ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২ ১৮:৪৬ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে দ্রুত বিস্তার লাভ করা করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি বর্তমানে পুরোদমে সামাজিক সংক্রমণের স্তরে পৌঁছে গেছে। সরকারি তথ্য মতে, গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অনেক মানুষ পরীক্ষা না করায় তাদের  করোনায় ধরা পড়ছে না। সে কারণে সহজেই ধারনা করা যায়,  আক্রান্ত ও শনাক্তের হার সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে গতকাল সোমবার ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৩০ জানুয়ারি) এ সংখ্যা ছিল ৩৪। গত ২৪ ঘন্টায়  করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৫০১ জনের শরীরে। আগের দিনে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ১২ হাজার ১৮৩ জনের শরীরে।

এদিকে, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরো দুই সপ্তাহ দেশে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে।

এ প্রসঙ্গে রাজধানী একটি সরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছ, ওমিক্রমনের সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে আক্রান্ত রোগী এবং সংকটাপন্ন রোগী হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেড়ে গেছে।

এদিকে, সংক্রমণ রোধে সকলের মাস্ক ব্যাবহার বাধ্যাতামুলক করা সহ স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন কোভিড-১৯ সংক্রান্ত   জাতীয়পরামর্শ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ।

প্রসঙ্গে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. লেনিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রাণঘাতী করোনার তৃতীয় ঢেউ ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের দিকে হ্রাস পাওয়ার ধাপ শুরু হতে পারে। তবে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে- এর ওপর নির্ভর করে এটি দ্রুত বা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।’

করোনা সংক্রান্ত জনস্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. ফয়সাল বলেন, ‘ভাইরাসটির সংক্রমণ এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়তে থাকবে। এই ভাইরাস কাউকে ছাড়বে না। এটা উদ্বেগের যে গ্রামীণ এলাকার অনেক মানুষ এখনো করোনার টিকা নেয়নি।

এই বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বন্ধ করা যাবে না। আমাদের এখন রোগী ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেয়া উচিত। গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ মানুষ টিকা না নেয়ায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা উচিত।’

এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘অন্তত আরো তিন সপ্তাহ মানুষকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া উচিত না এবং যে কোনো ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে যাওয়া। স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনা চলা উচিত এবং মাস্ক ছাড়া বাইরে বের না হওয়া।’

এপ্রিলে আসতে পারে আরেক ঢেউ

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নাজির মনে করেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ মার্চের মাঝামাঝি সময়ে নিয়ন্ত্রণে এসে পড়তে পারে। তবে দেশে আরেকটি ঢেউ পরে আবার আঘাত হানতে পারে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় এর আগের দুই বছর এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে।’

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘মনে হচ্ছে করোনাভাইরাস খুব শিগগিরই বিদায় নেবে না। কেননা আরো বিপজ্জনক ধরন যে কোনো সময় আবির্ভূত হতে পারে। ভাইরাসটিকে সঙ্গে নিয়েই কীভাবে বাঁচা যায়-তা আমাদের শিখতে হবে।’#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ