মে ০২, ২০২১ ১৫:৩০ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ২ মে রোববারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • সবার জন্য টিকা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে: প্রধানমন্ত্রী -ইত্তেফাক
  • করোনার প্রতি টিকায় বেক্সিমকোর মুনাফা ৭৭ টাকা-প্রথম আলো
  • ঢাকায় পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভ -যুগান্তর 
  • করোনাকালে জীবিকার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি -সমকাল
  • প্রাণনাশের হুমকি, মুনিয়ার বোনের জিডি-মানবজমিন
  • ঈদের আগে কৃষক রহিমের সর্বনাশ! -কালের কণ্ঠ
  • কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ, মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৯৩ ভাগ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী, অক্সিজেন, ওষুধের চাহিদা-জোগান নিয়েও আলোচনা -সংবাদ প্রতিদিন
  • নিজের মেয়েকেই চাইছে বাংলা! প্রবণতায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন তৃণমূলেরই –আজকাল
  • তৃণমূল এগিয়ে-গণশক্তি
তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। প্রথমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরে যাওয়ার আগে বলে নেই- আজ বাংলাদেশ এবং ভারতের দৈনিকগুলোর প্রধান খবর-ভারতের ৫টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফলের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)

তো এবার বাংলাদেশের ইত্তেফাক ও যুগান্তরের শীর্ষ খবরে লেখা হয়েছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার জন্য টিকা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। 

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,সবার জন্য করোনা ভাইরাসের টিকা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে অসহায় মানুষকে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তিনি  বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় দুর্গত মানুষের পাশে আছে। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার পাশাপাশি দলীয়ভাবেও আমরা মানুষের পাশে আছি।’মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে ঈদ উপহার হিসেবে সাড়ে ৩৬ লাখ মানুষকে এই সহায়তা দেওয়া হবে। দ্বিতীয়বারের মতো হাতে নেওয়া এই সহায়তা জন্য ৯১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রাণনাশের হুমকি, মুনিয়ার বোনের জিডি-মানবজমিন

মুনিয়ার বোনের জিডি

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী নুসরাত জাহান তানিয়া গুম, খুনের হুমকি পাচ্ছেন বলে থানায় অভিযোগ করেছেন। কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় শনিবার তিনি এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা করেছেন তানিয়া। মামলায় বসুন্ধরার এমডি’র বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা তুলে নেয়া এবং মীমাংসা করতে মোবাইল ফোনে হুমকি পাচ্ছেন বলে জিডিতে অভিযোগ করেছেন নুসরাত।

করোনার প্রতি টিকায় বেক্সিমকোর মুনাফা ৭৭ টাকা-প্রথম আলো

ভারত থেকে করোনার টিকা এনে প্রতি টিকায় প্রায় ৭৭ টাকা মুনাফা করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সব খরচ বাদ দেওয়ার পর টিকাপ্রতি এ মুনাফা করেছে কোম্পানিটি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা বাংলাদেশে আমদানির জন্য চুক্তিবদ্ধ একমাত্র প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা। বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট ও কোম্পানিটির মধ্যে সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এ টিকা আমদানি করা হচ্ছে।

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, বেক্সিমকো ফার্মা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ করোনার টিকা আনবে। এ তিন কোটি ডোজ টিকার মধ্যে কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ টিকা এনেছে। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এ টিকা বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশ সরকারকে সরবরাহ করেছে। ছয় মাসের মধ্যে তিন কোটি ডোজ টিকা আনার কথা থাকলেও বর্তমানে ভারত থেকে করোনার টিকা আসা বন্ধ রয়েছে। ভারত সরকার টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় আপাতত দেশে সেরামের কোনো টিকা আসছে না। করোনার টিকা সরবরাহের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি এত দিন কোনো পক্ষ থেকেই প্রকাশ করা হয়নি। ফলে, ভারত থেকে টিকা এনে বেক্সিমকো কত মুনাফা করছে, তার কোনো হিসাবও পাওয়া যায়নি। যদিও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে চুক্তিটি প্রকাশের দাবি করা হয়েছিল।

মতামত হেফাজতের দাপট বাড়াল কে-প্রথম আলো 

সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি তিনি মতামত কলামে লিখেছেন, প্রশ্ন উঠেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারী–কাণ্ডের পর সরকার হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তা নীতিগত, না কৌশলগত? নীতি বা আদর্শগত অবস্থান হলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে হেফাজতের কোনো পর্যায়ে বোঝাপড়া বা সংলাপ হওয়ার কথা নয়। ২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোষিত নারী উন্নয়ন নীতি ও শিক্ষানীতির বিরোধিতা করার মধ্য দিয়ে। গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ যেকোনো নীতির বিরোধিতা করতে পারে, এর পক্ষে জনমত তৈরিরও চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু সংবিধানে ঘোষিত মূল নীতি বাতিল করে কোনো মত বা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার কারও নেই। কিন্তু হেফাজত এমনই এক সংগঠন, যারা ইহলৌকিক আইনকানুন, সংবিধান মানতে চায় না। তাদের ১৩ দফা দাবির মধ্যে একটিও নেই, যা কোনো গণতান্ত্রিক ও আধুনিক রাষ্ট্র মেনে নিতে পারে।

২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলে শাপলা চত্বর–কাণ্ডের পরও সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল। মামলা হয়েছিল। এরপর আমরা দেখলাম, সেই মামলার তদন্তকাজ আর এগোয় না। আটক নেতারা একে একে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এলেন। তাই এবার হেফাজতের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার এবং পুরোনো মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত হওয়া প্রমাণ করে না যে সরকারের নীতিগত অবস্থানের পরিবর্তন ঘটেছে।

মূলত সরকার দ্বিমুখী নীতি নিয়ে এগোচ্ছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘একসময় যে হেফাজতে ইসলামকে খুশি রাখার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেই সংগঠনটিকে নিয়ন্ত্রণে আনাই এখন নীতিনির্ধারকদের অন্যতম লক্ষ্য। আস্থাশীল নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংগঠনটিকে আগের মতো বোঝাপড়ার মধ্যে নিতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে বর্তমান হেফাজতের নেতাদের গ্রেপ্তার, চাপ প্রয়োগ এবং ভেতরে-ভেতরে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চলছে।...সরকার মনে করছে, হেফাজতে পছন্দমতো নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে সংগঠনটি পরবর্তী সময়ে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ জন্য সরকারের একটা পক্ষ প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীসহ তাঁর অনুসারীদের বা অপেক্ষাকৃত উদারপন্থীদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে চাইছে। তবে সরকারের ভেতর আরেক পক্ষ বলছে, আনাস মাদানী বা বাবুনগরী—কোনো পক্ষকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করা যাবে না। তাই কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখতে হবে। (২৮ এপ্রিল ২০২১)

প্রথম আলোর খবর থেকে আরও জানা যায়, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে অভিযানের সময় হেফাজতের তৎকালীন আমির শাহ আহমদ শফী ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসায় আটকা পড়েন। সেখান থেকেই হেফাজতের নেতৃত্বের একটা অংশের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ তৈরি হয়। এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রতিনিধিরা হেফাজত নেতাদের সঙ্গে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বৈঠক করেন। অন্তত তিনজন মন্ত্রী, একজন মেয়র, জন পাঁচেক সাংসদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল হাটহাজারী মাদ্রাসায়।

সরকারের মন্ত্রী-নেতা থেকে শুরু করে সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা কথায় কথায় বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতকে ব্র্যাকেটবন্দী করেন। তাঁরা বোঝাতে চান যে নীতির দিক থেকে এই তিন পক্ষের মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই। কিন্তু সরকারের নীতিকৌশলের ক্ষেত্রে বিস্তর ফারাক। তারা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে যত কঠোর, হেফাজতের বেলায় ততটাই নরম ও আপসকামী।

ঢাকায় পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভ-যুগান্তর

গণপরিবহন চালুসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ মিছিল করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

রোববার সকাল থেকে রাজধানীর সায়েদাবাদ, ফুলবাড়িয়া, গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনালে জড়ো হতে থাকেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল অংশ নেন।

পরিবহন শ্রমিকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে নৌপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করা, সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া এবং সারাদেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত সারা দেশে ২৪৯টি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছ। এর পাশাপাশি আগামী মঙ্গলবার সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের।

ঈদের আগে কৃষক রহিমের সর্বনাশ!-কালের কণ্ঠ

যশোরের কেশবপুরে এক কৃষকের গোয়ালঘর থেকে ৫টি গরু চোরে নিয়ে গেছে। ঈদের আগে ৫টি গরু হারিয়ে ওই কৃষক হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। এতে তাঁর সাড়ে চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার রাতে পৌর শহরের ভোগতীনরেন্দ্রপুর এলাকার কৃষক আব্দুর রহিমের গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে চোরের ৪টি এঁড়ে ও ১টি গাভী চুরি করে নিয়ে গেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আব্দুর রহিম গোয়ালঘরের সামনে গিয়েয়ে দেখেন গোয়ালে গরু নেই। এসময় গোয়ালের গেটের তালা ভাঙা দেখতে পান সবাই। পরে বিভিন্ন হাটে গিয়েও গরুর কোনো সন্ধান করতে পারেননি ওই কৃষক।

কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ, মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৯৩ ভাগ-বাংলাদেশ প্রতিদিন

পদ্মা সেতুর কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পারিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ভায়াডাক্টের সর্বশেষ গার্ডার স্থাপনের মধ্য দিয়ে পুরো সেতুর কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এ পর্যন্ত মূল সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯৩.২৫ ভাগ। নদী শাসন কাজের অগ্রগতি শতকরা ৮৩ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৫.৫ ভাগ।

আজ সকালে সিলেট জোন, বিআরটিসি ও বিআরটএ'র কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় একথা জানান। মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

ওবায়দুল কাদের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী ২০২২ সালের জুন মাসে পদ্মাসেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়

পশ্চিমবঙ্গ ও অন্য আরো চারটি বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকদফার ফলাফল গণনা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯২টি আসনের ভোট গণনা আজ শুরু হয় ভারতীয় সময় সকাল আটটা থেকে। বিধানসভার মোট আসন ২৯৪টি থাকলেও নির্বাচনের মধ্যে দুই প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় দুটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হয়। ফলে, আজ ২৯২টি আসনের ভোট গণনা শুরু হয়েছে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই।

নন্দীগ্রাম নিয়ে টানাপোড়েন যেন থামছেই না

সতেরো রাউন্ড গণনা শেষে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, ১২০০ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে খবর আসে নন্দীগ্রামে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে গণনা বন্ধ আছে। তার পরই খবর মেলে ১৯৫৩ ভোটে জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।  সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, “নন্দীগ্রামের মানুষের রায় মাথা পেতে নিলাম। তবে আমি আদালতে যাব।” তবে নন্দীগ্রামে কে জিতেছেন তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। 

ইতিমধ্যে তৃণমূল জয়ের পথে থাকায় বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বিজেপির পরাজয় মেনে নিয়েছেন।

চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে কৈলাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জয় হলে সেটা মমতারই জয় হয়েছে।’ তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, বাবুল সুপ্রিয় ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পরাজয়কে তিনি মেনে নিতে পারছেন না।

ইতিমধ্যে তৃণমূল জয়ের পথে থাকায় বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বিজেপির পরাজয় মেনে নিয়েছেন।

চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগে কৈলাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জয় হলে সেটা মমতারই জয় হয়েছে।’ তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, বাবুল সুপ্রিয় ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পরাজয়কে তিনি মেনে নিতে পারছেন না।

এদিকে মমতার এই বিপুল বিজয়ে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব মমতাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘বিজেপির ঘৃণার রাজনীতিকে হারালেন মমতা। অভিনন্দন মমতাকে।’

কোনো কোনো দৈনিক লিখেছে,পশ্চিমবঙ্গে মোদি-অমিত ম্যাজিক টিকল না।মোটামুটি অর্ধেক ভোট গণনার পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায় শুধু হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপিকে ভোট দেয়নি। যে রাজ্যে মোটামুটি ৭৫ শতাংশ হিন্দুর ভোট, সেখানে হিন্দু বাঙালি যদি বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিত, যেমনটা তারা দিয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, তবে নিঃসন্দেহে বিজেপি এ পর্যায়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকত। 

তিন রাজ্যে দৌঁড়ে পিছিয়ে বিজেপি। আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত পদুচেরি ছাড়া বাকি তিন রাজ্যে পিছিয়ে রয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আসামের পরে বিজেপি ভালো অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে তামিলনাড়ু ও কেরালায় বিজেপি জয়ের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। খবর এনডিটিভির।

দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে, আসামে ১২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৮১ আসনে। এরপর রয়েছে কংগ্রেসের অবস্থান।

পশ্চিমবঙ্গে বাম কংগ্রেসের বেহাল দশার চিত্র ফুটে উঠেছে। 

বিজ্ঞানীদের সতর্কতা উপেক্ষা করেছে ভারত সরকার, ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৪ লাখের বেশি-রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিভিন্ন দৈনিকে লেখা হয়েছে,করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তার নিয়ে বিজ্ঞানীদের সতর্কতাকে উপেক্ষা করেছে ভারত সরকার। সরকারের গঠন করা বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টাদের একটি ফোরাম এ বিষয়ে মার্চের শুরুতে কর্মকর্তাদের সতর্ক করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, করোনা ভাইরাসের নতুন এবং অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঘটছে ভারতে। বিজ্ঞানীদের ওই ফোরামের অংশীদার ৫ জন বিজ্ঞানী এ কথা বলেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে। ওদিকে ২৪ ঘন্টায় ভারতে করোনা সংক্রমণে নতুন বিশ্বরেকর্ড করেছে। এই সংখ্যা এখন ৪ লাখ ১ হাজার ৯৯৩। বিজ্ঞানীদের ওই গ্রুপের চারজন বলেছেন, তাদের দেয়া সতর্কতা সত্ত্বেও ভাইরাসের বিস্তার বন্ধে কঠোর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি সরকার। মাস্ক ছাড়াই লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব এবং রাজনৈতিক র‌্যালিতে যোগ দিয়েছেন।এসব র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা এবং বিরোধী দলীয় রাজনীতিকরা। এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদির কৃষিনীতি পরিবর্তনের প্রতিবাদে দিল্লিতে অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ করেন কয়েক লাখ কৃষক। তারা সেখানে ক্যাম্প করে অবস্থান করতে থাকেন।

উল্লেখ, বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। গত বছর প্রথম দফার চেয়ে এবারের সংক্রমণের ভয়াবহতা অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এতটা বিস্তার হয়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য। আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত হয়েছিল বৃটেনে। আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রুপের টেলিভিশন চ্যানেল এবিপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতে এরই মধ্যে একদিনে নতুন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এটা একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের বিশ্বরেকর্ড। ২০১৪ সালে ভারতে ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর ভারত যেসব বড় সঙ্কট মোকাবিলা করেছে তার মধ্যে করোনা ভাইরাসের এই ত্বরিত সংক্রমণ সবচেয়ে বড় সঙ্কট।

করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী, আলোচনা অক্সিজেন, ওষুধের চাহিদা-জোগান নিয়েও-সংবাদ প্রতিদিন

আজ সকালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবও। দেশে অক্সিজেন, ওষুধের চাহিদা এবং জোগান নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দেশের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।

দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক জন চিকিৎসক অক্সিজেনের অভাবে এবং মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যায় মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গোটা দেশ কার্যত বিপর্যস্ত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাসপাতালের বেড এমনকী অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে। এদিকে ৪ রাজ্য এবং পুদুচেরিতে ভোটের প্রচারে একের পর এক মিছিল মিটিংয়ের ফলে আরও বেশি করে করোনা ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একের পর এক ছোট বড় সভা করেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর এই ভূমিকার সমালোচনা হয়। শুধু তাই নয় তিনি দেশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার থেকে ভোট প্রচারে বেশি ব্যস্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের দাবিও উঠতে শুরু করে।

মুহূর্তে ধ্বংস হবে করোনা, ভাইরাস রোধক এই অনন্য মাস্ক আবিষ্কার আইআইটি-র গবেষকদের-আজকাল

করোনার সুনামিতে বেসামাল গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে এক বিশেষ ধরনের মাস্ক তৈরি করলেন একদল আইআইটি মান্ডির গবেষক। এমন এক মাস্ক তৈরি করলেন একদল গবেষক যা শুধুমাত্র ভাইরাসকে শরীরে প্রবেশের থেকে আটকাতে সাহায্যই করে না, মাস্কের উপর চলে আসা মারণ ভাইরাসকে মেরেও ফেলতে সক্ষম। এই গবেষণা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে চলেছে বলে দাবি আইআইটি মান্ডির এক দল গবেষকের। সম্প্রতি আমেরিকার একটি জার্নাল ‘আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি- অ্যাপ্লায়েড মেটেরিয়ালস অ্যান্ড ইন্টারফেসেস’-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা।স্কটির প্রধান উপাদান ‘মলিবডেনাম ডাইসালফাইড'। এই বিশেষ উপাদান দিয়ে একটি চুলের থেকেও কয়েক গুণ পাতলা একটি আস্তরণ তৈরি করা হয়েছে। যা সাধারণ মাস্কের ওপরে লাগিয়ে দিচ্ছেন গবেষকরা। এই উপাদানটিরই নাকি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল গুণাগুণ রয়েছে। ১০০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটারের কোনও ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়া এই আস্তরণের উপর চলে এলে নিমেষে তাকে মেরে ফেলবে ওই আস্তরণ। কোভিড ১৯ ভাইরাসটি ১২০ ন্যানোমিটারের। তাই এই উপাদানের সংস্পর্শে এলে কোভিডের ভাইরাস নিমেষেই মারা যাবে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, মলিবডেনাম ডাইসালফাইডের এই আস্তরণ জীবাণুনাশে দু’রকম ভাবে কাজ করে। এর উপরিতল অত্যন্ত ধারালো। ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় দেখলে মনে হবে ঠিক যেন অনেকগুলি ছুড়ি পর পর রাখা রয়েছে।এছাড়াও সূর্যের আলোয় অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে এই উপাদান। যা অনেক জীবাণুকে মারতে সক্ষম। 

এই ভাইরাসের সুবিধেও অনেক। কিছুক্ষণ রৌদ্রে রেখে দিলেই হবে জীবাণুমক্ত। এই মাস্ক এর বিশেষত্ব হলো এই যে বার বার সাবান জলে ধুলেও এই মাস্কের কাজে কোনও বিলম্ব হয় না। এই মাস্ক ৬০ বার ধোয়ার পরও প্রথমের মতোই কাজ করতে সক্ষম। এই মাস্ক যে উপাদান দিয়ে তৈরি সেই উপাদান দিয়ে পিপিই-ও তৈরি করা যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন তারা। এমনকি এই মাস্কে শ্বাস নিতেও কোনও অসুবিধা হয় না। দামও মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে গবেষণার পরই কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে দেশের বাজারে আসতে চলেছে এই মাস্ক।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ