'একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত'
(last modified Wed, 30 Mar 2022 16:57:42 GMT )
মার্চ ৩০, ২০২২ ২২:৫৭ Asia/Dhaka
  • ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
    ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ইংল্যান্ড সফররত বাংলাদেশের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত কারণ, তাঁরা যদি সেদিন প্রবাসে রাস্তায় না নামত, আন্দোলন না করত তাহলে বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারতেন না।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ এর উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের টেরেস প্যাভেলিয়নে অনুষ্ঠিত প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের সম্মাননা ও স্বীকৃতি জানাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধূরী এমন মন্তব্য করেন।

আজ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবেশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৯ মার্চ, মঙ্গলবার দুপুর একটায় শুরু হওয়া প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যতম অকৃত্রিম বন্ধু সাবেক অর্থমন্ত্রী, স্টিফেন টিমস এমপি। উল্লেখ্য, 'ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ' প্রায় বছরব্যাপী বিভিন্নভাবে অনুসন্ধানের মাধ্যমে সম্মাননা ও স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১০০ জন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠকের তালিকা তৈরী করে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সম্মাননা প্রাপ্তদের নাম এবং তাদের পরিচিতি সহ একটি স্মারকও প্রকাশ হয়েছে, যা অনুষ্ঠানে আগতদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, জাফরুল্লাহ চৌধুরী ব্রিটেনে অধ্যায়নকালে তরুণ বয়সেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং একসময় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে ব্রিটেন ছেড়ে যুদ্ধাঞ্চলে চলে আসেন। অনুষ্ঠানে ডা.  জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাহায্য সহযোগিতা ও ৭১ মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রবাসে আন্দোলন সংগ্রামে ও বিদেশীদের জনমত গঠনে সেদিন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর ‌অবদান চিরস্মরণীয়। অথচ সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বা জেনারেল ওসমানীর জন্মদিন ও মৃত্যুদিবস পালন করে না। সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের অবদানের জন্য জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করা।

এসময় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশ সরকার বিশেষ করে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সহযোগিতার কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং চলমান ভঙ্গুর গণতন্ত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সম্পৃক্ততা বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, আমাদের দেশের ব্যাপারে ইণ্ডিয়ার নাক গলানো উচিত নয়। এ বিষয়ে ভারতকে বিরত থাকতে বলার জন্য কমলওয়েলথের প্রধান হিসেবে ব্রিটিশ রাণীর প্রতি তিনি সবিনয় অনুরোধ জানান। মধ্যাহ্নভোজের পর দুটোয় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের মূলপর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদ্যোক্তা সংস্থা ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ‘র প্রেসিডেন্ট ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই।

অনুষ্ঠানে লণ্ডন ছাড়াও গ্রেট বৃটেনের বিভিন্ন শহর থেকে অনেক প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক উপস্থিত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে যারা আসতে পারেননি এবং ইতোমধ্যে পরলোকগত  মুক্তিযুদ্ধের বীর সংগঠকদের  সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তাদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে তাদের পক্ষে তা গ্রহণ করেন। সুদূর বার্মিংহাম স্মলহীথ পার্কে বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলনকারী মুক্তিযুদ্ধের বর্ষিয়ান সংগঠক মিছির আলী এবং সৈয়দ নাসির আহমদসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই সশরীরে উপস্থিত হয়েছিলেন  ব্রিটিশ—বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার নেতৃবৃন্দ।

সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য আপসানা বেগম, স্কটিস পার্লামেন্ট সদস্য ও শ্যাডো মিনিষ্টার ফয়সল চৌধুরী এমবিই, যুক্তরাজ্য আওয়মী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আফতাব আলী, মানবাধিকার নেত্রী তালেয়া রহমান এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাসংস্থা ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশীজ‘র ডিজি অহিদ আহমদ, পরিচালক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শামছুল আলম লিটন, সহসভাপতি ড. ওয়ালিদ তছরউদ্দিন, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক ও বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট এসেসিয়েসনের প্রেসিডেন্ট মো: আবু তাহের চৌধুরী, সৈয়দ নাদির আজিজ দারাজ, পরিচালক অর্থ মাহাতাব মিয়া, উন্নয়ন কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটিস্পিকার ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ, মানবাধিকার নেত্রী তালেয়া রহমান, আব্দুল আউয়াল প্রমূখ।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।