মৌসুমী বৃষ্টিপাত; নদীর পানি বৃদ্ধিতে বন্যা: দুর্ভোগের মুখে মানুষ
(last modified Sat, 09 Jul 2016 15:54:25 GMT )
জুলাই ০৯, ২০১৬ ২১:৫৪ Asia/Dhaka
  • মৌসুমী বৃষ্টিপাত; নদীর পানি বৃদ্ধিতে বন্যা: দুর্ভোগের মুখে মানুষ

বাংলাদেশে মৌসুমী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বাড়ছে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ শাখা নদীগুলোর পানিও। ফলে চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী, চর ও দ্বীপচর এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।

বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার শ্রমজীবী মানুষজন। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।

চারদিকে পানির কারণে ব্রহ্মপুত্র তীরের গ্রাম বাসীদের ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। ফলে কোনো কাজও করতে পারছেন না তাঁরা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব বিপদের মধ্যে আছেন অনেক পরিবার।

চিলমারী উপজেলার পত্রখাতা ইউনিয়নের গ্রিহবধু ঝরনা বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের নঈকট বলেছেন, তাদের ঘরের ভিতর পানি ঢুকে পড়েছে। কোনো রকমে চেয়ারের উপর চুলা বসিয়ে রান্না-বান্না করতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী জানান, তাঁর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা ব্রহ্মপুত্রের চর। চরাঞ্চলের সব ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

বন্যাকবলিত মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু সরকারিভাবে এখনো কোন ত্রাণ সহায়তা আসেনি। ফলে তাঁর পক্ষেও কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার দাবি জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঈদের আগে বন্যাকবলিত এলাকাসহ সব ইউনিয়নে রিলিফের চাল দেওয়া হয়েছে। তবে বন্যার্তদের জন্য এখনো কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সেই কারণে বন্যা কবলিত এলাকাম মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

পানি বৃদ্ধি সম্পর্কে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে নুনখাওয়া পয়েন্টে দুধকুমারের পানি।

এদিকে আগামী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া দৃশ্যপটের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়, উত্তর-পূর্ব মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপ হিসেবে মৌসুমী বায়ুর অক্ষের সাথে মিলিত হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ উড়িষ্যা এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ফলে মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর এখন সক্রিয় । #

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/ মো.রেজওয়ান হোসেন/৯

 

 

ট্যাগ