দুই তিন গুণ বাড়তি দামে কিনতে হবে চীনের করোনার টিকা!
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ৫ জুন শনিবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- ঢাকার নদীদূষণ রোধ ‘হচ্ছে–হবে’তে বন্দি -প্রথম আলো
- ভারতের ছায়াতলে আর নেই বাংলাদেশ -মানবজমিন
- সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে বিক্রি করে দেন ঠিকাদাররা-তদারকিতে গাফিলতি, কাজের কাঙ্ক্ষিত মান নিয়ে প্রশ্ন - ইত্তেফাক
- বাড়তি দামে কিনতে হবে চীনের টিকা!-কালের কণ্ঠ
- বৈধতা পাচ্ছেন ১৪ হাজার ১৪১ বীর মুক্তিযোদ্ধা– যুগান্তর
- জামা-জুতা-ব্যাগ কিনতে টাকা পাবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা -বিডি প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- কতটা পরিবর্তন? দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠক, তৃণমূল ভবনে এলেন মমতা, অভিষেক -আনন্দবাজার পত্রিকা
- ‘অতিমারী না সামলে কৃতিত্ব নিতেই ব্যস্ত ছিল সরকার’, কেন্দ্রকে বিঁধলেন অমর্ত্য সেন -সংবাদ প্রতিদিন
- মমতা সাক্ষাতে রাজ্যে আসছেন রাকেশ টিকাইত, দিল্লি টার্গেটে ঝাঁঝ বাড়াবে কৃষক আন্দোলন? –আজকাল
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. চুপি চুপি কালোটাকার সুযোগ- এটি দৈনিক প্রথম আলোর একটি শিরোনাম। খবরের শুরুতে বলা হয়েছে, ঢালাও কালোটাকার সুযোগ শেষ হচ্ছে ৩০ জুন। তবে আয়কর অধ্যাদেশে শিল্প খাতে কালোটাকার সুযোগ এখনো আছে। ফ্ল্যাটও কেনা যাবে। কী বলবেন আপনি?
২. ইসরাইলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে আবার যুদ্ধ শুরু হবে বলে হামাস হুমকি দিয়েছে। তাদের কী আরো একটি যুদ্ধ করার ক্ষমতা আছে?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:
সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে বিক্রি করে দেন ঠিকাদাররা-তদারকিতে গাফিলতি, কাজের কাঙ্ক্ষিত মান নিয়ে প্রশ্ন-ইত্তেফাক
সারাদেশে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে গ্রাম-গঞ্জ-শহর-বন্দর-জনপদজুড়ে। এসব প্রকল্পের লক্ষ্য অর্জনে বড় অন্তরায় হয়ে উঠেছে কার্যাদেশপ্রাপ্ত লাইসেন্সধারী ঠিকাদারদের কাজের হাতবদল বাণিজ্য। প্রভাব খাটিয়ে কাজ পাওয়ার পর আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ঠিকাদাররা দ্বিতীয় পক্ষের কাছে তা বিক্রি করে দেন। দ্বিতীয় পক্ষ অধিক টাকায় বিক্রি করে তৃতীয় পক্ষের কাছে। এভাবেই হচ্ছে হাতবদল। তৃতীয় পক্ষ লাভ করতে গিয়ে কাজের সঠিক মান ধরে রাখতে পারছে না। এতে মূল ঠিকাদার প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের ’ঘুষ’ দিয়ে বাজেটের বেশিরভাগ টাকা তুলে নেন। সাব-ঠিকাদার সময়মত টাকা না পাওয়ায় সময়ক্ষেপন করেন। এসব কাজে সংশ্লিস্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তদারকিতে গাফিলতির খবর প্রায়শ খবরের কাগজে প্রকাশিত হচ্ছে।প্রায় প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন কাজ যেন সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের তেলেসমাতিতে বন্দি। ডিজিটাল পদ্ধতি এবং ই-টেন্ডার কোনো কাজে আসছে না; টাকা খরচ করে জি কে শামীম বা মিঠু সিন্ডিকেটের মতো ঠিকাদাররা কাজ বাগিয়ে নিয়ে বিলিবণ্ঠন আলোচনার পাদপ্রদীপে আসে। টেকসহ কাজ না হওয়ায় এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে। দেখা যায়,পথে নামলেই বিড়ম্বনা! নির্মানের কিছু দিনের মধ্যেই খানাখন্দে অনেক সড়ক হয়ে যায় মৃত্যুফাঁদ! কাজ অসমাপ্ত করে ফেলে রাখছেন ঠিকাদার বা তাদের সাব-কন্টাক্টররা। অনেকে কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়েছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই জনভোগান্তি। জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হওয়ায় মূল ঠিকাদার কাজ না করে সাব কন্ট্রাক্টে অন্যদের কাজ দিয়ে দেয়ায় সংকট তীব্র হচ্ছে। হাত বদল এবং নানা অবৈধ লেনদেনে উন্নয়ন প্রকল্পের একটি অংশ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে।সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাব-কন্ট্রাক্টের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের যোগ্যতা যাছাই বাছাই করার সুযোগ থাকে না। মূল ঠিকাদারকে যত বেশি ছাড় দেয়া যাবে সেই সাব কন্ট্রাক্টরই কাজ পাবেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতেও প্রদান করতে হয় দুই থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ। এতে করে বাকি সত্তর শতাংশ অর্থ দিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে ওঠে। অপরদিকে কাগজে পত্রে যেহেতু মূল ঠিকাদারই থাকে তাই বিল হয় মূল ঠিকাদারের নামে। মূল ঠিকাদার নানা পন্থায় প্রকল্পের বিল তুলে নেন। এতে সাব কন্ট্রাক্টর অনেক সময়ই অর্থের অভাবেও প্রকল্পের কাজে গতি আনতে পারেন না।
এদিকে রাস্তাঘাট, ব্রিজ,কালভার্ট অফিস ভবন, কোর্ট কাচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ভবন- সবকিছুই নির্মিত হয় ঠিকাদার উপঠিকাদারদের মাধ্যমে? দেখা যায়,কেবল কাজ হাতবদলই নয়,আরো চলছে ঠিকাদারী লাইসেন্স ভাড়ার রমরমা ব্যবসা। অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিয়ে লাইসেন্সধারীরা আবার অন্যদের ভাড়া দিয়ে দেয়। এভাবেই লাইন্সেন্স ভাড়া দিয়ে টাকা কামিয়ে যাচ্ছেন তারা। এসব ঠিকাদাররা যে দলই ক্ষমতায় যায় তাদেরই তোষণ করে চলে। প্রয়োজনে দলও বদল করে ফেলে যদি তারা বুঝে দল বদলে ঠিকাদারী ব্যবসায় বেশি লাভবান হবে?
জানা গেছে, বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলায় ৪৯২টি উপজেলা রয়েছে ৪৯২ টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার,প্রকল্প কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী তাদের রয়েছে আলাদা আলাদা অফিস ও বেতনভোগী জনবল। এসব জনবল থাকতে তবে কেন ঠিকাদার ও উপঠিকাদার প্রথা, টেন্ডার বেচাবিক্রির বানিজ্য এই প্রশ্ন সচেতন মহলে।কোনো কোনো দপ্তর-সংস্থার কেনাকাটা পুরোপুরি ই-টেন্ডারিংয়ের আওতায় এখনো আসেনি। গুটিকয়েক ঠিকাদার শুধু গণপূর্ত অধিদপ্তর নয়, সরকারের প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থায় কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন। এর মধ্যে সড়ক ও জনপথ (সওজ), শিক্ষাপ্রকৌশল (ইইডি), স্বাস্থ্য প্রকৌশল (এইচইডি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) অধিদপ্তর, বিদ্যুত্ উন্নয়ন ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব ঠিকাদার সবচেয়ে বেশি কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন।
একসঙ্গে দুটির বেশি কাজ পাবেন না ঠিকাদার
একজন ঠিকাদার একসঙ্গে দুটির বেশি কাজ পাবেন না। কোনো ঠিকাদার যদি ওই দুটি কাজ সময়মতো শুরু ও শেষ করতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে আরও কাজ পাবেন। এ ছাড়া একজন ঠিকাদার এক অর্থবছরে পাঁচ-ছয়টির বেশি কাজ পাবেন না। সরকারি ক্রয় আইন (২০০৬) ও সরকারি ক্রয় বিধিমালা (২০০৮) সংশোধনে এ প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দেখানো হয়েছে, কোনো ঠিকাদার একই সময়ে একাধিক কাজ পেলে অনেক সময় কাজ বিক্রি করে দেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ হয়; কাজের গুণগত মানও সঠিক থাকে না। এই আইন ও বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামসহ কাজের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।কোনো ঠিকাদারকে একইসঙ্গে একাধিক প্রকল্পের কাজ দেওয়া যাবে না। চলমান প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে তারপর ওই ঠিকাদারকে অন্য কাজের নির্মাণাদেশ দেওয়া যেতে পারে।
ঢাকার নদীদূষণ রোধ ‘হচ্ছে–হবে’তে বন্দী-প্রথম আলো
বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ। পরিবেশবাদী ও নদী গবেষকদের কথা, ঢাকার নদীর প্রাণ ফেরাতে এখনই জোর তৎপরতা দরকার।রাজধানীর সদরঘাট থেকে গাবতলী রুটে একসময় ১২টি ওয়াটার বাস চলত, এখন সেখানে আছে মাত্র ২টি। এই নৌপথে ওয়াটার বাসগুলোর চলাচল দেখভাল করত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ওয়াটার বাস বন্ধ করে দেওয়ার প্রধান কারণ যাত্রী কম; আর যাত্রী কম হওয়ার কারণ, নদীর পানির দুর্গন্ধ। এই ভয়াবহ গন্ধে কেউ ওয়াটার বাসে উঠতে চায় না।’ পানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলছিলেন, ‘বুড়িগঙ্গার প্রাণ বলে কিছু নেই।’
ঢাকার গা ঘেঁষে থাকা বুড়িগঙ্গার দূষণ দিন দিন বাড়ছে। শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, আশপাশের তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরীরও একই হাল। এসব নদ–নদীতে জলজ প্রাণ ধারণ করার জন্য পানির মান যা থাকা উচিত, তার চেয়ে ঢের কম। মাঝে গত বছর করোনারা কারণে লকডাউনের সময় কিছু এলাকার পানির মানের উন্নতি হয়েছিল। এখন সেই আগের হাল।
নদীর দূষণকারী হিসেবে সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানের দায় বর্তায়, সেগুলোর একে অপরের প্রতি দোষ চাপানোর চর্চা এখনো বন্ধ হয়নি। কোনো কোনোটি বলছে, দূষণ বন্ধে অন্তত এক দশক অপেক্ষা করতে হবে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘বাস্তুসংস্থান বা প্রতিবেশের পুনরুদ্ধার’। প্রতিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নদী। পরিবেশবাদী ও নদী গবেষকদের কথা, এভাবে দশকের অপেক্ষা নয়। ঢাকার নদীর প্রাণ ফেরাতে এখনই জোর তৎপরতা চাই।
দাম জানানোর খেসারত-বাড়তি দামে কিনতে হবে চীনের টিকা!-কালের কণ্ঠ
প্রতিডোজ ১০ ডলার করে চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ সিনোফার্মের টিকা কিনবে বাংলাদেশ—কভিডের টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে গত ২৭ মে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এই ঘোষণা ছিল সাধারণ জনগণের জন্য স্বস্তির বার্তা। কিন্তু এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয় শ্রীলঙ্কায়। কারণ ওই দেশটি চীনের কাছ থেকে একই টিকা কিনছে প্রতি ডোজ ১৫ ডলার হিসাবে। কেন বাংলাদেশের চেয়ে পাঁচ ডলার বেশি দিয়ে টিকা কিনতে হচ্ছে, তা নিয়ে জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কার সরকার। তারা যোগাযোগ করে শ্রীলঙ্কায় চীন দূতাবাস ও সিনোফার্মের সঙ্গে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে কী দামে টিকা কিনবে, তা গোপন রাখার শর্ত ছিল চুক্তিতে। প্রতি ডোজ টিকা কত দামে কিনছে, তা প্রকাশ করার মাধ্যমে কার্যত চুক্তির বরখেলাপ করা হয়েছে। আর এর কারণ জানতে চেয়ে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে চীন। বিষয়টি এত জটিল হয়ে পড়েছে যে সিনোফার্মের টিকা সরবরাহ নিয়েও নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে। একইভাবে প্রভাব পড়তে পারে প্রতি ডোজ টিকার দামেও। এখন বাংলাদেশকে প্রতিডোজ টিকা ১৫ ডলারে কিনতে বলা হচ্ছে। কারণ চীনের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, দাম প্রকাশ করা হলে বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। কিন্তু আমাদের অবস্থা খুব বাজে হয়েছে। আমরা ভবিষ্যতে এই দামে আর টিকা কিনতে পারব না। এখন তারা অন্য দেশে যে দামে বিক্রি করে সেই দামে আমাদের কিনতে হবে। দ্বিগুণ, তিনগুণ দাম পড়বে।’
জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে চীনকে জানিয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে এটি গণমাধ্যমে আসেনি। তবে চীন ওই চিঠির উত্তর এখনো দেয়নি
বাংলাদেশে সিনোফার্মের টিকার দাম প্রকাশ হওয়ায় চীন বিরক্তি প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। চীন ও বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত চুক্তি অনুযায়ী টিকার বিক্রয়মূল্য প্রকাশ না করার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল।
বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের মিল নেই-সিপিডি-মানবজমিন
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মনে করে, সামষ্টিক অর্থনীতির কাঠামোর বাস্তবতার সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো মিল নেই। চিন্তার সঙ্গে বরাদ্দের মিল দেখা যায়নি। জীবন ও জীবিকার যে কথা বলা হয়েছে তার স্বচ্ছ কোনো রূপরেখা নেই। স্বাস্থ্য, কৃষি ও কর্মসংস্থানে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়ার কথা, প্রস্তাবিত বাজেটে তা দেয়া হয়নি। সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো দুর্বল।
গতকাল ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ সিপিডির পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ সময় সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ফাহমিদা খাতুন বলেন, বলা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাবো। কিন্তু এখানে কী ধরনের সংস্কার দরকার, কী ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা দরকার এবং কীভাবে করবো, সেটার কোনো সঠিক ও স্বচ্ছ রূপরেখা বাজেটে নেই।
যাঁতাকলে মধ্যবিত্ত-মানবজমিনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,
লাখো পরিবার করোনায় বিপদগ্রস্ত ও দিশাহারা হয়েছে। আয় কমেছে। কর্মসংস্থান হারিয়েছেন অনেকে। চাকরি বা ব্যবসা করে জীবন চলতো এমন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার করোনায় অসহায় হয়ে পড়েছে। আর যারা এখনো টিকে থাকার লড়াই করছেন তাদের সামনেও রয়েছে অনিশ্চিত এক সময়। বড় চ্যালেঞ্জ ব্যয় সামলে সামনের দিনগুলোতে টিকে থাকার। এমন অবস্থার মধ্যেই মহামারিকালের দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ৬ লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এই বাজেট অনেকটা গতানুগতিক হলেও ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বেশকিছু ইতিবাচক উদ্যোগ রয়েছে বাজেটে। আবার দরিদ্র ও অতিদরিদ্রের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এটি এখন লাখো কোটির ঘরে। কিন্তু মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এই শ্রেণিই মূলত দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কারোনার আগে থেকেই মধ্যবিত্ত শ্রেণি চাপের মধ্যে রয়েছে। নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ নানা খরচের চাপে তাদের ত্রাহি অবস্থা। এ অবস্থায় করোনা এক বড় অভিশাপ হয়ে আসে এই শ্রেণির মানুষের জন্য। বিশেষ করে মহামারির সময়ে সরকারি ও সামাজিক নানা উদ্যোগে দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষ কিছুটা হলেও সহায়তা পাচ্ছেন। তবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ না পারছেন চলতে, না পারছেন হাত পাততে।
জাতীয় সংসদে পেশ করা বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য তেমন কোনো সুখবর আসেনি। বরং তাদের আশঙ্কা বাজেটের পর স্বাভাবিকভাবেই কিছু পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়ে। এই বাড়তি মূল্য প্রকারান্তরে সবাইকে দিতে হবে। এতে নতুন করে চাপ বাড়বে জীবন-জীবিকায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন এক বড় চ্যালেঞ্জ। বাজেটে মিশ্রভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য দিকনির্দেশনা রয়েছে। তবে মধ্যবিত্তের জন্য কোনো নির্দেশনা নেই। বাজেটের পর এই মধ্যবিত্ত শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ পণ্যের দাম ও সেবার মূল্য বাড়লে সবাইকে তা পরিশোধ করতে হবে। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাজেটের পর ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারতের ছায়াতলে আর নেই বাংলাদেশ-মানবজমিন
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৯ ভাগ। মাথাপিছু আয় ধরা হয়েছে ২২২৭ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধি ভারতের জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে মাথাপিছু আয় ১৯৪৭ ডলার। বাংলাদেশে প্রত্যাশার চেয়ে উচ্চ মাত্রায় রেমিটেন্স আসার ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) পর্যালোচনা করেছে বিশ্বব্যাংক। আগে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস করা হয়েছিল শতকরা ১.৭ ভাগ। তা পর্যালোচনায় ধরা হয়েছে শতকরা ৩.৬ ভাগ। কয়েক বছরে বাংলাদেশ নক্ষত্রের মতো জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যক্ষ করেছে। ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে শতকরা ৮.৪ ভাগ।
যাত্রীবেশে ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী ওরা-মানবজমিন
প্রথমে তারা যাত্রীবেশে মাইক্রোবাস ভাড়া করে। পরে সুযোগ-বুঝে চালকের হাত-পা বেঁধে ফেলে। সুবিধাজনক স্থানে চলন্ত মাইক্রো থেকে চালককে ফেলে দেয়। এমনই ভয়ঙ্কর গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। নরসিংদী ও কুমিল্লার একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ছয় ছিনতাইকারী হলো- মীর মিজান মিয়া, হাবিব মিয়া, ফারুক, কামাল মিয়া, আলামিন ও মোবারক। আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ছিনতাইকারী এই চক্রের তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি:
সকলের টিকাকরণের আগেই আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ! আশঙ্কা কেন্দ্রের-সংবাদ প্রতিদিন
অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউ। গত এপ্রিল থেকে যেভাবে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুহার আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, সেই গতিতে অনেকটাই রাশ টানা গিয়েছে। কিন্তু এখনই সাবধান না হলে ফের বড়সড় সমস্যার সামনে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করছেন নীতি আয়োগের (Niti Aayog) সদস্য (স্বাস্থ্য) ডা. বিনোদ পল। তিনি জানিয়েছেন, মানুষ যদি গা-ছাড়া মনোভাব নিয়ে থাকে তাহলে অচিরেই দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ।
‘অতিমারী না সামলে কৃতিত্ব নিতেই ব্যস্ত ছিল সরকার’, কেন্দ্রকে বিঁধলেন অমর্ত্য সেন-সংবাদ প্রতিদিন
করোনা সংক্রমণকে রোখার জন্য পদক্ষেপ না করেই নিজেদের কাজের কৃতিত্ব আদায় করতে ব্যস্ত ছিল কেন্দ্র। এই ‘সিজোফ্রেনিয়া’র ফলেই দেশজুড়ে এমন ভয়াবহ চেহারা ধারণ করেছিল সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। এভাবেই মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে আক্রমণ শানাতে দেখা গেল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে শুক্রবার ‘রাষ্ট্রীয় সেবা দল’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়েই একথা বলেন তিনি। এদিকে দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে,পরিবেশরক্ষায় সারা পৃথিবীর কাছে দৃষ্টান্ত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে ভারত। শনিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এমনই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মমতা সাক্ষাতে রাজ্যে আসছেন রাকেশ টিকাইত, দিল্লি টার্গেটে ঝাঁঝ বাড়াবে কৃষক আন্দোলন?-আজকাল
দিল্লির কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নতুন সমীকরণ সামনে আসছে। আগামী ৯ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করতে আসছেন কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকাইত। একুশের বিধানসভা ভোটে তৃতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসায় তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে রাজ্যে আসছেন তিনি। আপাতভাবে সেটিই মনে হলেও এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজ্যের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে দিন, নির্মলাকে চিঠি অমিতের-আজকাল
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়িয়েছে তৃণমূল। আর এবার পশ্চিমবঙ্গের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নির্মলা সীতারমণকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কে চিঠি দিয়ে অমিত মিত্র প্রশ্ন করেন, করোনা আবহে ২০২০-এর এপ্রিল থেকে ২০২১-এর জানুয়ারি এই ১০ মাস ধরে রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রয়েছে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।