বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আ. লীগ-বিএনপি ও সিইসির বক্তব্য
(last modified Sun, 24 Jul 2022 12:17:46 GMT )
জুলাই ২৪, ২০২২ ১৮:১৭ Asia/Dhaka

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা খেতে সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ (রোববার) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে অমানিশা : দুর্নীতি আর লুটপাটের খেসারত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)।

এ সময় মির্জা ফখরুল  বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেলে চা খাওয়াবেন। তার আগে বলে দেন নিরপেক্ষ সরকার সিস্টেম এনে দিচ্ছি। তাহলে চা খাওয়ার অসুবিধা কী? তবে  সমস্যার সমাধান হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরেপক্ষ সরকার।

সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল প্রচারণার সমালোচনা করে মির্জা  ফখরুল বলেন, এসব মেগা প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মেগা দুর্নীতি;  মেগা প্রজেক্টে মেগা লুটের কারণে বাংলাদেশের আজ অর্থনৈতিক সংকট  সৃষ্টি হয়েছে। এখন রেমিট্যান্স কমে আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রিজার্ভে  টান পড়েছে। তাই  সরকার এখন চোখে সর্ষে ফুল দেখা শুরু করেছেন। যার জন্য এখন আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছেন।

এর আগে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বিএনপি। রোববার সকাল ১১ টায়  জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দেশে কোনো সংকট নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দেশে কোনো সংকট নেই, সংকট আছে বিএনপিতে এবং তাদের নেতৃত্বে ও সিদ্ধান্তে।

আজ (রোববার) রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংকটের বিষয় বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের চাওয়া আর আবদারের কোনো শেষ নেই। তারা কখনো নিরপেক্ষ সরকার, কখনো নির্বাচনকালীন সরকার, আবার কখনো তত্বাবধায়ক সরকার এবং মাঝে মাঝে কখনো জাতীয় সরকার নিয়ে কথা বলে। আসলে বিএনপি নেতারা কি চায় তা তারা নিজেরাও জানে না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকারের অধীনে নয়, সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে কথা বলছেন সেটা একটা মীমাংসিত বিষয়, সুতরাং এ নিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই এই দল গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে কিভাবে আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়। সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজপথ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি, আওয়ামী লীগ রাজপথে ছিল, আছে এবং থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‌‌আন্দোলনের নামে সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে জনগণের জানমাল রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত।

কাজী হাবিবুল আউয়াল

কূটনীতিকরা নির্বাচন বিষয়ে কোনও পরামর্শ দেয়নি: সিইসি

এদিকে,  প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘কূটনীতিকরা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এলেও নির্বাচন বিষয়ে কোনও পরামর্শ দেয়নি। ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে তারা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।’

আজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সঙ্গে সংলাপের সময় দলটির  নেতারা অভিযোগ করেছেন, ‘কতিপয় বিদেশি কূটনৈতিক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাজে কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী এবং অযাচিতভাবে নাক গলিয়েছে।’ নির্বাচন কমিশনকে এ ধরনের ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী অযাচিত নাক গলানোকে’ প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তারা।

জবাবে সিইসি বলেন, ‘কূটনীতিদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা নির্বাচনের বিষয়ে কোনও পরামর্শ দেননি। তারা আমাদের নির্বাচন বিষয়ে অবহিত হয়েছেন। কিন্তু আমাদের ওইভাবে কোনও পরামর্শ দেননি। দেশে যখন নির্বাচন আসে তখন বিভিন্ন লোক এসে সাক্ষাৎ করে যায়। তারই অংশ হিসেবে হয়তো এটা হয়েছে।’

রাজনৈতিক বিষয়ে ইসিকে সালিশি না করার বিষয়ে জাসদের প্রস্তাবের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলেছি, সবাইকে আহ্বান করে যাব। কিন্তু আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি কাউকে নির্বাচনে আসতে আমরা বাধ্য করতে পারবো না। এটা আমাদের দায়িত্বও নয়। আমাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবাইকে আহ্বান করা।’

নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনে নির্বাচন কমিশন কোনও ঘাটতি দেখছে না উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আমাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে। তারপরও কোনও ফাঁক-ফোকড় থাকলে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এছাড়াও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা রয়েছে। আমাদের ক্ষমতার খুব একটা অভাব আছে, সেটা ফিল করছি না। সকলের সহযোগিতায় ক্ষমতাগুলো আইনানুগভাবে প্রয়োগ করতে পারি। আপনারা আইনের প্রয়োগে সহযোগিতা না করে বিরুদ্ধাচরণ করলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।’#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৪

 

ট্যাগ