'আমাদের দাবি ছিল ৩০০ টাকা মজুরির'
চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ, আন্দোলন প্রত্যাহার
বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করায় টানা ২০ দিনের আন্দোলন প্রত্যাহার করে আজ রোববার সকাল থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা । তবে হবিগঞ্জের কয়েকটি বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সেসব বাগানের শ্রমিকরা সোমবার থেকে কাজে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকে কিছু বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আজ কিছু বাগানে সাপ্তাহিক বন্ধ আছে। তবে চাবাগানে অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে।
উল্লেখ্য, দৈনিক মজুরী ৩০০ টাকা করার দাবীতে গত ৮ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার বিকেলে গণভবনে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে চাবাগান মালিকপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের জন্য দৈনিক মজুরী ১৭০ টাকা নির্ধারণ কর শ্রমিকদের রোববার থেকে কাজে ফেরার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ হওয়ায় নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতেছেন হবিগঞ্জের চা-শ্রমিকরা। রোববার সকাল থেকেই হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানে এমন উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। কোনো কোনো বাগানে বিতরণ করা হয়েছে মিষ্টিও। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাদের মা বলে সম্বোধন করে নানা রকম শ্লোগান দিতে দেখা গেছে শ্রমিকদের। অনুরূপভাবে জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় বেশ কয়েকটি বাগানেও, নাচ-গানের পাশাপাশি আনন্দ শোভাযাত্রা করছেন শ্রমিকরা। ঢোলের তালে তালে শ্রমিকদের নিজস্ব সংস্কৃতির বিভিন্ন নাচ প্রদর্শন করেন তারা।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়নি। সোমবার সকাল থেকেই তারা রুটিন অনুযায়ী কাজে যোগ দেবে। এখন বাগানে বাগানে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক নারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্ধ্যা রানী ভৌমিক বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল ৩০০ টাকা মজুরির। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, আমরা তাতেই খুশি। আমরা আনন্দ নিয়ে সোমবার থেকে কাজে ফিরে যাব।’
এদিকে, রোববার দুপুরে চাঁদপুর চা-বাগানে পরিস্থিতি দেখার জন্য আসেন চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক। এ সময় তিনি শ্রমিকদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন। সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করায় শ্রমিকরা আনন্দ-উল্লাস করছেন শুনেই আমি আর অফিসে থাকতে পারলাম না। আমি শ্রমিকদের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করতেই তাদের কাছাকাছি চলে এসেছি।’#
এআরকে