ডিসেম্বর ২৬, ২০২২ ১৮:৫১ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বাহাস: বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া

ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটা এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশিয়া দূতাবাস নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। এরপর পরাশক্তি দেশ দুটির ঢাকা দূতাবাস আবারো বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিও দিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারা ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি লক্ষ্য করেছে। মার্কিন দূতের ঘটনাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দেশটির হস্তক্ষেপের চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার রাজধানী মস্কোতে নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন। গেল রোববার ঢাকায় অবস্থিত রুশ দূতাবাস এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। এরপর বিষয়টি আবারো আলোচনা জাগায় সব মহলে। 

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়- রাশিয়া বলছে, একজন মার্কিন কূটনীতিক বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকারের বিষয়ে যখন যত্নবান হওয়ার কথা বলেন, দেশটির অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন, তখন এমন ঘটনাই প্রত্যাশিত।

সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তার দেশের অবস্থান তুলে ধরে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঐ মুখপাত্র বলেন, রাশিয়া বিশ্বাস করে, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা মৌলিক নীতিগুলোকে লঙ্ঘন করে। এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।

ড. ইমতিয়াজ আহমেদ

এ ঘটনার বিশ্লেষণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি রেডিও তেহরানকে বলেন, এসব ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে বহুমাত্রিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে এগুচ্ছে বিশ্ব। এরই প্রমাণ রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ ইস্যুতে অধিক আগ্রহ আর উদ্দীপনা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার নামে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারলে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর লাভ হয় বেশি। তাই এ ধরনের বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক। 

আর সাবেক রাষ্ট্রদূত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমসা আমীন রেডিও তেহরানকে বলেছেন, এখন ভিয়েনা কনভেনশনকে সংস্কার করা জরুরি। নইলে কূটনীতিকদের আচরণ দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কূটনীতিকরা এখন ভূরাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। তবে এমন সব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নীতি নির্ধারক ও সরকারকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন সাবেক এই রাষ্ট্রদূত। 

উল্লেখ্য, গেল ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ৯ বছর আগে নিখোঁজ বিএনপির এক নেতার বাসায় যান। সেখানেই ঘটনার সূত্রপাত। ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের সদস্য মার্কিন দূতকে ঘিরে ধরে স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন।

সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা জানান মার্কিন দূত। ঘটনার পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকেও তলব করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট।#

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/২৬

ট্যাগ