বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির: বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কমছে না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে দাম কমে বিক্রি হচ্ছিল কেজিতে ১৩০-১৪০ টাকায়। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে আবারও বেড়ে ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। এদিকে পাতাসহ দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং পাতা ছাড়া পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।
উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আমদানির পরও নাগালের মধ্যে আসছে না বাজার। এজন্য চাহিদা অনুযায়ী আমদানি না হওয়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজের এরকম উচ্চ মূল্যের কারণে নাকাল এবং ক্ষুব্ধ ভোক্তারা।
সরকারি দপ্তরগুলোর হিসাবে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি সাত থেকে আট লাখ টন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি এ ঘাটতি দ্বিগুণ। অন্তত ১৪ লাখ টন। আর এ কারণেই বাজারে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক হিসাবে ঘাটতি হলে বাজারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
ওদিকে, পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও দর কারসাজির অভিযোগ প্রসঙ্গে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে ৪৭ আমদানিকারককে শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে তলব করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আজ (সোমবার) কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে হাজির হয়ে ১৩ জন আমদানিকারক তাদের বক্তব্য তুলে ধরছেন।
আমদানিকারকদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী দর বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ যাচাই করা হবে। এরপর দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এর আগে গতকাল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর এক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- পেঁয়াজসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
সভায় উপস্থিত এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে তবে নৈতিকতার দিক খেয়াল রাখতে হবে। বাজারে কোনো জিনিসের ঘাটতি নেই। কিন্তু যদি কেউ অনৈতিকভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশের বাজারে আসবে। তাছাড়া দেশীয় নতুন পেঁয়াজ এই সময়ের মধ্যে বাজারে উঠতে পারে। ফলে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
টিপু মুনশি বলেন, বছরে আমাদের ২৪ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ প্রয়োজন। এর মধ্যে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়, যার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই আসে পাশের দেশ ভারত থেকে। কিন্তু ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় দেশের বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে, সংকট মোকাবিলায় ইতিমধ্যে বড় বড় ব্যবসায়ীদের অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে বলা হয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।