শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচিতে ফখরুল ও হানিফ যা বললেন
(last modified Tue, 14 Dec 2021 07:48:47 GMT )
ডিসেম্বর ১৪, ২০২১ ১৩:৪৮ Asia/Dhaka

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সামাজিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের  জনগণ।

আজ (মঙ্গলবার) সকালে রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালেহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী দেশের মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে নেয়া হয়েছে জাতীয় কর্মসূচি। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

 

২৬ মার্চের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পুর্নাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে

মঙ্গলবার সকালে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পুর্নাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে করোনাভাইরাসের কারণে এ কাজে কিছুটা দেরি হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার দায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সর্বোচ্চ ত্যাগের উদ্দেশ্যে এখনো সফল হয়নি: জাতীয় পার্টি

তাছাড়া সরকারের সহযোগী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের আজ সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন,  বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল  মুক্তিযুদ্ধে মূল চেতনা।  কিন্তু স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও আমরা বৈষম্য দূর করতে পারিনি। এখনো আমাদের সম্পদ বিদেশে পাচার হচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যমে আমরা জানতে পারি দেশ থেকে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যাচ্ছে। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের আত্মত্যাগ ও মা-বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময় এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সর্বোচ্চ ত্যাগে যে উদ্দেশ্যে, তা এখনো সফল হয়নি।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এখনও পাইনি : মির্জা ফখরুল

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে লক্ষ্যের জন্য একাত্তরে লাখ লাখ মানুষ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল সেটি এখনও পূরণ হয়নি ।

ফখরুল বলেন, এ বছর আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু করেছিলাম, সেই লক্ষ্য-গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি।  

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল, তা ভূলুণ্ঠিত করে এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। 

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতার অভিযোগ, শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।  তারা অসংখ্য মানুষকে খুন করেছে, গুম করেছে।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রকৌশলীসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।  জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।

মির্জা ফখরুল এদিন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফখরুল।  

এ সময় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মাহবুব-উল আলম হানিফ

৭১-এর হত্যাযজ্ঞের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাইতে হবে: হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ১৯৭১ সালের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।

মঙ্গলবার রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

হানিফ বলেন, ‘গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনো ক্ষমা চায়নি। আমরা আশা করি, গণহত্যার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে পাকিস্তান।’

জাতির সূর্য সন্তানদের যারা হত্যা করেছিল, তাদের বিচার হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঠিক পরাজয় মেনে আত্মসমর্পণের পূর্বক্ষণে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা মাফিক সহস্রাধিক বাঙালি বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করলো হানাদার বাহিনী।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, পরাজয় সুনিশ্চিত ঠিক তখনই তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য এবং জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যা করলো। সেদিন রাজাকার, আলবদর দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।

তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা যারা বাংলাদেশে আছে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য জাতির প্রতি আহ্বান জানাই।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৪

 

 

ট্যাগ