বাংলাদেশে জিডিপি বাড়বে মাত্র ১.৬ শতাংশ- বিশ্বব্যাংক: সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়ছে
(last modified Thu, 08 Oct 2020 13:27:25 GMT )
অক্টোবর ০৮, ২০২০ ১৯:২৭ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে জিডিপি বাড়বে মাত্র ১.৬ শতাংশ- বিশ্বব্যাংক: সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়ছে

করোনা সংক্রমণজনিত নেতিবাচক প্রভাবে কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

আজ (বৃহস্পতিবার) প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এ অনুমান সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। সরকার মনে করছে, চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শমিক ২ শতাংশ। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, পরবর্তী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ২ শতাংশ। এছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

তবে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো গত আগস্টে প্রকাশিত সাময়িক হিসেবে ওই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও দেশের অর্থনীতিবিদগণ তা অবাস্তব বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার প্রভাবে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে মজুরি কমে যাওয়ার প্রভাবে বেসরকারি ভোগব্যয় কমে যেতে পারে। তৈরি পোশাকের চাহিদা পুনরুদ্ধার হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য দরিদ্র ও দুর্বলদের সুরক্ষা এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়ন ও চাকরি সৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা দরকার। এ জন্য সরকারকে উপযুক্ত আর্থিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাড়ছে সরকারের ব্যাংক ঋণ

করোনাজনিত কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা অবস্থাও রাজস্ব আহরণে ধীরগতির কারনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেনা শোধ করছে সরকার।

বর্তমানে বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কম। ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত তরল্য রয়েছে। এসব বিবেচনায় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে ক্ষতি নয় বরং ব্যাংকগুলোর জন্য ভালো বলে মনে করছে। কারণ এ ঋণ থেকে তারা মুনাফা পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের শুরুতে পুরো ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৭৭ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকায়। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩২ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুন শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি। সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকায়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে তিন মাসের ব্যবধানে সরকারের ঋণ ২৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা বেড়েছে।

অন্যদিকে জুন শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া সরকারি ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৩৫৩ কোটি। সেপ্টেম্বর শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৮৩ কোটিতে। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারি ঋণ কমেছে ২৩ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে সব মিলে পুরো ব্যাংকখাত থেকে নেয়া নিট ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ৩২ কোটি টাকা।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ আশরাফুর রহমান/৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ