এপ্রিল ০৫, ২০২১ ১৬:০৯ Asia/Dhaka

শ্রোতা/পাঠক! ৫ এপ্রিল সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • লকডাউনের’ প্রথম দিন-গণপরিবহন বন্ধ, রাস্তায় মানুষের ভিড়, অবরোধ, বিক্ষোভ, দুর্ভোগ-মানবজমিন
  • শীতলক্ষায় লঞ্চডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ -সমকাল
  • স্বজনদের আর্তনাদে হৃদয়বিদারক শীতলক্ষ্যার পাড়-ইত্তেফাক
  • মামুনুল হক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তথ্যনির্ভর ও প্রকৃত সত্য : কাদের-কালের কণ্ঠ
  • করোনায় জীবনযাত্রায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা-যুগান্তরমামুনুলকে ঘেরায়-সহিংসতা: সোনারগাঁ থানার ওসিকে প্রত্যাহার–প্রথম আলো

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • সারদার গলার লকেট’, চুঁচুড়ার সভা থেকে বিজেপি প্রার্থীকে আক্রমণ মমতার -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ‘করোনার বাড়বাড়ন্তে মাঝপথে ভোট বন্ধ করা যাবে না’, হুঁশিয়ারি মমতার -সংবাদ প্রতিদিন
  • মাওবাদীদের পাতা ফাঁদে পা!‌ গোয়েন্দা ব্যর্থতা নয়, দাবি কুলদীপের -আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু’টি বিষয়ের বিশ্লেষণে যাব। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. মার্কেট খুলে দেয়ার দাবিতে আজও ঢাকায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ। দৈনিক মানবজমিন এ খবর দিয়েছে। এই বিক্ষোভ কতটা যৌক্তিক?

২. বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য সৌদির সঙ্গে আলোচনা করতে চায় হামাস। এ সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

Image Caption

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন আজ থেকে শুরু হয়েছে।লকডাউন চলাকালীন নাগরিকদের চলাচল ও কাজের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ সময় শুধু জরুরি সেবা ছাড়া প্রায় সবকিছু বন্ধ থাকবে। গতকাল রোববার সরকারের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে লকডাউনে করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৫ই এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ই এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।মহামারি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গত ২৯শে মার্চ যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল, তার আলোকে এসব নির্দেশনা দেয়ার কথা জানানো হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এতে সবধরনের গণপরিবহন এবং শপিংমল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

এদিকে লকডাউনের খবরে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মার্কেট খোলারাখার দাবিতে ব্যবসায়ীরা গতকাল সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে।গতকাল বাড়ি ফেরার মিছিলে ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। অন্যদিকে মানবজমিনের একটি খবরে লেখা হয়েছে, করোনায় জর্জরিত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম টেস্ট বাংলাদেশে, ইরাক-ফিলিস্তিনের চেয়েও কম!

‘লকডাউনের’ প্রথম দিন-গণপরিবহন বন্ধ, রাস্তায় মানুষের ভিড়, অবরোধ, বিক্ষোভ, দুর্ভোগ-মানবজমিন

আন্তঃজেলা বাস-ট্রেন-লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বন্ধ শপিংমল, দোকানপাট। চালু শিল্প-কারাখানা। সীমিত পরিসরে খোলা সরকারি-বেসরকারি অফিস। ঢাকার রাস্তা গণপরিবহন শূন্য। দাপট ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার। রাস্তায় রীতিমতো মানুষের ভিড়। কোথাও কোথাও হালকা যানজট।

দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে চলছে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামলাতে সাত দিনের জন্য জারি করা বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথম দিনে মোটাদাগে এই ছিল দৃশ্যপট। গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন অফিস ও কর্মস্থলগামী মানুষ। পরে পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভ হয়েছে ইসলামপুর ও নিউমার্কেট এলাকায়। ঢাকার বাইরে চাঁদপুরেও বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

গণপরিবহন না পেয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করেন অফিস ও কর্মস্থলগামী মানুষ। এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবার সকাল ৯টার দিকে তারা সড়কে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

অবরোধকারীরা বলেন, সরকারের নির্দেশনার কারণে প্রায় সকল কারখানা খোলা রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় তাদের কর্মস্থল খোলা থাকলেও তারা পরিবহন সংকটে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খুলে দেওয়ার দাবি জানান পুরান ঢাকার ইসলামপুরের ব্যবসায়ীরা। সোমবার) বেলা সাড়ে ১১টায় ইসলামপুর-পাটুয়াটুলি রোডে কয়েকশ’ ব্যবসায়ী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ব্যবসায়ীরা বলেন, গরিব মারার লকডাউন আমরা মানি না, মানবো না। আগে মানুষের পেটে ভাত দিন, তারপরে লকডাউন। গত বছর লকডাউনের কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে ক্ষতি এখনো পূরণ করা সম্ভব হয়নি। সামনে ঈদ, তাই ঈদ উপলক্ষে দোকান খুলে দিতে হবে। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছিলো। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবি জানায়। আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছি।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে দোকানপাট, শপিংমল। কেবল ওষুধ ও খাবারের দোকান খোলা থাকবে। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আজকের দৈনিকগুলোতে বিশেষভাবে আলোচিত খবর-হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের বিষয়টি।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)

হেফাজত নেতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী-তাদের চরিত্র কেমন তা মানুষ দেখেছে-মানবজমিন

সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে সংঘাত-সহিংসতায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আইন তার নিজস্বগতিতে চলবে, এসব অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত

তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই সমস্ত ধর্মের নামে অধর্মের কাজ জনগণ কখনই মেনে নেবে না, জনগণ কখনই সহ্য করবে না। কিছু লোকের জন্য ইসলাম ধর্মের বদনাম হবে এটা কখনই মেনে নেয়া যায় না, জনগণ মেনে নেবে না। জনগণ এগুলো বসে বসে সহ্য করবে না। শুধু হেফাজত তো একা না, হেফাজতের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতও জড়িত এবং তাদের প্রত্যেকটা কর্মকাণ্ডেই তো দেখা যায়। দেশবাসীকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি হেফাজত নেতাদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগুন নিয়ে খেলছেন, এক ঘরে আগুন লাগলে সেই আগুন অন্য ঘরেও চলে যেতে পারে- সেটা কি আপনাদের হিসেবে নেই?এদের চরিত্রটা কী তা বলতে চাই না: হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পার্লারে কাজ করা এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের রিসোর্টে বিনোদন করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই নারীকে মামুনুল হক বউ হিসেবে পরিচয় দিলেও নিজের বউয়ের কাছে বলেছে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিচয় দিয়েছেন। এক নারী নিয়ে অবস্থান এবং সেখানে হেফাজতের ভাঙচুরের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের চরিত্রটা কী তা বলতে চাই না। গত শনিবারই আপনারা দেখেছেন। তাদের চরিত্রটা কি মানুষ দেখেছে। ধর্ম ও পবিত্রতার কথা বলে অপবিত্র কাজ করে ধরা পড়ে। এ প্রসঙ্গে সংসদ নেতা আরো বলেন, সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধরা পড়লো। তা ঢাকার জন্য নানা রকম চেষ্টা করেছে তারা (হেফাজত)। এক নারীকে বউ হিসেবে পরিচয় দেয়। আবার নিজের বউয়ের কাছে বলে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এটা বলেছি। যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে তারা এ রকম মিথ্যা কথা বলতে পারে, অসত্য কথা বলতে পারে? তারা কী ধর্ম পালন করবে, মানুষকে কী ধর্ম শেখাবে? কয়েকদিন আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে, এখন সুন্দরী নারী নিয়ে বিনোদন করতে গেলেন! ইসলাম পবিত্র ধর্ম, সেই পবিত্র ধর্মকে এরা কলুষিত করছে। বিনোদনের এসব অর্থ আসে কোথা থেকে?

মাওলানা মামুনুল হক ও তাঁর স্ত্রী (ফাইল ফটো)

এরা ইসলাম ধর্মের নামে কলঙ্ক: হেফাজত কাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জনগণ কি শুধু এগুলো বসে বসে সহ্য করবে? তারা তো সহ্য করবে না। এখানে কেউ কেউ বলছেন পুলিশ কেন ধৈর্য্য দেখিয়েছে? আমরা ধৈর্য্য দেখিয়েছি, এগুলো বিরত করার চেষ্টা করেছি। কারণ সংঘাতে সংঘাত বাড়ে, আমরা তা চাইনি। আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ভালোভাবে উদ্‌যাপন করতে চেয়েছি। কিন্তু যারা এসব অপকর্ম করেছে, দেশবাসীই এটার বিচার করবে, দেশবাসী দেখবে যে এদের চরিত্রটা কি? হেফাজতের সদস্যদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটু বুঝে নিন কেমন নেতৃত্ব আপনাদের! আগুন লাগিয়ে জ্বালাও-পোড়াও করে বিনোদন করতে গেলেন একটা রিসোর্টে, তাও একজন সুন্দরী মহিলা নিয়ে। এটাই তো বাস্তবতা। অর্থাৎ এরা ইসলাম ধর্মের নামে কলঙ্ক।

মামুনুল হক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তথ্যনির্ভর ও প্রকৃত সত্য : কাদের-কালের কণ্ঠ

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধর্ম ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'হেফাজত নেতার নৈতিক স্খলনজনিত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তথ্যনির্ভর এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটন।'

সোমবার (৫ এপ্রিল) সরকারি বাসভবন থেকে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ধর্ম ব্যবসায়ীদের আঁতে ঘা লেগেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণ ভেবেছে এ লজ্জাজনক ঘটনার পর তথাকথিত নেতারা জনসম্মুখে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে চোরার মায়ের বড় গলা।’

তবে দৈনিকটির অপর দুই খবরে লেখা হয়েছে,

হেফাজতের প্রতিবাদ সভা ‘আমাদের সঙ্গে লাগলে গদি থাকবে না’

হেফাজতের সঙ্গে কেউ সংঘর্ষে জড়ালে তার গদি থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি। রোববার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করার প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সাখাওয়াত হোসেন রাজি বলেন, হেফাজতে ইসলাম জনমানুষের কথা বলে, মজলুম মানুষের কথা বলে। এটা কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল নয়, ১৮ কোটি মানুষের সংগঠন। এখানে সব দলের লোকেরা আছে। যখন থেকে হেফাজতে ইসলাম গঠিত হয়েছে সেদিন থেকেই দেখেছি সারা দেশের মানুষ এই সংগঠনের সঙ্গে রয়েছে। কারণ হেফাজত কখনো চায় না জোর করে গদি দখল করতে। টেন্ডারবাজি করতে।

আমাদের কাজ হচ্ছে যেখানে মুসলিমদের ওপর অত্যাচার হবে সেখানেই আমরা কথা বলবো। যেখানে ঈমান আক্রান্ত হবে সেখানে কথা বলবো। হেফাজত সবসময় ইসলামের পক্ষে কথা বলবে। হেফাজতের সঙ্গে যদি কেউ সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তার গদি টিকবে না। তার গদি থাকবে না।

হেফাজতের প্রতিবাদ

তিনি বলেন, মামুনুল হক ও তার স্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা, তা সত্য নয়। ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা আশা করবো তিনি তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন। কোনো সতী নারীকে অপবাদ দিয়ে একজন নারীর চরিত্র হরণ করা হয়েছে। মামুনুল হককে নিয়ে বাজে সমালোচনা চলছে।

রাজি বলেন, মামুনুল হক তার স্ত্রীকে নিয়ে একটা রিসোর্টে গিয়েছিলেন সেখানে ক্ষমতাসীন দলের বিশেষ করে, ছাত্রলীগ, যুবলীগের লোকেরা তাকে হেনস্তা করেছে, হত্যার চেষ্টা করেছে। তার নামে যে সমস্ত অডিও ক্লিপ বের করা হয়েছে এটা মোটেও সত্য নয়। আমরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেবো।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করতে পারতাম কিন্তু এই করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটা করিনি। আমরা ইচ্ছা করলে কয়েক ঘণ্টার নোটিশে ঢাকায় ৫ লাখ লোকের সমাবেশ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা সেটা করিনি।

হেফাজতের এই নেতা বলেন, জাতি জেনে গেছে কীভাবে গত ২৬শে মার্চ বায়তুল মোকাররমে সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। সেদিন কোনো দলের প্রোগ্রাম ছিল না। সেখানে কোনো ধরনের নেতাও ছিল না। মানুষ নিজেদের অধিকারের জায়গা থেকে সেদিন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে স্লোগান দিয়েছিল। কিন্তু তারা রাস্তায় নামার আগেই সাধারণ জনতার ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা নিয়ে মিডিয়ায় বারবার বলা হয়েছে, সেখানে হেফাজতের তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সেখানে তো মিডিয়ার লোকজন ছিল। রাস্তায় একটা টায়ার জ্বালালেই তাণ্ডব হয়? কিন্তু বাংলাদেশের কোন্‌ দল আছে যারা রাস্তায় বিক্ষোভ করেন না? টায়ার জ্বালায় না? যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতারা রাস্তায় নেমে টায়ার জ্বালায় তখন তো মিডিয়ার লোকজন এটাকে তাণ্ডব বলে না।

যুবলীগ-ছাত্রলীগের নামে থানায় হেফাজতের লিখিত অভিযোগ

ওদিকে সোনারগাঁও প্রতিনিধি জানান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের ওপর হামলার অভিযোগে সোনারগাঁ থানায় গতকাল দুপুরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতার নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। দলের ঢাকা মহানগর ১০ নম্বর অঞ্চলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি ফয়সাল মাহমুদ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সোনারগাঁ থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগটি জমা দেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ৩রা এপ্রিল মামুনুল হক সস্ত্রীক সোনারগাঁ রয়্যাল রিসোর্টে বিশ্রাম নেয়ার সময় রিসোর্টের মালিক শেখ সাইদুর রহমান ও তার কর্মচারীরা তাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন। এ সময় সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মামুনুল হকের ওপর হামলা চালান। মামুনুল হকের গাড়ির চাবি ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, হেফাজতের লিখিত অভিযোগ পুলিশ পেয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাওলানা মামুনুল প্রসঙ্গে আরও কিছু খবর: প্রথম আলোসহ বেশ কয়েকটি দৈনিকে লেখা হয়েছে- মামুনুলকে ঘেরাও সহিংসতা নিয়ে সোনারগাঁও থানার ওসি রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাছাড়া মামুনুলকে নিয়ে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা জজ মিয়ার ছেলে  যুবলীগ নেতা এমাদ আহমেদ ওরফে জয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে মামুনুল হক ইস্যুতে ফেসবুক লাইভে আসা পুলিশের এএসআই গোলাম রাব্বানীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে তিনি সংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছিলেন।

ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

‘করোনার বাড়বাড়ন্তে মাঝপথে ভোট বন্ধ করা যাবে না’, হুঁশিয়ারি মমতার-সংবাদ প্রতিদিন

দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো রেকর্ড গড়ছে মারণ করোনা ভাইরাস । সোমবারই উদ্বেগ বাড়িয়ে দৈনিক সংক্রমণ ১ লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। বাংলার অবস্থাও বিশেষ ভাল নয়। এমনই সংকটজনক পরিস্থিতিতে ৮ দফা ভোট নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, তৃতীয় দফার ভোটের আগের দিন চুঁচুড়া, চণ্ডীতলা, উত্তরপাড়া ও ভাঙড়ের সভা মমতা বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর কথায় বিশ্বাস করবেন না। আর  গুজরাতিরা বাংলার শাসন করবে না, বাঙালিরাই করবে। কেন ৮টি দফায় নির্বাচন? ২ দফাতেই নির্বাচন হয়ে যায়। কী চায় বিজেপি? চালাকি চলবে না। কোভিড হয়েছে বলে বিজেপি বন্ধ করতে চাইবে। কিন্তু এই চালাকি চলবে না, নির্বাচন যখন শুরু হয়েছে, তখন শেষ করতে হবে।

মাওবাদীদের পাতা ফাঁদে পা!‌ গোয়েন্দা ব্যর্থতা নয়, দাবি কুলদীপের -দৈনিক আজকাল

গোয়েন্দা তথ্যে ত্রুটি না কি মাওবাদীদের পাতা ফাঁদে অন্ধের মতো পা দিয়েছিল সিআরপিএফ? না কি অভিযানেই কোনও কৌশলগত ভুল ছিল? ছত্তিশগড়ে শনিবারের ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে সামনে আসছে একের পর এক তথ্য, দাবি, অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ।

সিআরপিএফ কর্তা কুলদীপ সিংয়ের অবশ্য দাবি, ছত্তিশগড়ে আধাসেনার অভিযানে কৌশলগত ত্রুটি ছিল না। ভুল ছিল না গোয়েন্দা তথ্যেও। যদিও অন্য একটি সূত্রের দাবি, মাওবাদীদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিল জঙ্গল যুদ্ধে দক্ষ সিআরপিএফের বিশেষ কোবরা বাহিনী।

অন্য একটি সূত্রের খবর, কম করে ৪০০ মাওবাদী তিনদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল সিআরপিএফ জওয়ানদের বিশাল বাহিনীকে। গাছপালা বর্জিত এলাকায় একরকম কোণঠাসা করেই তাঁদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়েছিল মাওবাদীরা। শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। লুকনোর বা পালানোর পথ পাননি কেউ।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, সিআরপিএফের কাছে খবর ছিল মাওবাদীদের দুই শীর্ষ নেতা মাডভি হিডমা এবং তার সঙ্গী সুজাতা বিজাপুরের কাছে লুকিয়ে আছে। যা আসলে ছিল মাওবাদীদের পাতা ফাঁদ। এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই ভুল তথ্যের ভিত্তিতেই মাওবাদী দমন অভিযান চালায় সিআরপিএফ।

অবশ্য সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং মাওবাদী দমন অভিযানকে ব্যর্থ বলতে নারাজ। তাঁর কথায় ‘যদি গোয়েন্দা তথ্য ভুল হত, তবে বাহিনী অভিযানেই যেত না।

অসমে ইভিএম কাণ্ডের জের! ভোটিং মেশিনের নিরাপত্তা নিয়ে আরও কড়া কমিশন-সংবাদ প্রতিদিন

অসমের ঘটনার জের। এবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের (EVM) নিরাপত্তা নিয়ে আরও কড়াকড়ি করছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সর্বত্র ইভিএমের নিরাপত্তা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার থেকে ভোট কেন্দ্র, সেখান থেকে প্রতিটি ইভিএম স্ট্রং রুমে পৌঁছনো ইস্তক জেলার নির্বাচনী প্রধান বা ডিইও এবং রিটার্নিং অফিসারদের সর্বক্ষণের নজরদারি রাখতে হবে বলে সূত্রের খবর।

গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার ভোটের পর অসমে এক বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি থেকে ভোট হওয়া ইভিএমের হদিশ পাওয়া যায়। তুমুল বিতর্কের মধ্যে কমিশনের তরফে বিবৃতি জারি করে সংশ্লিষ্ট বুথের প্রিসাইডিং অফিসার এবং তিন ভোট আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়। এই ঘটনার জেরে এবার ইভিএমের নিরাপত্তা নিয়ে আরও কড়া কমিশন।

গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই ইভিএম কমিশনের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বৈদ্যুতিন এই ভোটযন্ত্র বাতিল করে ফের ব্যালটে ভোট ফেরানোর দাবিতে সরব হয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। পাশাপাশি ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও একাধিক মহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সেসব অবশ্য পাত্তা না দিয়ে ইভিএমকে আগেই ক্লিনচিট দিয়েছে কমিশন। কিন্তু অসমের ঘটনা নতুন করে বিতর্কে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ