সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও বন্যা, বাড়ছে নদ-নদীর পানি
এক মাসের মাথায় সিলেটে ও সুনামগঞ্জ জেলায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এই বন্যা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে দুটি উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। নগরের সাতটি ওয়ার্ডের বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পাঁচ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ফলে বিভিন্ন হাওরে বাড়ছে পানির উচ্চতা।
পানি বাড়তে থাকায় গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে আবারও বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার মানুষ।
এদিকে, গতরাত থেকে বাড়ছে সিলেটের সব নদ-নদীর পানি। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১১৫ এবং কানাইঘাটে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জে বন্যা
সুনামগঞ্জের ছয় উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় বন্যা দেখা দিচ্ছে। এতে জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও শাল্লায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আজ সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে।
দুদিন ধরে সুনামগঞ্জ পৌরশহরে বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢুকে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের তেঘরিয়া, বড়পাড়া, নবীনগর, হাছননগর ও মধ্যবাজারে পানি উঠে গেছে। এসব এলাকার মূল সড়কে হাঁটুসমান পানি রয়েছে। দোকানপাটে পানি ঢুকে যাওয়ায় কেনাবেচা করতে সমস্যা হচ্ছে। শহরের অনেক বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়েছে।
দ্বিতীয় দফার বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা। ছাতকের সর্বত্র পানি থাকায় সড়ক-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছাতক ও দোয়ারাবাজারের প্রায় সব ইউনিয়নেই বন্যায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি। এখন পর্যন্ত ১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে চার শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। একইভাবে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার প্রধান সড়কে পানি থাকায় ওই দুই উপজেলার সঙ্গেও সড়ক-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এবার গত ১৩ মে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয়। প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় মানুষজন বিপাকে পড়েছে। তাছাড়া, বন্যায় বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বন্যা দেখা দেওয়ায় বিদ্যালয়গুলোতে বন্যার্তেরা আশ্রয় নেওয়ায় পাঠদানও বন্ধ রয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।