সিলেটে ভয়াবহ বন্যা: বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত
(last modified Fri, 17 Jun 2022 11:52:18 GMT )
জুন ১৭, ২০২২ ১৭:৫২ Asia/Dhaka

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চল। সিলেট জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে সিলেট শাহজাজাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা  হয়েছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ১৯ জুন থেকে এসব পরীক্ষা শুরু হবার কথা ছিল।

বন্যার পানি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ের কাছাকাছি এলাকায় চলে আসায় বিকেল ৪টা থেকে সকল ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ ঘোষণা করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, এখনো রানওয়েতে পানি ঢুকেনি। তবে, কাছাকাছি এলাকায় চলে আসার কারণে বিকেল থেকে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ওদিকে, সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৩ সেন্টিমিটার এবং সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর বাইরে জেলার ছোট ছোট অন্যান্য নদ-নদীর পানিও ক্রমশ বাড়ছে। অব্যাহত এই ঢল থেকে রেহাই পাচ্ছে না সিলেট সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকাও। ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাঘাট, দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সিলেট নগরীর ১০টি ওয়ার্ড ছাড়াও নতুন নতুন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসীও।

এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে প্রশাসনের অনুরোধে বন্যাকবলিত অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করছে তারা।

এদিকে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকাসহ ১২ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুদিন থেকে বিদ্যুৎবিহীন সুনামগঞ্জবাসী। এদিকে জেলার সঙ্গে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

অন্যদিকে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়ায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা সদরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যায়।

উত্তরের সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সদর, উলিপুর ফুলবাড়ী, চিলমারী ও রাজারহাট উপজেলার অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। চর ও দ্বীপচরগুলো প্লাবিত হওয়ায় ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার নয় সেন্টিমিটার, দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার নয় সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার সকালনাগাদ দেশের ১৩টি পয়েন্টে বন্যার পানি প্লাবিত হচ্ছে। আগামী ৩-৪ দিন ভারি বৃষ্টিপাত এবং বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এই বন্যা পরিস্থিতি ৭-১০ দিনের বেশি দীর্ঘায়িত হবে না।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ