'নারী-পুরুষ সবার জন্য হযরত ফাতেমা অনুসরণীয় আদর্শ'
(last modified Sat, 18 Mar 2017 21:39:45 GMT )
মার্চ ১৯, ২০১৭ ০৩:৩৯ Asia/Dhaka
  • বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক
    বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক বলেছেন, “আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে নারী-পুরুষ সবার জন্য হযরত ফাতেমা (রা.) অনুসরণীয় আদর্শ। তাঁকে অনুসরণ করলেই তাঁর জন্মদিবস পালন সার্থক হবে।“

শনিবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে ‘নবী নন্দিনী ফাতেমা (সা. আ.)’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইরানের আন্তর্জাতিক আল মুস্তাফা ইউনিভার্সিটি ঢাকা ক্যাম্পাসের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুহিব্বিন-এ আহলে বাইত-এ রাসূল (সা.) ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল শাহ সুফী সাইয়েদ নাইমুদ্দিন আহমেদ।

হযরত ফাতিমা (সা. আ.)-এর জন্মদিন ইরানসহ বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘নারী ও মা দিবস’ হিসেবে। এ উদ্যোগের প্রশংসা করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক বলেন, মা দিবস হিসেবে ফাতেমা (রা)-এর জন্মদিবস পালন যথার্থ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “হযরত ফাতিমাকে ভালোবাসলে রাসূল (সা.)-কে ভালোবাসা হবে আর রাসূলকে ভালোবাসলে আল্লাহকে ভালোবাসা হবে। কারণ রাসুল বলেছেন, ফাতেমা আমার দেহের ও রুহের অংশ। যে তাঁকে ভালোবাসে সে আমাকে ভালোবাসে যে তাঁকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়।”

ঢাকায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত জনাব ড. আব্বাস ভায়েযী দেহনাভী

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত জনাব ড. আব্বাস ভায়েযী দেহনাভী। তিনি বলেন, “ইরানে ফাতেমা (সা. আ.)-এর জন্মদিনকে ‘মা ও নারী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। হযরত ফাতেমা হচ্ছেন আহলে বাইতের সদস্য। তিনি পবিত্র কুরআনে ব্যাখ্যা করে মানুষকে দ্বীন বুঝাতেন। সঠিক ব্যাখ্যা না বুঝার ফলে অনেকে কুরআন থেকে ভুল শেখে। তারা ভুল পথে যায়।”

ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেন, “আজ মুসলমানরা তাদের আসল ঐতিহ্য ভুলে গেছে যে ঐতিহ্য ও আদর্শ তারা কুরআন, মহানবী (স) ও তাঁর আহলে বাইত থেকে অর্জন করেছিল। এক সময় রুমি, জামি, হাফিজ, শেখ সা’দি, গাজ্জালি, ইকবাল লাহোরিসহ অনেক মনীষী মুসলমানদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীকালে ইরানে ইমাম খোমেনী (রহ.)–এর মতো মহান মানুষের জন্ম হয়। তিনি বিশ্বে মুসলমানদেরকে তাদের ঐতিহ্যে ফিরে আসতে উজ্জীবিত করেন। ইসলামের বিভিন্ন দিবসগুলোকে তিনি নতুন আঙ্গিকে সামনে আনেন। তিনিই ফাতেমা (সা. আর.)-এর জন্ম দিবসকে ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণা’ করেন।”

আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত আল মুস্তাফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর হুজ্জাতুল ইসলাম ড. হাসান আমির আনসারি বলেন, “হযরত ফাতেমা বহু হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি সহীহ হাদিসের একটা লিখিত গ্রন্থ তৈরি করেন। তিনি ছিলেন দ্বীনের ব্যাখ্যাকারী। মহানবী (সা.) যেমন সমগ্র সৃষ্টিকূলের মাঝে শ্রেষ্ঠ তেমনি ফাতেমা (সা. আ.) সমগ্র নারীকূলের মাঝে শ্রেষ্ঠ মানবী। রাসূল (সা) যখন সফরে যেতেন তখন সবার শেষে ফাতেমার কাছ থেকে বিদায় নিতেন আর যখন ফিরে আসতেন তখন সবার আগে ফাতেমার সঙ্গে দেখা করতেন। কোনো মজলিশে হযরত ফাতেমা (সা. আ.) উপস্থিত হলে রাসূল (সা.) নিজে ওঠে তাঁকে সম্মান করতেন। এর মাধ্যমে তিনি নারী জাতিকে সম্মান করেছেন।”

সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্জ শাহ সুফি সাইয়েদ নাইমুদ্দীন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে মিলাদুন্নবী (সা) উদযাপিত হয় কিন্তু নবীকন্যা ফাতেমা (সা. আ.)-এর জন্মদিন পালিত হতো না। তিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সরকারকে ধন্যবাদ জানান এই মহিয়সী নারীর জন্ম দিনকে ‘বিশ্ব নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়ায়। একই সঙ্গে তিনি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হকের মাধ্যমে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান যেন হযরত ফাতিমার জন্মদিনকে বাংলাদেশের ‘জাতীয় নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৯

 

ট্যাগ