স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক
শাপলা চত্বরে সহিংসতার মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবি হেফাজতের
হেফাজতে ইসলামের গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে বৈঠক করেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। গতকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সদ্য পুনর্গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন, মাহফুজুল হক, মিজানুর রহমান চৌধুরী ও আতাউল্লাহ হাফিজি।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত ১২টার দিকে বাইরে এসে দলটির সদস্য সচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি আলেম ওলামাদের হয়রানি বন্ধ করা, কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া এবং ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের দাবির বিষয় বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও ৫ দিনের রিমান্ডে মামুনুল হক
ওদিকে, হেফাজতে ইসলামের বহুল আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়েরকৃত পৃথক দুই মামলায় গতকাল পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে মেট্রোপলিটন আদালত।
গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করার পর তাকে আরো দু’দফায় ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। মাওলানা মামুনুলকে এসব ঘটনার ‘মূল ইন্ধনদাতা’ বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
ইতোমধ্যে মামুনুল হকসহ হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশিরভাগ নেতাকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নতুন মামলার সঙ্গে শাপলা চত্বরের ঘটনায় দায়ের করা পুরানো মামলায়ও তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
হেফাজতের সহিংসতা প্রসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ‘রাষ্ট্র দখলের পরিকল্পনা’ নিয়ে এগুচ্ছিল হেফাজত নেতারা।
শাপলা চত্বর তাণ্ডবের আট বছর
এদিকে, রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বর সহিংসতার আট বছর পুর্ণ হচ্ছে আজ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে বিশাল সমাবেশ ঘটিয়ে রাতভর অবস্থান কর্মসূচির নামে জ্বালাও-পোড়াওসহ ব্যাপক সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। সরকারি হিসাবে সেবারের সহিংসতায় প্রাণ হারায় ৩৯ জন। এই ঘটনায় সারাদেশে ৮৩টি মামলায় আসামি করা হয় প্রায় ৮৫ হাজার জনকে। গ্রেফতার করা হয় শীর্ষস্থানীয় ৮৮ জন নেতাকে।
পরে সরকারের সাথে সমঝোতা-সখ্যতা গড়ে উঠলে হেফাজতের সব নেতাই জামিনে ছাড়া পায়। মামলারও আর কোন অগ্রগতি হয়নি। দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে গেলে এখনও নিস্পত্তি হয়নি শাপলা চত্বরের কোনো মামলার।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন