প্রাণ বাঁচাতেই বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালিয়ে থাকে: রজনীকান্ত
(last modified Sat, 15 Jun 2019 10:46:24 GMT )
জুন ১৫, ২০১৯ ১৬:৪৬ Asia/Dhaka
  • প্রাণ বাঁচাতেই বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালিয়ে থাকে: রজনীকান্ত

বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তে বেড়ে যাওয়ার হত্যাকাণ্ডকে 'অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু' হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) রজনীকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি চোরাচালানিরা যখন ভারতীয় জওয়ানদের ওপর ছুরি ও পাথর নিয়ে আক্রমণ করে তখনই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মূলত প্রাণ বাঁচাতেই বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালিয়ে থাকে।’

আজ (শনিবার) পিলখানা সদর দফতরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

'মাস কয়েক আগে সাতক্ষীরা সীমান্তের কাছে এক যুবকের মুখ ও পায়ুপথে পেট্রল ঢেলে বিএসএফ হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১৫টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসএফের মহাপরিচালক রজনীকান্ত মিশ্র সাতক্ষীরার ওই যুবক সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি হত্যাকাণ্ড' শব্দ ব্যবহারে আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, 'মানুষের জীবন তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত রয়েছে তাঁদের। বিএসএফকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি মাঝেমধ্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। দুর্বৃত্তরা বিএসএফের ওপর পাথর ছুড়েছে, লাঠিপেটা করেছে, কখনো কখনো দা দিয়ে হামলা করেছে। কোনো বিকল্প না থাকায় প্রাণে বাঁচতে খুব অল্প কিছু ঘটনায় বিএসএফ মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।'

কুড়িগ্রামে ফেলানী হত্যাকাণ্ড ও মেহেরপুরে আম পাড়তে গিয়ে এক বালকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিচার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সর্বোচ্চ গুরুত্ব রয়েছে এ বিষয়গুলোর প্রতি। তবে বিষয় দুটি কোন পর্যায়ে আছে তা জানতে চাইলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান তিনি।

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতে জেএমবিকে আশ্রয়প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্মেলনে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে বিএসএফ প্রধান বলেন, বৈঠকে এ নিয়ে সে অর্থে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তবে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ভারত আশ্রয়প্রশ্রয় দেয় না।

বিজিবি প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাফিন আহমেদও বলেন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়ার ব্যাপারে উভয় বাহিনী একমত রয়েছে।

মিয়ানমারের পর এখন ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবার চালান আসছে, এই বিষয়ে বিএসএফ প্রধান বলেন, তৃতীয় একটি দেশ থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা আসছে। ভারত কোনোভাবেই ইয়াবা চোরাচালানের ব্যাপারে জড়িত নয় বরং সম্প্রতি বাংলাদেশি দুজন নারী ইয়াবা নিয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করে জনতার হাতে ধরা পড়েছিল। বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল। ইয়াবা পাচারের সঙ্গে ভারত জড়িত নয় বরং তৃতীয় একটি দেশ জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বৈঠকে বিজিবি প্রধান বলেন, উভয় বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। চোরাচালান বন্ধে কাজ আরও জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য চোরাচালান, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান ও নকল টাকা রোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ‍দুই বাহিনীর কেউ যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম না করে, সে ব্যাপারেও কথাবার্তা হয়েছে।

বিজিবি-বিএসএফের মধ্যকার এটি ৪৮তম সম্মেলন। এতে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ