জুন ১২, ২০২৪ ২০:৪৫ Asia/Dhaka
  • ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ওই এয়ারলাইন্সই দায়ী: কানাডার আদালত

পার্সটুডে-অবশেষে কানাডার আদালত বলেছে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ইউক্রেনের যে বোয়িং বিমানটি ইরানে বিধ্বস্ত হয় সে জন্য ওই এয়ারলাইন্সই দায়ী এবং নিহত যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দায়িত্বও ওই সংস্থার।

মার্কিন বিমান হামলায় বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শহীদ হন পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাস-বিরোধী সংগ্রামের কমান্ডার জেনারেল সুলায়মানি ও তার কয়েকজন সহযোগী। এর জবাবে ইরান ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ইরাকস্থ মার্কিন ঘাঁটি আইনুল আসাদে ১৫টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
যখন ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ইউক্রেনের ৭৩৭ বোয়িং বিমান-এর ৭৫২ নম্বর ফ্লাইট ১৬৭ জন যাত্রী নিয়ে ওই একই তারিখে তথা ৮ জানুয়ারি তেহরানের ইমাম খোমেনী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কিয়েভের উদ্দেশে রওনা দেয়। রওনা দেয়ার ৬ মিনিট পর তেহরান শহরতলীর সাবাশহর এলাকার একটি বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট অনিচ্ছাকৃতভাবে ওই বিমানের ওপর গুলি চালালে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং এর আরোহীরা সবাই প্রাণ হারান।

কানাডার অন্টারিওর আদালত যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে হুঁশিয়ারির ব্যাপারে অবহেলা করায় পি এস ৭৫২ নম্বর ফ্লাইটের নিহত যাত্রীদের পরিবারকে পরিপূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে দায়িত্বশীল বলে রায় দিয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান কোম্পানির উচিত ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় তেহরান যেসব সামরিক ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল সেই দিন তার আলোকে সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনাময় যে কোনো বিমানের চলাচল একটি সামরিক টার্গেট বা সামরিক ফাঁদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এরই আলোকে ইউক্রেনের ওই এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নিহত প্রত্যেক যাত্রীর বিপরীতে এক লাখ ৮০ হাজার ডলার প্রদানের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ সীমিত করতে পারেন না। বরং প্রত্যেক নিহত যাত্রীর পরিবারকে ওই ঘটনার জন্য পরিপূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। 

বিচারক বলেছেন, ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা হল এটা যে ৭৫২ নম্বর ফ্লাইট রওনা দেয়ার মাত্র এক ঘণ্টা আগে ইরান ইরাকে মার্কিন সেনা-ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল এবং সম্ভাব্য পাল্টা মার্কিন হামলার জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছিল। 

এ রায় এমন সময় দেয়া হল যখন এর আগে টরেন্টোতে গত জানুয়ারি মাসে ১৮ দিন ধরে এ সংক্রান্ত মামলার কাজ অব্যাহত ছিল।  

টরেন্টোতে আইনজীবীদের দপ্তরের প্রতিনিধি পল মিলার এক মন্তব্যে বলেছেন: 'আদালতের এই রায় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোর জন্য অত্যন্ত কড়া এক বার্তা বহন করছে। আর তা হল অবশ্যই যাত্রীদের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এয়ারলাইন্সগুলোকে অবশ্যই সংঘর্ষ কবলিত অঞ্চলে তৎপরতা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে'।

উল্লেখ্য এর আগে ইরানের এক আদালত ইউক্রেনের ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্ত অনুষ্ঠানের পর তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করে এবং দোষী দশ ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেয়। ইরান সরকার এই ট্র্যাজেডিতে নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারের জন্য এক লাখ ৫০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ ধার্য করে এবং বেশিরভাগ পরিবারকেই ওই অর্থ পরিশোধ করেছে।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১২   

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

       

ট্যাগ