মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: শেখ হাসিনা
(last modified Thu, 23 Dec 2021 12:03:22 GMT )
ডিসেম্বর ২৩, ২০২১ ১৮:০৩ Asia/Dhaka
  • যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ
    যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহ’র সঙ্গে অগ্রধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিসহ (পিটিএ) দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগ উন্নয়নে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (বৃহস্পতিবার) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক সংলাপ, মালদ্বীপ সরকারের কাছে ১৩টি সামরিক যান হস্তান্তর এবং কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সইয়ের পর এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পিটিএসহ পারস্পরিক বিনিয়োগ সুবিধার জন্য দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সুরক্ষার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, "সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে এখনো পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি। তবে আমি এ কথা জানাতে পেরে আনন্দিত, আমরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক বিষয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের আগের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে এ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছি।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগ উন্নয়ন নিয়ে প্রেসিডেন্ট সলিহের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সংলাপের সময় বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া, মৎস্য ও কৃষি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনেও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা, একে অন্যের প্রার্থীদের সমর্থন এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।" দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

মালদ্বীপে শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ ও উন্নত অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার অপেক্ষায় রয়েছে— এমন পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমাদের দুই দেশের জনগণের সুবিধার জন্য মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের অভিন্নতার ক্ষেত্রগুলোতে অংশীদারিত্বে আগ্রহী।

বাংলাদেশের বর্ধমান উৎপাদন ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মালদ্বীপে অনেক মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত সন্তুষ্টির বিষয় যে বাংলাদেশ থেকে স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের নিয়োগের জন্য মালদ্বীপের প্রস্তাব বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে। আমরা মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত স্নাতকোত্তর মেডিকেল কোর্সের সুযোগ তৈরি করব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বেড়েছে। আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও ঢাকা-মালে’র মধ্যে ফ্লাইট চালু করার কথা ভাবছে। আমরা আশা করি, সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও পর্যটন সহযোগিতার আদান-প্রদান বাড়বে। আমরা একটি সরাসরি শিপিং লাইন স্থাপনের সম্ভাবনাও পর্যালোচনা করেছি।

জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কনস্যুলার ও কমিউনিটির সমস্যাগুলো আলোচনায় বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অনথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা ব্যবস্থা চালুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে এলেও মালদ্বীপে এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২১ সাল বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি যুগান্তকারী বছর। এ বছরের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দু’টি মেগা ইভেন্ট উদযাপনে প্রেসিডেন্ট সলিহ উপস্থিত থাকার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ