জুন ০১, ২০২৪ ১৬:৫৮ Asia/Dhaka
  • ইসলামী ইরানের শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসি গত বছর জাতিসংঘে পবিত্র কুরআন হাতে নিয়ে উচ্চারণ করেছিলেন এর সপক্ষে অনন্য কিছু মহাসত্য
    ইসলামী ইরানের শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসি গত বছর জাতিসংঘে পবিত্র কুরআন হাতে নিয়ে উচ্চারণ করেছিলেন এর সপক্ষে অনন্য কিছু মহাসত্য

আলেম সমাজ ও ধর্মতত্ত্ব শিক্ষা কেন্দ্র বিষয়ে ইসলামী ইরানের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুজ্জাতুল ইসলাম মুহাম্মাদ হাজ আবুল কাসেম বলেছেন, পবিত্র কুরআনের আলোয় আলোকিত নেতৃবৃন্দ বা শাসনকর্তাকে দেখতে চাইলে শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসি'র জীবনাচারের দিকে লক্ষ্য করা ও বিশ্লেষণ করাটা একটি ভালো উপায়।  

তিনি কুরআন বিষয়ক তৎপরতায় জড়িতদের আয়োজনে আয়াতুল্লাহ রায়িসি'র ও তার সফরসঙ্গীদের প্রতি সম্মাননার এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন। হাজ আবুল কাসেম বলেছেন, সত্যিই আমাদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন কুরআনের আলোয় আলোকিত, তাই আমাদের কুরআনি সমাজের জন্য তাঁর শাহাদাত বড় ধরনের ক্ষতি। 

পবিত্র কুরআনের প্রতি মহান রায়িসির গভীর অনুরাগের কথা তুলে ধরে হাজ আবুল কাসেম বলেছেন, প্রেসিডেন্ট রায়িসি রাষ্ট্রীয় জনসেবামূলক কাজে প্রদেশগুলোতে সফরের অংশ হিসেবে জীবনের শেষ প্রাদেশিক সফরে গিয়েছিলেন ইরানের মজেন্দোরান প্রদেশে। তিনি তাঁর সফরসঙ্গীদের তুলনায় কয়েক মিনিট আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছেন। আমি যখন বিমানবন্দরে প্রবেশ করি ও তাঁর পাশে বসি তখন বুঝতে পারলাম যে রায়িসি পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করছেন। এ সময় তিনি সুরা ইয়াসিন, সুরা সাফ্‌ফাত ও সুরা মুলক্ তিলাওয়াত করছিলেন অপূর্ব আসমানি সুরে। অথবা তাঁকে দেখেছি কিভাবে তিনি জাতিসংঘে পবিত্র কুরআনের সত্যতার পক্ষে কথা বলছিলেন। সম্ভবত তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি জাতিসংঘের ইতিহাসে এই গৌরবের অধিকারী হয়েছেন। পবিত্র কুরআন হাতে তাঁর ছবি গণমাধ্যমগুলোতে চিরস্থায়িত্ব পেয়েছে। 

ইরানের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা জানান রায়িসি কুরআন বিষয়ক তৎপরতা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বিশেষভাবে সক্রিয় ছিলেন। তিনি কুরআনি সংস্কৃতি বিস্তার বিষয়ক পরিষদে সরাসরি জড়িত ছিলেন ও নিজের উপস্থিতিতে এই পরিষদ গড়ে তোলেন, আর খুব কম প্রেসিডেন্টই এমন রেকর্ডের অধিকারী।

হাজ আবুল কাসেম রায়িসি'র কুরআনি পরিচিতি প্রসঙ্গে বলেছেন: পবিত্র কুরআনের আলোয় আলোকিত নেতৃবৃন্দ বা শাসনকর্তা দেখতে চাইলে শহীদ প্রেসিডেন্ট রায়িসি'র জীবনাচারের দিকে লক্ষ্য করা ও বিশ্লেষণ করাটা একটি ভালো উপায়। 

পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত ও প্রত্যাশিত শাসনকর্তাদের নামের তালিকায় রয়েছেন: হযরত সুলাইমান (আ), হযরত ইউসুফ (আ), জুলকারনাইন। পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে তাঁদের সবারই ছিল রোডম্যাপ এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা ছিলেন আদর্শ। তাঁদের ছিল সব মহতী গুণ, আন্তরিকতা ও নৈতিক সদগুণাবলী।

জনাব আবুল কাসেম সুরা মায়েদার ৫৪ নম্বর আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, এ আয়াতে একজন আদর্শ বা প্রত্যাশিত শাসনকর্তার ছয়টি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্যকে একজন আদর্শ শাসনকর্তার বৈশিষ্ট্যগুলোর পরিপূর্ণ সীমারেখা বলা যায়: প্রথমত মহান আল্লাহর প্রতি তাঁর প্রেম বা গভীর অনুরাগ এবং তাঁর প্রতিও আল্লাহর প্রেম, ফলে খোদায়ি শাসনকর্তার মধ্যে বস্তুগত প্রেরণা হবে ম্লান বরং তাঁর সমস্ত ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা হবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত। মহান আল্লাহ এই আয়াতে বলছেন:

হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে নিজ ধর্ম থেকে ফিরে যাবে (সে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না), অচিরেই আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি হবে কঠোর। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা (ও যাকে যোগ্য মনে করেন তাকে) দান করেন। আল্লাহ ব্যাপক প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। 

জনাব আবুল কাসেম আরও বলেছেন, আমাদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন আল্লাহর প্রেমিক, মহান আল্লাহর অনুরাগী না হলে তিনি দিনরাত জনগণের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতেন না। মানবতার শত্রু ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিশ্রুতি শীর্ষক সফল সামরিক অভিযানও প্রিয় মরহুম প্রেসিডেন্ট রায়িসির সর্বাত্মক সহায়তা ও সমর্থনের কাছে ঋণী। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও জেহাদি প্রেরণা আমার কাছে অত্যন্ত বিস্ময়কর। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/০১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

  
 

ট্যাগ