র পর এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে ‘কাপুরুষ’ বলে তোপ দেগে বসলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর অভিযোগ, চিন ভারতের জমি দখল করেছে। আর মোদি তা স্বীকার পর্যন্ত করতে চাইছেন না।

গতকাল লালকেল্লা থেকে ‘নাম না করে’ চিনকে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। লাদাখে শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা মোদিকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমরা হানাদারদের তাদের ভাষায় জবাব দিয়েছি। LOC থেকে LAC পর্যন্ত যখনই ভারতের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তখনই যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। সীমান্তে দেশের সুরক্ষায় আমাদের জওয়ানরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন।”জবাবে শনিবার রাহুল এক টুইটে লিখছেন, “সেনার সাহসিকতার উপর গোটা দেশের ভরসা আছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত সেনাকে বিশ্বাস করেন না। তাঁর কাপুরুষতার জন্যই চিন আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছে। আর মোদির মিথ্যের জন্যই চিন সেই জমি নিজেদের দখলে রাখতে পারছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৬
 

ট্যাগ