বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই: সিলেটে শেখ হাসিনা
(last modified Tue, 21 Jun 2022 10:04:48 GMT )
জুন ২১, ২০২২ ১৬:০৪ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মর্মে আস্বস্ত করেছেন যে, চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

আজ (মঙ্গলবার) সিলেট সার্কিট হাউজে ‘বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসন’র বিষয়ে এক ‘মতবিনিময় সভায়’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিলেট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যত খাদ্য ও ওষুধ লাগে সব দেওয়া হবে। বন্যায় মাছ চাষিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নেবে সরকার। বন্যায় যারা ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত তাদেরও সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। বন্যার পানিতে যাতে ঠাণ্ডা লেগে কেউ অসুস্থ না হন।

এর আগে হেলিকপ্টারযোগে বন্যাকবলিত নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, সিলেট অঞ্চল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে তিনি সিলেট সার্কিট হাউজে যান এবং বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এর আগে, গতকাল সোমবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার কাজে ব্যবহারের জন্য ৪৫টি জলযান কেনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয় জানিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, বন্যায় আক্রান্ত মানুষদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী ১৫টি জেমিনি বোট (অল্প পানিতে চলে এমন বড় নৌকা) এবং ৩০টি উদ্ধার জলযান কেনার নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত  হওয়ায়, বিশেষ করে সিলেটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার্তদের সরিয়ে নিতে এবং অসহায় মানুষকে সাহায্যের জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী,  নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ইউনিটগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

সিলেট, সুনামগঞ্জের মতো দেশের বন্যাকবলিত অন্য জেলায় বন্যার্তদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী নামানো হবে বলেও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়ের নিচে যারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন, তাদের দ্রুত পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে রোববার সন্ধ্যায় পানি সম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে এক ভার্চ্যুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন জেলার ডিসি ও এসপিরা যোগ দেন। ওই ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে দেশের অন্য জেলা থেকে জলযান সংগ্রহ করে বন্যাকবলিত এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে বন্যাকবলিত এলাকায় চুরি ডাকাতি যাতে না হয় সেদিকে কড়া নজরদারি রাখতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে জানানো হয়, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পানি আরও কয়েক দিন থাকবে। পাশাপাশি নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, জামালপুরসহ অন্যান্য জেলায় বন্যা পরিস্থিত অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওই সব জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় ওএমএসের চাল পাঠানো, সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, স্থানীয় এনজিওদের কাজে লাগানোর পরামর্শ  দেওয়া হয়েছে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রোববারের সভায় জানানো হয়, রাজশাহী অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। সেখানে আগাম প্রস্তুতি নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, সাঁতার জানেন এমন ব্যক্তিদের দিয়ে দল গঠন করে দুর্গম এলাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ