সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০ ১৫:০৯ Asia/Dhaka
  • সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।
    সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে ডিবি পুলিশের কার্যালয় থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। গত রাতে ১২.৪০ মিনিটে তাকে তার পরিবারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় "ভিপি নুর ভয় নাই, রাজপথ ছাড়িনায়"," হামলা-মামলা" হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া", বলে দলীয় নেতাকর্মীরা বাইরে স্লোগান দেন।

মুক্তির পরে ভিপি নুর বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম কিন্তু হঠাৎ পুলিশ কেন আমাদের ওপর হামলা করেছে সেটা বুঝতে পারিনি। রড, কাঠ এসব দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় হামলা-মামলার শিকার হই, কিন্তু দেশে যা ঘটে তাতে দেখা যায় রাষ্ট্রের কোন অঙ্গের সাথে কোন অঙ্গের মিল নাই। এ কারণেই দেখা যায় একজন মারে, অন্য একজনকে গ্রেফতার করে, আরেক জন ছাড়ে, এটাই চলতেছে। আমি আগেও বলছি এদেশে বিচার নাই, আইনের শাসন নাই, গণতন্ত্র নাই। সুতরাং আমার বিচার হচ্ছে জনগণের কাছে। আমরা তো কোন অপরাধী না, আমরা ছাত্রনেতা। আমরা মাইর খেলাম, শার্ট ছিঁড়ে গেলো। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে চলে যাচ্ছিলাম। কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়া পুলিশ কেন আক্রমণ করল তা বুঝতে পারিনি।

আমরা বুঝতে পারিনি কি কারণে আমাদের ধরে আনা হলো এবং কি কারণে ছেড়ে দেয়া হলো। যেটা মনে হচ্ছে মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য এরকম গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদ। উল্লেখ্য, নুর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ২৮ বছর বাদে ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে তিনি ভিপি নির্বাচিত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরকে গতকাল মধ্যরাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এর আগে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ভবন এলাকায় গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে নুরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের কিছুক্ষণ পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় এ মামলাটি করেন। মামলায় মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে নুরুল হক নুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় ঢাবি ছাত্রীর দায়ের করা ধর্ষণের মামলাযে  ষড়যন্ত্র আখ্যায়িত করে তার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

এদিকে, এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে। ধর্ষণের স্থান হিসেবে লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে হাসান আল মামুনের বাসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

নুর ও মামুন ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন-বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।#

 

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/ ২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ