জুন ০৬, ২০২৪ ১৪:২১ Asia/Dhaka
  • ইরানের বিরুদ্ধে আইএইএ'র অন্যায় পদক্ষেপ ইসরাইলি ষড়যন্ত্রেরই অংশ

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ যে প্রস্তাব পাস করেছে তাতে ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে না বলে ঘোষণা করেছে ইরান। আইএইএ’র বোর্ড অফ গভর্নরর্স ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাসের পর ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতির মাধ্যমে এ কথা জানিয়েছে।

আইএইএ তাদের প্রস্তাবে অন্যায়ভাবে ইরানকে অভিযুক্ত করে বলেছে, এই সংস্থার সাথে তেহরান পরমাণু ইস্যুতে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে না। এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়ছে, “এই ধরনের প্রস্তাব পাস ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকমের প্রভাব ফেলবে না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি অনুসারে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করার অধিকার রাখে।”

ইরান সবসময় বলে আসছে- তারা বিশ্বে সবচেয়ে স্বচ্ছতার সাথে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করছে যার উদ্দেশ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরমাণু শক্তির ব্যবহার। এর আগে ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ-কে পক্ষপাতহীনভাবে রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছে। এর আগেও এই সংস্থার বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ইরান স্পষ্টভাবে বলেছে, ছয় জাতি গোষ্ঠীর সাথে সই হওয়া পরমাণু সমঝোতার আওতায় তেহরান সম্পূর্ণভাবে এই সংস্থাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিন্তু এরপরও আইআইএ অনির্ভরযোগ্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাদের মূল্যায়ন রিপোর্ট তৈরি করে এবং এক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবৈধ ডকুমেন্টের ওপর আইএইএ বেশিরভাগ সময় নির্ভর করে যা ইরানের সাথে আইএইএ’র সম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হিসেবে তেহরান বিবেচনা করে। গতকাল (মঙ্গলবার) অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের স্থায়ী মিশন থেকে এক ব্যাখ্যামূলক নোটে বলা হয়েছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আইএইএ’র পক্ষ থেকে পরিচালিত সমস্ত নজরদারিমূলক কাজকর্ম বাস্তবায়নের জন্য ইরান সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।

ইরান ঐ ব্যাখ্যামূলক নোটে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছে, আমেরিকা একতরফাভাবে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে এবং সমঝোতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ইউরোপের তিন দেশের অক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে ইরান পরমাণু সমঝোতার অংশবিশেষ বাস্তবায়ন স্থগিত করে দেয় যা তেহরানের অধিকার বলে পরমাণু সমঝোতায় স্বীকৃত। ইউরোপের তিন দেশ তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে তা একটি বেআইনি কাজ এবং পরমাণু সমঝোতা ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব বাস্তবায়নে ব্যর্থতা।

২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় ইরান ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি সই করে। ইরানের সঙ্গে হওয়া এই পরমাণু চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা জেসিপিওএ। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিটি করেছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য। এই দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়া। এর সঙ্গে জার্মানিও ছিল। এরপর ট্রাম্প ক্ষমতাগ্রহণের পর ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।  

তবে যুক্তরাষ্ট্র না চাইলেও চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশ চুক্তিটি অটুট রাখার ঘোষণা দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চীন ও রাশিয়া ছাড়া তিন ইউরোপীয় দেশ চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়। এর ফলে পরমাণু সমঝোতার অংশবিশেষ বাস্তবায়ন স্থগিত করে দেয় ইরান। #

পার্সটুডে/এসআইবি/৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ