শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর: বিশ্লেষক প্রতিক্রিয়া
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
এদিকে, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গার্মেন্টসসহ সব প্রতিষ্ঠান খোলারয়েছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা অযৌক্তিক এমন যুক্তিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানববন্ধন করে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবি জানান কলেজ বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক মানববন্ধনের আয়োজন করে এবং ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবিলম্বে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হল-হোস্টেল খুলে দিতে হবে এবং সকল শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরতে হবে; সুষ্ঠু পাঠ-পরিকল্পনা করতে হবে। পাশাপাশি আটকে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো সংক্ষিপ্ত সিলেবাস এবং সময় বাড়িয়ে নিতে হবে।
এছাড়া যে পরীক্ষা যে সিলেবাস অনুযায়ী হবে তার পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষাগুলোসে সিলেবাস অনুযায়ী নিতে হবে; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যতদিন বন্ধ ছিলো তারচারভাগের এক ভাগ বেতন নিতে হবে এবং অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ করতেহবে; যদি কোনো শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তদারকিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা হতে হবে এবংআক্রান্ত হওয়ার ফলে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে অপারগ হলে পরবর্তীতে তাকে সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষানমন্ত্রী বলেন, ১৩ জুন থেকে মাধ্যমিক ওউচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। আমাদের সকলপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নতুন করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি না হলে সেদিনথেকে শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিতিতে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।তবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে খুলে দেওয়া নির্ভর করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরসবাইকে করোনা টিকার আওতায় নিয়ে আসার ওপর।’ডা. দীপু মনি বলেন, ‘যদি ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ২০২১ সালেরএসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ব্যাচকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাদেরসপ্তাহের ছয়দিন ক্লাসে আসতে হবে। ২০২২ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসিপরীক্ষার্থী তাদেরকেও হয়তো একই সময়ে ক্লাসে নিয়ে আসা হবে।
অন্যান্য ক্লাসের ব্যাপারে হয়তো সপ্তাহে একদিন তাদের ক্লাসের নিয়ে আসা হবে।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে আমরা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়েই কাজ করছি। করোনা মোকাবিলায় পরামর্শক কমিটি রয়েছে তাদের সাথে আলোচনা করেই কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। সংক্রমণের হার শতকরা কত শতাংশ নেমে নেমে আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব। এখন আমরা দেখছি ৫ শতাংশ উপরে রয়েছে। আমাদেরকে এসব বিষয়মাথায় রেখে বিজ্ঞানের মধ্য থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে সে তথ্য ইউজিসির কাছে চেয়েছি। তবে যাদের বয়স চল্লিশের বেশি, বেশিভাগই টিকা গ্রহণ করেছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি।
শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর কম তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় টিকা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। নতুন টিকা আসলেই তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবে। এক্ষেত্রে আবাসিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ সংখ্যাটা যেহেতু বিশাল নয়, তাই দ্রুত ওদেরকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারবো। করোনা সংক্রমণ যদি উন্নতি হয় তবে জুনের মধ্যে হয়তো স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে পুরোপুরিনির্ভর করতে হবে করোনা টিকার ওপর। অঞ্চলভিত্তিক খুলে দেওয়ার ব্যাপারে অনেকেই মতামত দিচ্ছে এটিও আমাদের মাথায় আছে।’#
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।