মে ৩১, ২০২৩ ১৫:৫৪ Asia/Dhaka

বাংলাদেশর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ কোন না কোনভাবে ধুমপানে জড়িত। সিগারেট, বিড়ি, হুঁকা, জর্দা, গুল, সাদা পাতা ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।  এ কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশে এক লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। সে হিসেবে দেখা যায় তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রায় ৪০০ লোক মারা যাচ্ছে।

তামাকের ব্যবহার ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস ও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, যক্ষ্মা, চোখের কিছু রোগ, বাতসহ রোগ প্রতিরোধক্ষমতার দুর্বলতার জটিলতা বাড়ায়। এসব রোগ প্রাণঘাতী, চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল ও রিসার্চ ইন্সিটিউটের  রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য যেমন-জর্দা, গুল, সাদাপাতা প্রভৃতিও ফুসফুসের অপূরণীয় ক্ষতি করে। এর মধ্যে ৩০ ধরনের ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক রয়েছে। এর একটি বিশেষ ধরনের নাইট্রোস্যামিন, যা ফুসফুস ক্যানসারের জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফুসফুস ছাড়াও মুখগহবর, গলনালি ও পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্যও দায়ী ধোঁয়াবিহীন তামাক।

তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যখাতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় সাড়ে প্রায় ৮ হাজার কোটি  টাকা ব্যয় হয়। যার ৭৬ শতাংশের খরচ মেটায় তামাক ব্যবহারকারীর পরিবার আর ২৪ শতাংশ খরচ আসে জনস্বাস্থ্য খাতের বাজেট থেকে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতের  এক পরিসংখ্যান ধরে এই গবেষণা তথ্যর কথা জানায় তামাকি বিরোধী সংগঠনগুলো। 

এরপরেও থেমে নেই দেশে তামাক চাষ কিংবা তামাক ব্যবহার বিক্রি ও মানুষকে প্রলুব্ধ করার তামাক কোম্পানীর কূটকৌশল।

বাংলাদেশে ৯৯ হাজার ৬০০.২৪ একর জমি তামাক চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে। সামগ্রীক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় বিশ্বের ১ দশমিক ৩ শতাংশ তামাক চাষ হয় বাংলাদেশে। যা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এবং এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে খাদ্য সঙ্কট তৈরী করতে পারে। এমন বাস্তবতায় এ বছর আজ ৩১ মে বুধবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত হচ্ছে, যেখানে তামাক নয়, খাদ্য ফলান প্রতিপাদ্যকে শিরোনাম করা হয়েছে।

কিন্তু তাতোও কি আদৌ থেমে যাবে তামাকে ব্যবহার? এ বিষয়ে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধসহ একটি খসড়া সংশোধনী কেবিনেটের অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খসড়াটি যত দ্রুত চূড়ান্ত হবে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ ততই ত্বরান্বিত হবে।

তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য নির্ধারণের ফলে ফলাফল বাস্তবায়ন আশাবাদী করেছে বলে জানান স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশ বিশ্বের ৯ম বৃহত্তম তামাক ব্যবহারকারী দেশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি, ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।##

পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ