বাংলাদেশে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হলে মূল্যস্ফীতি তীব্রতর হবে 
(last modified Sun, 04 Jun 2023 11:27:27 GMT )
জুন ০৪, ২০২৩ ১৭:২৭ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক  টানাপড়েনের মধ্যেই গেল বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

যেখানে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছতা সাধন অব্যাহত রাখা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং এক্সটারনাল সেক্টরের বিদ্যমান অস্থিরতা কাটিয়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

এরপরই বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা, বিশেষ করে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার  বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কি কি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা  বিশ্লেষণ। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে-তা বাস্তবায়ন কঠিন। তবে মূল্যস্ফীতি কমানো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়াটা ইতিবাচক। এই চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশাল এ বাজেটে ঘাটতি অনেক বেশি। এই ঘাটতি মেটাতে সরকার যদি বেসরকারি ব্যাংক থেকে টাকা নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতিতে বেশি প্রভাব পড়বে না। কিন্তু তাতে ব্যক্তি খাত ঋণ কম পাবে। আবার যদি সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে সরকার টাকা নেয়, সেটা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। সুতরাং এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হবে খুবই দুরূহ। 

প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অনেক রূপকল্পের কথা বলা হয়েছে। আছে নানা অর্জন আর প্রত্যাশার কথা। কিন্তু কোনো বিষয়েই সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা। 

ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ মনে করেন, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকার বড় বাধার মুখে পড়বে।  প্রাইভেট সেক্টর যেহেতু সবসময়ই রাজস্ব আহরণে সরকারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে তাই ব্যবসা-বাণিজ্য করতে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সরকারের নিকট থেকে সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান তিনি।
   
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেনের মতে, সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ, লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, রিজার্ভ বাড়ানো, অপরিশোধিত তেল সংগ্রহ এবং জ্বালানি, বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, এ বিষয়গুলো বাজেট বাস্তবায়নের প্রধান চ্যালেঞ্জ। 

ব্যক্তি করমুক্ত আয়ের সীমা যেটা সাড়ে ৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটাকে ঠিক বললেও দুই হাজার টাকা যা মিনিমাম কর ধরা হয়েছে সেটাকে সাংঘর্ষিক মনে করছেন অনেক অর্থনীতিবিদরা। 

তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খেলাপি ঋণ আদায়, বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি হ্রাস এবং বিদেশ পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দেশের অর্থ-খাতের বিশেষজ্ঞরা।#
 

পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/এমএএইচ/০৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ