কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ভেজাল ও অসাধু ব্যবসায়ী ধরতে শুরু হচ্ছে অভিযান
পবিত্র ঈদুল আজহা আসন্ন। দেশজুড়ে চলছে কোরবানির পশু কেনাবেচার প্রস্তুতি। এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। ব্যবসায়ীয়া উচ্চমূল্য হাঁকিয়ে বিক্রি করছেন দরকারিসব পণ্য। যার মধ্যে একটি হলো আদা। পাইকারি বাজার থেকে এই আদা যখন পাড়া-মহল্লায় মুদি দোকানে পৌঁছায়, তখন তার পার্থক্য হয়ে যায় কেজিতে প্রায় ১শ টাকা।
কোরবানি ঈদে স্বাভাবিকভাবেই আদা, রসুন, পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে অন্য সময়ের তুলনায়। কিন্তু ঈদ না আসতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালের বাইরে নিয়ে গেছেন ব্যবসায়ীরা। দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে নেই কোনও সদুত্তর। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ ছুড়ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের দিকে।
আজ শনিবার সরেজমিনে হাজারীবাগ, ধানমন্ডি , জিগাতলা , হাতিরপুল কাঁচাবাজার এলাকার ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাড়া-মহল্লায় ভ্যান গাড়িতে ফেরি করে আদা ৩৬০ টাকা, দেশি রসুন ১৪০ থেকে ১৬০, ভারতীয় রসুন ১৮০ ও পেঁয়াজ ৪০, দেশি পেঁয়াজ ৮০ এবং আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারে মান ও আকারভেদে দেশি রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা এবং ভারতীয় রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, আলু ৩২ টাকা, আদা ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, পাইকারি বাজার থেকে পাড়া-মহল্লায় দোকানে আদা পৌঁছাতেই ১০০ টাকার পার্থক্য চলে আসে।
পাইকারি বাজারে আদার দাম কেন এত বেশি, জানতে চাইলে চট্টগ্রামের খাতুন গঞ্জের ব্যবসায়ী আনিসার আলী জানান, বাজারে এখন বেশির ভাগই থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার আদা বিক্রি হচ্ছে। দেশি কোনও আদা নেই বাজারে, তাই হয়তো দাম বেশি। আবার ভেজাল মশলাও বাজারে রয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত দেশে আদার উৎপাদন থমকে রয়েছে। এই এক দশক ধরে উৎপাদন মাত্র ৮০ হাজার টনের সামান্য এদিক-সেদিক করছে মসলাটি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ৭৭ হাজার টন আদা উৎপাদন হয়, যা ২০১৯-২০ এ এসে সর্বোচ্চ ৮৪ হাজার টনে উঠেছিল। ২০২১-২২-এ কমে আবার ৮২ হাজার টনে নেমেছে।
একই অবস্থা রসুনেরও। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে সাড়ে তিন লাখ টন রসুন উৎপাদন হয়। এক দশক বাদে এখন উৎপাদন ঠেকেছে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার টনে। ঠিক একই সময়ের ব্যবধানে চাহিদা বেড়েছে তিনগুণের বেশি।
এমন অবস্থায় অসাধু ব্যবসায়ী চক্র মানুষকে জিম্মি করছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ী নেতাদের। এ বিষয়ে চট্টগ্রামের খাতুন গঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জাহেদ বলেন, বাজারগুলোতে নিত্য মনিটরিং জরুরী। নইলে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট মুক্ত করা যাবে না বাজার ব্যবস্থাপনার। তাই খাতুনগঞ্জের মত পাইকারী আড়তেও নিয়মিত মনিটরিং দাবী এই ব্যবসায়ীর।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাকিব হাসান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে সে বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। #
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/রেজওয়ান হোসেন/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।