বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন সরকার: কি বলছে বিরোধীদলগুলো?
নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটা এখন এই সরকারের হাতে পড়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে নির্বাচন কমিশন কোনো কিছু করতে পারে না। সে কারণেই আমরা বিগত নির্বাচনগুলো বর্জন করেছি, নির্বাচন কমিশনকে সার্চ কমিটিতে আমাদের মতামত দিয়েছি। কিন্তু এই সরকার কোনো কিছু গ্রহণ করে নাই। সে কারণেই আমাদের পুরাতন দাবি নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি নিজ বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আবার দৃঢ়টা প্রকাশ করে বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সথা সময়ে জাতীয় নির্বাচন হবে। কেউ না আসলেও নির্বাচন হবে।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের সাথে কোন আলোচনা হবে না: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে ‘নির্বাচন ও সংলাপ’ কোনোটাতে বিএনপি যাবে না । আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আমীর খসরু বলেন, ‘আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামী নির্বাচনে এই রেজিমের অধীনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। শুধু তাই নয়, কোনো আলোচনায় বিএনপি যাবে না। কারণ, আমরা বিগত দিনে আলোচনাও করেছি, নির্বাচনে অংশগ্রহণও করেছি। তার ফলাফল বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে, বিশ্বাবাসীর কাছে এটা পরিস্কার দিনের আলোর মতো। সুতরাং এই রেজিমের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, আলোচনায়ও যাওয়া যাবে না।'
এ সময় খসরু বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, একমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আলোচনা শুরু হতে পারে। যখন বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকার দায়িত্ব নেবে তখন আলোচনা হতে পারে কীভাবে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, নির্বাচন কমিশন কীভাবে হবে এবং অন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যেগুলো নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত তাদের কার্যক্রম কীভাবে আগামী দিনে হবে। তার আগে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এই অনির্বাচিত একটা সরকারকে বিদায় করে একতাবদ্ধ হয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যাতে নির্বাচন হতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনা চায় ইসলামী আন্দোলন
এদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই নাারয়ণগঞ্জের কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাতপাখার চেয়ারম্যান প;ত্রার্থী মো. ওমর ফারুক-এর ওপর সরকার দলীয় বাহিনীর হামলা নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকার আবারো প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে জাতির সাথে ধোকাবাজি করছে। তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বাংলাদেশের ক্ষমাতাসীন রাজনৈতিক দলের কাছে জনগণের ভোটের কোন মূল্য নেই। সুস্থ্য ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি এদেশে এখনো গড়ে ওঠেনি। বড় রাজনৈতিক দলগুলো মুখেই শুধু গণতন্ত্রের চটকদার শ্লোগান দেয় আর ক্ষমতায় গিয়ে তারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়।
তিনি বলেন, এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে; তা নিয়ে আলোচনা করা। গত দু’টি জাতীয় নির্বাচনে আমাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। আগামীতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটুক আমরা তা চাই না।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।