১১ শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলব: প্রতিবাদে রোববার প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ
বাংলাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে এবং তাদের মনে ভয়ভীতি সৃষ্টি করার উদ্দ্যেশ্যে সাংবাদিকদের পেশাজিবিন সংগঠনগুলোর নির্বাচিত এগারোজন শীর্ষস্থানীয় নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করবেন। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা একন যৌথ সংবাদ সম্মেলন সমাবেশ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে এই ১১ সাংবাদিকের নামে কোনো ধরনের ব্যাংক হিসাব বর্তমানে বা আগে পরিচালিত হয়ে থাকলে সব হিসাবের যাবতীয় তথ্যের সফট কপি (যাবতীয় কাগজপত্রসহ হিসাবগুলোর তালিকা), হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, প্রোফাইল ফরম, টিপি ও অনুরূপ দলিল ও হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী ১৩ সেপ্টেম্বর মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিভাগে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলোর নির্বাচিত নেতাদের ব্যাংক হিসাব এভাবে তলব করা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের সব সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকতা পেশাকে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এতে সাংবাদিকদের মনে নানা ধরনের আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিএফআইইউর এই পদক্ষেপকে সাংবাদিকদের মনে ভয়ভীতি সৃষ্টির কৌশল বলেও মনে করছেন।
লিখিত বক্তব্যে ডিআরইউ'র সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান আরও বলেন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলোর নির্বাচিত শীর্ষ নেতাদের নামে ঢালাওভাবে এই ধরনের পদক্ষেপ উদ্দেশ্যমূলক।
তাঁরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও প্রতিকার দাবি করেন। তাঁরা মনে করছেন এতে করে সরকার ও গণমাধ্যমকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালানো হয়েছে, যা কারও কাম্য নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, আমরা মনে করছি এটি দুরভিসন্ধিমূলক। এটি স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের প্রতি হুমকি। এ বিষয়ে আমরা সরকারের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাই।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তাঁদের সন্দেহ জাগে এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ কি না। কারণ, কেউ কিছু বলতে পারে না। তিনি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা বলেছেন কিছুই জানেন না। এ জন্য বিষয়টি উদ্বেগের। তিনি বলেন, আজকের এই বক্তব্য কারও ব্যক্তিগত নয়, সাংবাদিকদের পেশাজীবী সংগঠনের কথা।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।