প্রবাসী সমস্যা সমাধান: ধারাবাহিক প্রতিবেদন (দ্বিতীয় পর্ব)
প্রবাসী কর্মীদের ভোগান্তি কমাবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার; প্রয়োজন জরুরি উদ্যোগ
প্রবাসীদের পাসপোর্ট করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে নরসিংদীর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। একই ছাদের নিচে সকল ধরনের সেবা পেয়ে খুশি অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। জেলার প্রতিটি ইউডিসিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রবাসীদের সেবা দিতে নিয়মিত তদারকি করছে জেলা প্রশাসন। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অভিবাসী কর্মী পাঠানো দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।
২০২২ সালে প্রবাসীদের পাঠানো আয়ের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে বিদেশে কর্মী প্রেরণের জেলা হিসেবে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে নরসিংদী। কারণ গেল একবছরে শুধুমাত্র নরসিংদী থেকেই বিভিন্ন দেশে অভিবাসী পাঠানো হয়েছে ১৯ হাজার ৭২৫ জন। নরসিংদীর এই বিপুলসংখ্যক অভিবাসী ও অভিবাসন প্রত্যাশীরা পাসপোর্ট করা থেকে শুরু করে রেমিট্যান্স পাঠানো পর্যন্ত নানাভাবে দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতেই নরসিংদী জেলার রায়পুরার আদিয়াবাদ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। যেখানে পাসপোর্ট আবেদন, নিবন্ধন, আমি প্রবাসী নিবন্ধন ও প্রবাসী ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
ডিজিটাল সেন্টারের কর্মী হাফিজা বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আগে সকল প্রস্ততি নেয়ার ব্যবস্থা করার সুযোগ তাদের এখানে আছে। আর সোহেল করীম জানান, এই সেন্টারে তারা অভিবাসী হতে ইচ্ছুকদের সকল ধরনের তথ্য সেবাও দিচ্ছেন।

দেশের প্রান্তিক মানুষের সেবায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলো প্রবাসীদের সেবাসহ প্রায় ৩৬০ ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান নরসিংদির স্থানীয় এটুআই কর্মকর্তা, ক্যাপাসিটি ডেভেললপমেন্ট এক্সপার্ট অশোক বিশ্বাস। প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকে অভিবাসীরা সকল সেবা একই স্থান থেকে পাওয়াই সরকারি উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রায়পুরার আদিয়াবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: সেলিম মিয়া।
অগ্রগাধিকারের ভিত্তিতে প্রবাসীদের এ সেবা দিতে নিয়মিত তদারকি বাড়ানোর কথা জানালেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম। একই সাথে এমন মহতি মডেল ব্যবস্থাপনা সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার।

এমন উদ্যোগে অভিবাসী ও তাদের পরিবার হয়রানি এবং প্রতারণা থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রবাসীদের উৎসাহ আরও বাড়বে বলে মনে করেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এবং ইয়োথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম।

তবে এই ডিজিটাল সেন্টারের সেবার প্রক্রিয়া বিদেশ যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের প্রকৃত পক্ষে কোনো উপকারে আসবে না বলে সাফ প্রতিবাদ জানিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সীজ-এর (বায়রা) সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাসার। কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, জনশক্তি রপ্তানি খাতকে এধরনের সংকটের বাইরে না রাখলে সংস্কার হবে না, ফিরবে না সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিস্থিতি। তাই পেশাগত চর্চা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসবান্ধব এই সরকারি আমলা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন। #
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/৩০