জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস: করোনাকালে নির্যাতন বেড়েছে- অর্পিতা দাশ
বাংলাদেশে আজ ২৪ আগষ্ট পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ’ দিবস। আজ থেকে ২৫ বছর আগে ১৯৯৫ সালের এই দিনে দিনাজপুরে ১৩ বছর বয়সী কিশোরী ইয়াসমিনকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ধর্ষণের পর হত্যা করে।
ঐ ঘটনায় দিনাজপুরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিতে প্রাণ হারায় সাতজন। বিক্ষোভে ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। শেষ পর্যন্ত বিচারে তিন পুলিশ সদস্যের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়।
কিশোরী ইয়াসমিন হত্যার স্মরণে এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিবছর এ দিবসটি পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ’ দিবস হিসেবে।
এদিকে আজকেও দেশে নারী নির্যাতনের ভয়াবহতা চলমান রয়েছে। এমন কী করোনা পরিস্থিতিতে অধিক সংখ্যক নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বলে বেসরকারি সংস্থার তথ্য থেকে জানা গেছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জুলাই মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০৭ জন; গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪ জন আর ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তিন জনকে।
এ প্রসঙ্গে দিনাজপুর জেলা শাখা মহিলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কানিজ রহমান বলেন,রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব,ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত, দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া আর একরকম বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এরকম অপরাধ কমছে না।
মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলি বলেছেন, নারী নির্যাতনের মামলাগুলি নিষ্পত্তির হার খুবই কম। আর ধর্ষণের মামলা নিয়ে কালক্ষেপণ হয়। ফলে অনেক দরিদ্র্য পরিবার মামলা চালাতে পারেন না,অথবা নানা চাপের শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত সুবিচার দেখতে পায় না।
এদিকে দেশের ১১ টি জেলায় বেসরকারি সংস্থা ব্রাক পরিচালিত এক জরিপে ৩২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে,করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে অভাবের সংসারে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে নারীদের। গত ২৬ মার্চ থেকে লক ডাউন শুরু হবার পর ৩ জুন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যানের জন্য ১৯৭ মামলা হয়েছে মেট্রোপলিটান মেজিষ্ট্রেট আদালতে।
বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অর্পিতা দাশ গণমাধ্যকে জানিয়েছেন, করোনাকালে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের মধ্যে ১,৬৭২ জন নারী জানিয়েছে,তারা আগে কখনো নির্যাতনের শিকার হন নি। এটা প্রমাণ করে করোনার কারণেও নারী নির্যাতন বেড়েছে। #
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/২৪